শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

স্ত্রী একজন স্বতন্ত্র মানুষ, স্বামীর দাসী নন, তাঁকে বৈবাহিক সম্পর্কে থাকতে বাধ্য করা যাবে না, রায় শীর্ষ আদালতের

০৯:৫৭ এএম, মার্চ ৩, ২০২১

স্ত্রী একজন স্বতন্ত্র মানুষ, স্বামীর দাসী নন, তাঁকে বৈবাহিক সম্পর্কে থাকতে বাধ্য করা যাবে না, রায় শীর্ষ আদালতের

বংনিউজ২৪x৭ডিজিটাল ডেস্কঃ স্বামীর দাসী নন তাঁর স্ত্রী, তিনি একজন স্বতন্ত্র মানুষ। তাই কখনই, কোনোভাবেই তাঁকে বৈবাহিক সম্পর্কে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে থাকতে বাধ্য করা যাবে না। মঙ্গলবার একটি মামলায় এমনটাই রায় দিল দেশের শীর্ষ আদালত।

সম্প্রতি এক ব্যক্তি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তাঁর আবেদন ছিল, যাতে তাঁর স্ত্রী তাঁর সঙ্গেই থাকেন। এই মামলারই রায় দিতে গিয়ে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানায় যে, স্ত্রী স্বামীর দাসী নন বা তাঁর সম্পত্তিও নন। তাই কোনোভাবেই তাঁকে জোর করে, তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে বৈবাহিক সম্পর্কে আটকে রাখা যাবে না।

মঙ্গলবারের ওই মামলায় দেশের শীর্ষ আদালতে বিচারপতি সঞ্জয় কিশন কাওউল এবং বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তের এসসি বেঞ্চ প্রশ্ন তোলে, কোনও মহিলাকে নিজের সম্পত্তি বা দাসী মনে করা কতোটা যুক্তিসঙ্গত? বিচারকরা প্রশ্ন করেন, ‘আপনি কী মনে করেন? কোনও মহিলা কি একজন দাসী, যে আমরা এই ধরনের রায় দিতে পারি? স্ত্রী কি দাসী যে তাঁকে আপনার সঙ্গে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া যায়?

২০১৯ সালের ১ এপ্রিল গোরক্ষপুরের একটি পারিবারিক আদালত কর্তৃক গৃহীত হিন্দু বিবাহ আইন (এইচএমএ)-এর ৯ নং ধারায় এই ব্যক্তির পক্ষে পাশ হওয়া বিবাহবন্ধনের অধিকার পুনরুদ্ধারের রায়ের বিরুদ্ধে এই মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। ওই ব্যক্তির স্ত্রী শীর্ষ আদালতে জানান, ২০১৩ সালে বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপর পণের জন্য নির্যাতন চালাতেন তাঁর স্বামী। স্বামীই তাঁকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বাধ্য করেছিলেন।

এরপর ২০১৫ সালে ওই মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে খোরপোশের মামলা করেন। সেই সময় গোরক্ষপুরের আদালত ওই ব্যক্তিকে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা খোরপোশ দেওয়ার কথা বলেছিল। এরপরেই পারিবারিক আদালতে বিবাহবন্ধনের অধিকার পুনরুদ্ধারের আবেদন করেছিলেন ওই ব্যক্তি। আদালতে ওই ব্যক্তি জানান যে, যখন সে একসঙ্গে থাকতে চায়, তখন খোরপোশের প্রশ্ন উঠছে কেন? ওই মহিলার আইনজীবী অনুপম মিশ্র শীর্ষ আদালতে জানিয়েছেন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তি খোরপোশ বাবদ খরচ এড়ানোর জন্যই এই নতুন ‘খেলা’ শুরু করেছেন।

অন্যদিকে ওই ব্যক্তির আইনজীবী স্ত্রীকে তাঁর স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে চাপ দিতে থাকেন। এর উত্তরেই শীর্ষ আদালত তার রায়ে জানায় যে, ‘স্ত্রী কোনও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নন বা স্বামীর দাসী নন। তিনি যখন যেতে চান না, তখন আপনি আমাদের এর জন্য একটি আদেশ পাস করতে বলছেন, যেন তাঁকে কোথাও পাঠানো যায়, যেখানে তিনি দাসীর মতো যেতে চান না।’