বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশেই হামলা’, ত্রিপুরা কাণ্ডে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

১২:৫৭ পিএম, আগস্ট ৯, ২০২১

‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নির্দেশেই হামলা’, ত্রিপুরা কাণ্ডে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ত্রিপুরা কাণ্ডে এবার আসরে নামলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো। এবার মুখ্যমন্ত্রীর নিশানায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাংলায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে জাতীয় স্তরে সংগঠন আরও মজবুত করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে সরাতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। তার আগে বিজেপিশাসিত রাজ্য, যেখানে সামনেই বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে, সেগুলিকে পাখির চোখ করা হয়েছে। ত্রিপুরা তার মধ্যে অন্যতম।

এর আগে পর্যন্ত ত্রিপুরা নিয়ে তেমনভাবে কোনও মন্তব্য করেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, ত্রিপুরায় তৃণমূল যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহাদের আক্রান্ত হওয়া ও গ্রেফতারির ঘটনা নিয়ে এবার সরাসরি আসরে নামলেন মমতা। এদিন বন্দ্যোপাধ্যায় এসএসকেএম-এ সুদীপ রাহা, জয়া দত্তদের দেখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, ত্রিপুরাই এবার তাঁর পরের লক্ষ্য।

শনিবার এবং রবিবার এই রাজ্যে তৃণমূল-বিজেপির দ্বন্দ্বে সরগরম হয়েছে রাজনীতির ময়দান। এর উপর তৃণমূল যুব নেতাদের উপর হামলার অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছে ত্রিপুরার মাটি। গত শনিবার ত্রিপুরায় সংগঠনের কাজে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন যুব তৃণমূলের নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য, সুদীপ রাহা, জয়া দত্তরা। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মাথা ফাটে সুদীপ রাহার। দেবাংশু, জয়াও আঘাত পান। এই হামলার অভিযোগের তীর ছিল বিজেপির দিকেই। এই ঘটনার প্রতিবাদে খোয়াই থানার সামনে অবস্থানে বসেন তৃণমূলের যুব নেতারা। এর জেরেই মহামারী আইন ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় দেবাংশুদের। এরপর ধৃত তৃণমূল যুব নেতাদের মুক্তির দাবিতে থানায় যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসু, দোলা সেনরা। থানায় পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো তর্কে জড়ান তাঁরা। শেষমেশ দেবাংশুদের জামিন মঞ্জুর করা হয়।

দিনভর থানা আদালত করে দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত, সুদীপ রাহাদের মুক্ত করেই ত্রিপুরা ছাড়েন অভিষেক। সঙ্গে নিয়ে আসেন জয়া, সুদীপদের। এরপরই তাঁদের ভর্তি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানেই এদিন যুব নেতাদের দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই তিনি বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, ‘ত্রিপুরায় বিজেপি আমাদের লোকেদের উপর নির্লজ্জ হামলা চালিয়েছে। সেখানে দানবীয় সরকার চালাচ্ছে বিজেপি। ওরাই মেরেছে ওরাই গ্রেফতার করেছে। পুলিশের সামনেই সব হয়েছে। সারাদিনে আমাদের কাউকে এক গ্লাস জল পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। ত্রিপুরায় অভিষেকের উপর যেভাবে আক্রমণ হয়েছে তা নিন্দনীয়। বিমানের টিকিট না দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছে। ছাত্রের উপর হামলায় পড়ুয়াদের গর্জে ওঠা উচিত।’

এখানেই শেষ নয়, মুখ্যমন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন যে, ‘এক্ষুণি ঝাড়গ্রাম যেতে হবে। হাতে সময় কম। সুদীপ, জয়া ও দেবাংশুদের উপর আক্রমণ হয়েছে। যেভাবে আক্রমণ হয়েছে তা নিন্দনীয়, তাও আবার পুলিশের সামনে। ৩৬ ঘণ্টা কোনও চিকিৎসা করেনি, জল দেয়নি। এটা সম্পূর্ণ হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে, নাহলে ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রীর এতো সাহস হতে পারে না। সেদিন বুলেট প্রুফ গাড়ি না থাকলে অভিষেকের মাথা গুঁড়িয়ে যেতে পারত। ত্রিপুরা, বাংলার পাশের রাজ্য। সব বিষয়ে সাহায্য করা হয়। যতই মারুক ত্রিপুরা জয় করবই।’

উল্লেখ্য, এদিন এসএসকেএম-এ সুদীপ, জয়াকে দেখার পাশাপাশি দেবাংশুকেও ফোন করেন তৃণমূল নেত্রী। তাঁর কাজের প্রশংসাও করেন। অন্যদিকে, ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতাদের উপর হামলা, গ্রেফতারির প্রতিবাদে এদিন সংসদে প্রতিবাদে সামিল হন তৃণমূলের সাংসদরা। সেখানেই স্লোগান ওঠে, ‘দেশের নেত্রী কে, মমতা ব্যানার্জি আবার কে’, পাশাপাশি উল্টো স্লোগানও ওঠে, ‘দেশের গুন্ডা কে, নরেন্দ্র মোদী আবার কে?’