শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বেহালার পর্ণশ্রীতে বহুতলের ঘর থেকে উদ্ধার মা-ছেলের গলাকাটা দেহ! চাঞ্চল্য এলাকায়

০৯:৪৫ এএম, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১

বেহালার পর্ণশ্রীতে বহুতলের ঘর থেকে উদ্ধার মা-ছেলের গলাকাটা দেহ! চাঞ্চল্য এলাকায়

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বেহালার পর্ণশ্রী এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। এক বহুতলের ঘর থেকে মা ও ছেলের গলাকাটা দেহ উদ্ধার হয়েছে। ইতিমধ্যেই পুলিশ তদন্ত শুর করেছে।

পরনে তখনও ছিল স্কুল ড্রেস, গলায় টাই বাঁধা ছিল। ওই অবস্থাতেই বিছানায় পড়ে ছিল তমজিতের রক্তাক্ত দেহ। বেহালার পর্ণশ্রীতে মা ও ছেলের রহস্যমৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে। সোমবার সোমবার রাত আটটা নাগাদ পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকায় একটি বহুতলের ঘর থেকে বছর চল্লিশের সুস্মিতা মণ্ডল এবং তাঁর ছেলে বছর তেরোর তমজিতের গলার নলি কাটা দেহ উদ্ধার হয়।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, তমজিত মণ্ডল স্কুল ড্রেস পড়া অবস্থাতেই বিছানায় পড়ে ছিল। বিকালে আর পাঁচ দিনের মতো নির্দিষ্ট সময়েই প্রাইভেট টিউটর আসেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, তিনি গিয়ে ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ অবস্থায় দেখতে পান। ডাকাডাকির পর দরজাও ধাক্কান। কিন্তু সাড়া না পেয়ে, তারপর চলে যান। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অনলাইনে ক্লাস চলাকালীন ওই ছেলেটিকে হত্যা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, যে ফোনের মাধ্যমে তমজিতের অনলাইন ক্লাস চলছিল, সেটিও পাওয়া যাচ্ছে না বলেই পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সেই ফোনে কিছু তথ্য-প্রমাণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। এদিকে তমজিতের পাশেই পড়েছিল তাঁর মায়ের দেহ।

এই মণ্ডল পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। জানা গিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক ভালো ছিল না। এদিকে, সুস্মিতা মণ্ডলের স্বামী, পেশায় ব্যাঙ্ক কর্মী তপন মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ কর হচ্ছে গৃহশিক্ষককেও। ঘটনাস্থল ইতিমধ্যেই কঠোর নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। ওই বহুতলের বাকি বাসিন্দাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনা কখনই এর আগে এলাকায় ঘটেনি বলে দাবি করা হচ্ছে স্থানীয়দের তরফ থেকে। এদিকে, যেহেতু ফ্ল্যাটের ভিতর ঢুকে খুন করা হয়েছে, এবং কোনও চিৎকার শুনতে পাওয়া যায়নি, সেই কারণে পরিচিত কেউ এই খুন করে থাকতে পারে বলেও অনুমান তদন্তকারীদের।

উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যায় পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকার বাসিন্দা তপন মণ্ডল অন্যান্য দিনের মতোই কাজ থেকে বাড়ি ফেরেন। তাঁর বয়ান অনুযায়ী, বাড়ি ফিরে তিনি দেখেন, বিছানা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। পড়ে রয়েছে তাঁর স্ত্রী ও ছেলের নিথর দেহ। সামনে গিয়ে দেখতে পান, দুজনের গলার নলি নৃশংসভাবে কেটে হত্যা করা হয়েছে। তিনি যখন ফেরেন, ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ছিল বলেই দাবি করেন। এদিকে, যখন গৃহশিক্ষকের বয়ান অনুযায়ী, ফ্ল্যাটের দরজা ছিল বন্ধ। ফলে এই দুই পরস্পর  বিরোধী বয়ানে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

এই জোড়া খুনের ঘটনায় একাধিক দিক খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। যেহেতু তপনবাবুর পরিবারের সদস্য মাত্র ৩ জন, তাই চেনাশোনা কোনও ব্যক্তি ছাড়া এই ঘটনা ঘটনো একপ্রকার অসম্ভব বলেই ধারণা পুলিশের। কে বা কারা এই ঘটনার পিছনে রয়েছে তা জানতে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখারও চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ওই আবাসনের সিসিটিভি অচল বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাকিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ।