বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় এফআইআর করুন’! রাজ্যের বিধায়কদের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: মে ১৭, ২০২২, ০৫:২৬ পিএম | আপডেট: মে ১৭, ২০২২, ১১:২৬ পিএম

‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় এফআইআর করুন’! রাজ্যের বিধায়কদের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় এফআইআর করুন’! রাজ্যের বিধায়কদের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ স্বাস্থ্যসাথী কার্ড। রাজ্যের মানুষ যাতে সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালেও এই কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পান, তাই এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই উদ্যোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত। এই কার্ডের মাধ্যমে বহু মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে থাকেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে কোনও খরচ লাগে না। সরকারের পক্ষ থেকে এই কার্ড না ফেরানোর কড়া নির্দেশ জারি থাকলেও, প্রায়ই অভিযোগ ওঠে যে, এই কার্ড গ্রহণ করছে না বহু বেসরকারি হাসপাতাল। রাজ্যে বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফিরিয়ে দেওয়ার কারণে বারবার সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ।  

এই সমস্যার সমাধান করতে এর আগেও বহুবার খোদ মুখ্যমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। বারবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ না করা নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেণ তিনি। স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো যাবে না। এমনটাও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এর আগে যে, কার্ড গ্রহণ না করলে, রোগী ফেরালে, উক্ত হাসপাতালের লাইসেন্সও বাতিল কড়া হতে পারে। কিন্তু তার পরেও সমস্যা মিটছে না। 

মঙ্গলবার ফের একবার কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে তিনি ফের এ প্রসঙ্গে বলেন, “এবার ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড ফেরানো হলে সঙ্গে সঙ্গে থানায় এফআইআর করুন। পুলিশও সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিক।” এদিন পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বৈঠকেই জনপ্রতিনিধিরা তাঁর কাছে অভিযোগ করেন যে, অনেক হাসপাতালই অপারেশনের সময় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ করছে না। এর জেরে সমস্যায় পড়ছেন রোগী এবং তাঁর পরিবার। সঠিক সময়ে অস্ত্রোপচার না হলে, রোগীকে বাঁচানোর ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হবে বলেই জানিয়েছেন তাঁরা।

এইসব অভিযোগ শোনার পরই মুখ্যমন্ত্রী কড়া নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে থানায় এফআইআর দায়ের করতে হবে। থানাকেও গিয়ে ক্রসচেক করতে হবে, কেন চিকিৎসা হল না? কার্ডের উপর হেল্পলাইন নম্বর রয়েছে। তাতেও ফোন করে অভিযোগ জানাতে হবে। এই কার্ডের কোনও রিনিউয়াল করাতে হয় না। মিথ্যে বললে হাসপাতালের লাইসেন্স কেটে দেব। অবশ্যই অভিযোগ করবেন।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে বছরে ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসা বিমা পাওয়া যাবে। পরিবারের মহিলা সদস্যদের নামে এই কার্ড দিয়েছে রাজ্য সরকার। পরিবারের একজন মহিলা সদস্যের নামে এই কার্ড হলেও, পরিবারের যেকোনো সদস্য এই কার্ডের সুবিধা পেতে পারেন। 

জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে চিকিৎসার জন্য যাতে আর্থিক কোনও সমস্যার মধ্যে পড়তে না হয়, তার জন্যই রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ ও ব্যবস্থা। অথচ বাস্তবে এই কার্ড গ্রহণে কোনও কোনও হাসপাতাল নানা টালবাহানা করে। অনেক ক্ষেত্রে রোগী ফিরিয়েও দেয়। বারবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড গ্রহণ না করার একই অভিযোগ পেয়ে এবার উক্ত হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিধায়কদের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।