মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪

ছিল পুরনো ট্রাক, হয়ে গেল ‍‍`ফুড কর্নার‍‍`! খাবার বিক্রি করেই লাখ টাকা আয় কর্ণাটকের এই মহিলার

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০২২, ১১:৪২ এএম | আপডেট: জুলাই ১৩, ২০২২, ০৫:৪২ পিএম

ছিল পুরনো ট্রাক, হয়ে গেল ‍‍`ফুড কর্নার‍‍`! খাবার বিক্রি করেই লাখ টাকা আয় কর্ণাটকের এই মহিলার
ছিল পুরনো ট্রাক, হয়ে গেল ‍‍`ফুড কর্নার‍‍`! খাবার বিক্রি করেই লাখ টাকা আয় কর্ণাটকের এই মহিলার

স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখেই চলছিল সংসার। হঠাতই ঘটে ছন্দপতন! ‍‍`বিজনেস ট্রিপ‍‍`-এ যাওয়ার নাম করে একদিন উধাও হয়ে যান স্বামী। তাঁর আর কোনও খোঁজই মেলেনি। আর স্বামীকে ছাড়া ছোট্ট সন্তানকে নিয়ে একেবারে অথই জলে পড়েন কর্ণাটকের বাসিন্দা শিল্পা। ছেলের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি সংসারের পুরো ভারই এসে পড়ে তাঁর কাঁধে।

এদিকে তাঁর না ছিল উচ্চশিক্ষা, না কোনও কাজের অভিজ্ঞতা! কীভাবে চলবে সংসার? সন্তানকে মানুষ করতে তাই একাধিক ছোটখাটো কাজে যুক্ত হন শিল্পা৷ অর্থ উপার্জনের তাগিদে হাতের সামনে যে কাজই পান তা-ই করতে থাকেন। কিন্তু তাতে আয় ছিল সামান্যই। এমনও দিন গিয়েছে যে সন্তানের দুধের সঙ্গে জল মিশিয়ে খাওয়াতে হয়েছে৷ আর এভাবে চলতে চলতেই সংসারের হাল ফেরাতে নিজের ব্যবসা শুরু করার উদ্যোগ নেন শিল্পা।

রান্না করতে ভালোবাসতেন। তাই শিল্পা ঠিক করেন রান্নাকেই পেশা বানিয়ে শুরু করবেন নিজের ব্যবসা৷ ব্যাস, যেমন ভাবা তেমনই কাজ! প্রথমে অর্থ জমিয়ে একটি পুরনো ট্রাক কেনেন শিল্পা। আর তারপর সেই ট্রাককেই বানিয়ে ফেলেন ‍‍`ফুড কর্নার‍‍`। আর সেখানেই তিনি পরিবেশন করতে থাকেন সুস্বাদু সব খাবার।

উত্তর কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরুতে ‍‍`হালি মানে রোটিস‍‍` নামে এই ফুড কর্নারের পথ চলা শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকে। আর গত ৭ বছরে এই ব্যবসা বেশ ফুলেফেঁপে উঠেছে। বিভিন্ন ধরণের ভাত, চিকেন মশালা, ইডলি সহ অন্যান্য খাবার, সব কিছুই মেলে এই ফুড কর্নারে। আর বিক্রিবাটাও হয় ভালোই৷ খাবার বিক্রি করেই বর্তমানে প্রতিদিন ৫০০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয় শিল্পার। মাসে তা লাখখানেকও ছাড়িয়ে যায়!

শিল্পার কথায়, তাঁর মা সবসময়ই তাঁর রান্না করা খাবার খেতে পছন্দ করতেন। মা চাইতেম শিল্পার একটি হোটেল হোক, যেখানে প্রতিদিন সুস্বাদু সব খাবার পরিবেশন করা হবে। আর সেই ভাবনা থেকেই ফুড কর্নার খোলার পরিকল্পনা করেন শিল্পা। তবে বর্তমানে ছোট্ট ফুড কর্নার চালালেও শিল্পার ইচ্ছে আগামীতে বড় এক রেস্টুরেন্ট খোলার। সেই স্বপ্ন চোখেই এগিয়ে চলেছেন তিনি।

এদিকে, শিল্পার এই কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া মাত্রই তা নেটিজেনদের দৃষ্টি কেড়েছে। সকলেই শিল্পাকে তারিফে ভরিয়ে দিয়েছেন। এমনকি সম্প্রতি শিল্পপতি আনন্দ মাহিন্দ্রারও নজর কেড়েছেন শিল্পা। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও হাল না ছেড়ে সন্তানকে মানুষ করে তুলতে শিল্পার এই উদ্যোগ সকলেরই মন জয় করেছে নিমেষেই।