বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রতর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি! কে এই সাহসী চিকিৎসক চন্দ্রনাথ?

আত্রেয়ী সেন

প্রকাশিত: আগস্ট ১২, ২০২২, ০৪:৪৯ পিএম | আপডেট: আগস্ট ১২, ২০২২, ১১:০২ পিএম

দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রতর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি! কে এই সাহসী চিকিৎসক চন্দ্রনাথ?
দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রতর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন তিনি! কে এই সাহসী চিকিৎসক চন্দ্রনাথ?

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির আগে থেকেই তিনি খবরের শিরোনামে। তিনিই অনুব্রত মণ্ডলকে দেখতে গিয়ে ‘বেড রেস্ট’-এর পরামর্শ দিয়েছিলেন। এরপর ওই চিকিৎসকের একটি অডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়। যেখানে তিনি বলেন, তাঁকে সাদা কাগজে বেড রেস্টের প্রেসক্রিপশন লিখে দেওয়ার জন্য হাসপাতালের সুপার ও অনুব্রত মণ্ডল নির্দেশ দেন। বিতর্কের শুরু। এরপরই বৃহস্পতিবার অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ি থেকে প্রথমে তাঁকে আটক করা হয় এবং পরে বিকেলের দিকে অফিশিয়াল বিবৃতি দিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ওই চিকিৎসক আর কেউ নন, বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী। 

সাদা কাগজে লিখেছিলেন প্রেসক্রিপশন। অনুব্রতকে দিয়েছিলেন ‘বেড রেস্ট’-এ থাকার পরামর্শ। পরে এই চন্দ্রনাথ অধিকারীই সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেন যে, চাপে পড়েই তিনি এই কাজ করেছেন। এদিকে, বৃহস্পতিবার যখন অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করে সিবিআই, সেই দিনই ছুটির আবেদন করেছিলেন ওই চিকিৎসক। বিরোধীদের কথায় বীরভূমে অনুব্রতর মতো বাঘে-গরুতে জল খাওয়া দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতার বিরুদ্ধে মুখ খোলা চিকিৎসক চন্দ্রনাথ নিজে মুখেই জানিয়েছিলেন, সাবধানে থাকতে হবে। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা বড় অংশ কিন্তু তাঁর জয়গানই করছে। 

তা কে এই চন্দ্রনাথ সর্বাধিকারী? এক রাজ্যের সরকারে থাকা রাজনৈতিক দলের নেতার বিরুদ্ধে মুখ খুলেই খবরের শিরোনামে আসবেন তিনি, এটা হয়তো তিনি নিজেও ভাবেননি। এই মুহূর্তে তাঁর সম্পর্কে জানতে মানুষের মধ্যে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। অনেকেই তাঁর সাহসের প্রশংসা করছেন। জানা গিয়েছে, ১৯৯৫ সালে এমবিবিএস প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন চন্দ্রনাথ সর্বাধিকারী। এরপর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে ফুলবাগান বিসি রায় হাসপাতাল থেকে DCH পাশ করেন। পাশাপাশি জেনারেল সার্জারিতেও এমএস করেন IPGMER এবং এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে। 

অকুতোভয় চিকিৎসক চন্দ্রনাথ জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল থেকেই তিনি বোলপুরে চাকরি করছেন। এর আগে তিনি উত্তর দিনাজপুর, লালবাগের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বোলপুরে তাঁর তৃতীয় পোস্টিং। 

সোশ্যাল মিডিয়াতেও এই চিকিৎসক বেশ সক্রিয়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পিছপা হন না। এই চন্দ্রনাথই ২৫ জুলাই ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘SSKM থেকে MS করেছি কাউকে বলতে এখন লজ্জা করে।’ তাৎপর্যপূর্ণভাবে তখন শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সেদিক থেকে দেখলে, তাঁর এই পোস্ট বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ। 

এখানেই শেষ নয়, অনুব্রত মণ্ডলের মতো দাপুটে নেতার এলাকাতে দাঁড়িয়েই সংবাদমাধ্যমের সামনে একের পর এক বিস্ফোরক মন্তব্য করে গিয়েছেন চন্দ্রনাথ সর্বাধিকারী। তিনি জানিয়েছেন, চাপে মুখে পড়েই তিনি কেষ্টকে বেড রেস্টের পরামর্শ দিতে বাধ্য হয়েছেন। তাই অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর, তাঁর চিন্তায় থাকা এবং উদ্বিগ্ন থাকাটাই স্বাভাবিক।