শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক! ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক

চৈত্রী আদক | মলয় দে

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২২, ০২:৩৫ পিএম | আপডেট: মে ২৯, ২০২২, ০৬:৩৪ পিএম

কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক! ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক
কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক! ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তুমুল বিতর্ক

বংনিউজ২৪×৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে রয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক। তার ঠিক পাশের একটি সোফায় বসেছেন ওই কলেজের অধ্যক্ষা। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন একটি ছবি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। একজন বিধায়ক হয়ে কীভাবে অধ্যক্ষের চেয়ারে বসতে পারেন সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।

ঘটনাটি নদীয়ার শান্তিপুর কলেজের। জানা গিয়েছে, গত ১৮ মে শান্তিপুর কলেজের গভর্নিং বডি তৈরির একটি মিটিংয়ে উপস্থিত হন তৃণমূল বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামী। মিটিং শেষে কলেজ পরিদর্শনের পর বেশ কিছুক্ষণ সময়ের জন্য অধ্যক্ষর চেয়ারে বসতে দেখা যায় তাঁকে। তার ঠিক পাশেই একটি সোফাতে বসেছিলেন অধ্যক্ষা চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্য। অন্যান্য ছবির পাশাপাশি অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে থাকার ছবিটিও পোস্ট করা হয় ব্রজকিশোর গোস্বামীর নিজস্ব প্রোফাইল থেকে। তবে বুধবার বঙ্গ বিজেপির অফিসিয়াল ট্যুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ছবিটি পোস্ট হওয়ার পরই সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায়।

নেটিজেনরা একের পর এক প্রশ্ন তুলতে থাকেন। একজন লেখেন, “ওই চেয়ারের ঠিক পেছনে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি রয়েছে। হায়রে রাজনীতি! এই তৃণমূল শিষ্টাচার জানে না’। এই পোস্ট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। নেটদুনিয়ায় বয়ে গিয়েছে নিন্দার ঝড়। এই বিষয়ে কলেজের অন্যান্য অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকরা এক একজন এক এক রকম মত পোষণ করেছেন।

এই প্রসঙ্গে বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীর বক্তব্য, ‘সেদিন অধ্যক্ষ মহাশয়া নিজেই আমাকে ওনার ঘরে নিয়ে যান এবং বারংবার অনুরোধ করেন তাঁর চেয়ারে বসার জন্য। এই ঘটনাটি কেবল মাননীয়া অধ্যক্ষা এবং আমার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, সেখানে আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁর সম্মতি নিয়েই আমি তাঁর চেয়ারে বসি। রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে তৃণমূলকে কদর্য ভাষায় আক্রমণ করাই বিজেপির একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সেটাই তারা করেছে।”

এছাড়াও বিধায়কের সংযোজন, “একজন জনপ্রতিনিধি সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ। আমি তো কোনও সংবিধান লঙ্ঘন করিনি। তাই আমি কোনও অন্যায়ও করিনি। এছাড়াও আমি ওই কলেজের গভর্নিং বডির প্রেসিডেন্ট। সেক্ষেত্রেও অন্যায় হয়েছে বলে আমি মনে করি না। এটা নিয়ে যারা রাজনীতি করছে তারা করুক।”

এই বিষয়ে অধ্যক্ষ চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দূরভাষে জানান, “আমি নিজেই বারবার অনুরোধ করেছিলাম আমার চেয়ারে বসার জন্য। সেই কারণেই তিনি বসেছিলেন।” অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে নদিয়া জেলা বিজেপির সম্পাদক তথা রানাঘাট কলেজের অধ্যাপক ডঃ সোমনাথ কর বলেন, “শান্তিপুর কলেজ বহু প্রাচীন এবং ঐতিহ্যবাহী কলেজ। বিধায়ককে বাঁচাতেই হয়তো অধ্যক্ষা এমন বলেছেন। তবে তাঁর জানা উচিত ছিল যে অধ্যক্ষ হিসেবে যখন কেউ দায়িত্বভার গ্রহণ করেন তখন একমাত্র তাঁরই ওই চেয়ারে বসা উচিৎ।”