বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বহরমপুরে প্রকাশ্যে কলেজ ছাত্রীর নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তোলপাড় গোটা রাজ্য। এবার এই নৃশংস ঘটনায় এল নয়া মোড়। প্রণয়ঘটিত সম্পর্কের জেরে খুন হতে হয় ২১ বছরের সুতপাকে, এমনটাই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে। ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্ত প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারের পর সুশান্তকে জেরা করায় প্রকাশ্যে এসেছে একাধিক তথ্য। সুশান্ত পুলিশকে জানায়, বিগত কয়েক বছর ধরে সুতপা তার প্রেমিকা ছিল। কিন্তু এরপর একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পরে সুতপা। যার জেরেই সুতপাকে খুন করে বলে দাবি করেছে সুশান্ত। প্রেমিকার বিরুদ্ধে যে কোনওদিন এই নির্মম পদক্ষেপ নেওয়ার কথা কি ফেসবুক অ্যাকাউন্টেও লিখেছিল সুশান্ত? তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে জল্পনা।
কয়েকদিন আগেই সুশান্ত তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছিল, ‘আমি ভারতীয়। এই বেওয়াফা তোর উপর একদিন অনেক ভারী পড়বে। এমনকী, তোর জান পর্যন্ত যেতে পারে ম্যাডামজি’। তবে কি এই পোস্টের মাধ্যমে প্রেমিকাকে আগাম সতর্ক করতে চেয়েছিল সুশান্ত? উঠছে অসংখ্য প্রশ্ন। তবে ফেসবুক পোস্টের বিষয়ে তদন্তকারীরা এখনও স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। তদন্ত শেষ হলে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত সুশান্ত চৌধুরী আদতে মালদা থানার বলরামপুরের বাসিন্দা। কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে মালদহের গৌড় কলেজে পড়াশোনা করত সুশান্ত। এমনকি কোনও এক অজ্ঞাত কারণে বিহারের পাটনাতেও তার প্রায়শই যাতায়াত ছিল। তার বাবা নিখিল চৌধুরি পেশায় একজন পুলিশ কনস্টেবল। আপাতত তিনি নিউ জলপাইগুড়িতে কর্মরত। অন্যদিকে নিহত সুতপার পরিবার অতীতে মালদার বৈষ্ণবনগর থানার রাজনগর গ্রামে বসবাস করত। আজ থেকে ঠিক ১২ বছর আগে মালদার ইংরেজবাজার পৌর এলাকার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে নতুন বাড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায় যে, বছর পাঁচেক আগে পড়াশোনার জন্য সুতপার বাড়ির পার্শ্ববর্তী এলাকায় নিজের পিসির বাড়িতে থাকতে শুরু করে সুশান্ত। সেখান থেকেই দুজনের মধ্যে সম্পর্কের সূত্রপাত হয়। সব ঠিকই চলছিল। কিন্তু বছরখানেক আগে হঠাৎই তাদের সম্পর্কে চিড় ধরে। সূত্রের খবর, আট মাস আগে মনোমালিন্যের জেরে একবার সুশান্ত তার বন্ধুদের নিয়ে সুতপার বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল।
সুশান্তর সঙ্গে সম্পর্কের কথা জেনে গিয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছিল সুতপার পরিবার। পরিবারের বিপক্ষে গিয়ে সুশান্তর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে অস্বীকার করে সুতপা। সুশান্তর মনে ক্রমশ বাড়তে থাকে আক্রোশ। আর সেই আক্রোশ ও প্রতিহিংসার জেরেও ধৃত সুশান্ত এই ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ নিতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তে নেমেছে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ। মঙ্গলবার ধৃতকে বহরমপুর জেলা আদালতে তোলা হবে বলে জানা গিয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :