নতুন রূপে 'কৃষকবন্ধু প্রকল্প' চালু করার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে টেক্কা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রকল্প শুরুর ১৫ দিনের মধ্যেই ৬২ লক্ষ কৃষককে অনুদান দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার৷ ইতিমধ্যেই অত সংখ্যক কৃষকের অ্যাকাউন্টে প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের 'পিএম কিষান সম্মান নিধি'-কে টেক্কা দিয়ে কৃষকদের সহায়তায় কেন্দ্রের থেকে রাজ্য যে এগিয়ে এ কথাই ফের মনে করিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন নবরূপে 'কৃষকবন্ধু প্রকল্প'-এর সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চলতি বছরের নির্বাচনের সময়ই কেন্দ্রের 'পিএম কিষান সম্মান নিধি' প্রকল্পের পাল্টা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল 'কৃষকবন্ধু প্রকল্প'কে। আগে বার্ষিক ৫ হাজার টাকা এবং ন্যূনতম ২ হাজার টাকা করে পেতেন কৃষকেরা। তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে ভাতা বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনে জেতার পর সেই কথাই রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার থেকে 'কৃষকবন্ধু প্রকল্প'-এ ৫ হাজার টাকার বদলে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত একর প্রতি জমিতে বছরে দু’বারে ৫ হাজার করে মোট ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে।
অন্যদিকে, কেন্দ্রের 'কিষান সম্মান নিধি' প্রকল্পে বার্ষিক ৬ হাজার টাকা করে পান কৃষকেরা। ইতিমধ্যে বাংলার ৭ লক্ষ কৃষক কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। তবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের তুলনায় রাজ্যের প্রকল্পে ভাতার পরিমাণ বেশি৷ উপভোক্তার সংখ্যাও অনেক বেশি৷ এছাড়াও রাজ্যের প্রকল্পে খেতমজুর ও বর্গাদারদেরও নাম উল্লেখ রয়েছে৷ খেতমজুর ও বর্গাদারেরা বার্ষিক ৪ হাজার টাকা করে পাবেন। এছাড়াও 'কৃষকবন্ধু প্রকল্প'-এর অন্তর্গত কোনও কৃষক মারা গেলে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে। তাই রাজ্যের প্রকল্পে একাধিক সুবিধা পাবেন কৃষকেরা।
কৃষকের পাশে দাঁড়াতে কেন্দ্রের চেয়ে রাজ্য যে অনেকটাই এগিয়ে এ কথা আগেও শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে৷ কৃষক প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আওয়াজও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়েছিলেন, এখনও পর্যন্ত দেশে অসংখ্য কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। প্রায় ৬ মাস ধরে কৃষক আন্দোলনও জারি রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার সবাইকে টাকা দিচ্ছে না। বা দিলেও কম টাকা দিচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বাংলা ব্যতিক্রম। রাজ্যের সব কৃষক টাকা পান। উপভোক্তার সংখ্যাও বেশি৷ এইরকম প্রকল্প যে ভারতে বাংলাতেই প্রথম এ কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।