শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

‘আপনাদের থেকে ধান না কিনলে, FIR করুন’! কিষাণ মান্ডির বেনিয়ম নিয়ে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২২, ০৫:৩৬ পিএম | আপডেট: জুন ২৭, ২০২২, ১১:৫২ পিএম

‘আপনাদের থেকে ধান না কিনলে, FIR করুন’! কিষাণ মান্ডির বেনিয়ম নিয়ে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর
‘আপনাদের থেকে ধান না কিনলে, FIR করুন’! কিষাণ মান্ডির বেনিয়ম নিয়ে হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কিষান মান্ডিগুলিতে হয়ে চলা বেনিয়ম নিয়ে এবার কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার থেকে চাষিদের থেকে ধান না কিনে তাঁদের ফিরিয়ে দিলে বা সময়মত কাজ না হলে, সরাসরি FIR করার নির্দেশ দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বর্ধমানের নবাবহাটের গোদার মাঠের প্রশাসনিক কর্মসূচি থেকে কড়া বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। 

সোমবার মাটি উৎসবের সূচনা মঞ্চ থেকে একাধিক প্রকল্পের খাতে কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সব মিলিয়ে মোট ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পাশাপাশি এও মনে করিয়ে দিলেন যে, কৃষকদের স্বার্থে সবসময় সক্রিয় রাজ্য সরকার। কৃষকদের উন্নতির স্বার্থে লাগাতার কাজ করছে চলেছে রাজ্যের তৃণমূলশাসিত সরকার। তাই কোনোভাবে কৃষকদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়, এমন কোনও কাজ হলে, তা একেবারেই বরদাস্ত করবে না রাজ্য। সেক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নেবে সরকার। অভিযুক্তদের ছেড়ে কথা বলবে না রাজ্য। এদিন কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে একথাই স্পষ্ট করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কিষান মান্ডি নিয়ে কিছু কিছু অভিযোগ পাচ্ছি। সরকার কৃষকদের থেকে ধান কেনার ঘোষণা করেছে। অথচ কিছু কিষান মান্ডি ধান কিনছে না। চাষিরা ধান বিক্রি করতে এলে ফিরিয়ে দিচ্ছে। সময়মতো কাজ করছে না।’ এরপরই কৃষকদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিসান মান্ডিতে চাষিরা ধান বিক্রি করতে গেলে তাদের হয়রানি করা হয় বা তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আজ স্পষ্ট করে বলে যাচ্ছি, এরকম কেউ যদি ধান ফিরিয়ে দেয় তাহলে আপনি পুলিশের কাছে গিয়ে এফআইআর করুন। বিডিওর কাছে যান। বিডিও ও ওসিকে বলব, এইসব ক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে অ্যাকশন নিতে হবে যাতে কৃষকরা হয়রান না হন।’ 

এখানেই শেষ নয়, ধান কেনার সঙ্গে যারা যুক্ত তাঁদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারি, ‘যারা দায়িত্ব নেবে না, তাঁদের পদে থাকার কোনও অধিকার নেই। পঞ্চায়েতগুলোকেও বলব, আরও একটু সজাগ হোন। যারা ধান উত্পাদন করছে তারা যখন ধান বিক্রি করতে যাচ্ছে তাদের ওজনটা যেন ঠিকঠাক নেওয়া হয়। অ্যাগ্রো মার্কেটিংয়ে থেকে কেউ যদি কাজ না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এসপি-ডিএমদের বলব। এরকম একটা কেস বাঁকুড়ায় ধরা পড়েছিল। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’  

উল্লেখ্য, এর আগে পুরুলিয়ার সভা থেকেও কিসান মান্ডির বেনিয়ম নিয়েও কড়া বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। নির্দিষ্ট নিয়মও করে দিয়েছিলেন। আর এবার সরাসরি এফআইআর করার পরামর্শ দিলেন। 

এদিন মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন যে, ‘আমরা যে নতুন কৃষক বন্ধু চালু করেছি সেখানে ৭৯ লাখ কৃষককে ২ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা একবারে সাহায্য দেওয়া হল। এখানে দাঁড়িয়ে বোতাম টিপলাম আর ৭৯ লাখ কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পৌঁছে গেল। দেখে আমারও ভালো লাগছে। আগে আমরা ৬ হাজার টাকা দিতাম। কিন্তু গত নির্বাচনে বলেছিলাম, আমাদের সরকার জিতলে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। আর আজ ৭৯ লাখ কৃষকের অ্যাকাউন্টে ওই টাকা পৌঁছে গেল। কৃষকদের জন্য ২৬ দিন অনশন করেছিলাম। বলেছিলাম কৃষকদের জমি কেড়ে নেওয়া যাবে না। বিজেপির কৃষক বিরোধী নীতিরও প্রতিবাদ করেছি। আমাদের এখানে কৃষকদের আয় ৩ গুণেরও বেশি বেড়েছে। কৃষকদের জন্য মিউটেশন ফি মকুব করেছি। শস্য বিমার টাকা সম্পূর্ণ আমরা দিচ্ছি। ৬৬ লাখ কৃষক এতে উপকৃত হয়েছেন। দুই ২৪ পরগানা ও পূর্ব মেদিনীপুরে নোনা জলে কৃষকদের জমি নষ্ট হয়ে যায়। তাদের আমরা সাহায্য দিয়েছি। তাঁদের জন্য স্বর্ণ ধান তৈরি করেছি। একে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন।’

মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, ‘বর্ধমান জেলাকে স্যালুট জানাই। কারণ বর্ধমান জেলা আমাদের খাইয়ে পরিয়ে বাঁচিয়ে রাখে। আপনাদের গুরুত্ব অপরিসীম। এই মাটির সঙ্গে যারা জড়িয়ে রয়েছেন তাঁদের অধিকার আগে। এখানকার কৃষকরা আমাদের গর্ব।’