শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

পাশের দাবিতে করেছিলেন আন্দোলন! চরম সিদ্ধান্ত নিলেন উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য ছাত্রী

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২২, ১০:০১ পিএম | আপডেট: জুন ২৩, ২০২২, ০৪:০১ এএম

পাশের দাবিতে করেছিলেন আন্দোলন! চরম সিদ্ধান্ত নিলেন উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য ছাত্রী
পাশের দাবিতে করেছিলেন আন্দোলন! চরম সিদ্ধান্ত নিলেন উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য ছাত্রী

উচ্চমাধ্যমিকে পাশ করতে পারেননি। পাশের দাবিতে আন্দোলনেও নেমেছিলেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। অবসাদে আত্মঘাতী হলেন উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য সেই ছাত্রী। মালদহের পর ফের এমন ঘটনার সাক্ষী রইল পূর্ব বর্ধমান। বুধবারই নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হল ওই ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ।

ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কলেজ মোড় এলাকায়। জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম রাজিয়া খাতুন। বয়স ১৮। এ বছর গুসকরা গার্লস স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ইংরেজি এবং দর্শনে ফেল করেন। কিন্তু তা একেবারেই মন থেকে মেনে নিতে পারেননি।

রাজিয়ার ইচ্ছে ছিল উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বর্ধমানের কলেজে পড়বে। কিন্তু ফেল করায় তা আর সম্ভব ছিল না। তাই ফলপ্রকাশের পর থেকেই ভুগছিলেন অবসাদে। এমনকি আন্দোলন করলে পাশ করিয়ে দেওয়ার আশায় বাকিদের সঙ্গে ধর্নাতেও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুতেই কিছু হয়নি। আর তাতেই হতাশ হয়ে এই চরম সিদ্ধান্ত বেছে নেয় রাজিয়া। নিজের ঘরে পড়তে বসার পরে সবার নজর এড়িয়ে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হন তিনি।

বুধবারই বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ নিজের বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ওই কিশোরীকে। পরিবারের লোকেরাই পুলিশে খবর পাঠায়। তারপরই পুলিশ এসে তড়িঘড়ি রাজিয়াকে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল। তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

এরপর রাজিয়ার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশের তরফে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, পাশ করতে না পারার কারণেই আত্মঘাতী হয়েছেন রাজিয়া৷ ছাত্রীর পরিবারের তরফেও দাবি, অবসাদের কারণেই এমন চরম পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। মেয়ের মৃত্যুতে পরিবারের লোকেদের মধ্যে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

রাজিয়ার বাবা মুজিবর সেখ জানিয়েছেন, “পাশ না করতে পেরে মেয়ে একটু মনমরা ছিল। রেজাল্ট তুলে আনার পর আমাকে দেখাল। দুটো সাবজেক্টে একটু কম নম্বর পেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, কোনও অসুবিধা নেই। আবার ভালো করে পড়াশোনা করতে হবে। বুধবার সকালে যখন কাজে বেরিয়ে যাই তখনও দেখি মেয়ে বই বের করে পড়ছে। পরে খবর পেয়ে বাড়িতে আসি। এসে দেখি মেয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে। ও মানসিক হতাশায় ভুগছিল। তবে এমন করবে ভাবতে পারিনি।"