কিছু কিছু খবর মনকে ভারাক্রান্ত করে দেয়, প্রশ্ন তোলে কোথায় গিয়ে পৌঁছেছে এই সমাজ কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা! ঘোর কলিযুগে যে আমরা পৌঁছে গেছি তার প্রমাণ বারে বারে মিলেছে, কিছুদিন আগে নিজের মাকে তালা বন্ধ করে কুম্ভের মালায় চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পুত্র ও পুত্রবধূর বিরুদ্ধে।
আর এবার নিজের মাকে দেখাশোনার জন্য এক কানা করিও অর্থ না দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তিকে তার মায়ের ভরণপোষণের জন্য ৫০০০ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু সেই পরিমাণ অর্থ দিতেও নারাজ তিনি। আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাঞ্জাব হরিয়ানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
আর তার সেই আবেদনের ভিত্তিতে এবার আদালত রীতিমতো তাকে ভর্ৎসনা করলো! ওই ব্যক্তির আবেদন দেখে ‘ঘোর কলিযুগ’ বলল আদালত। পঞ্জাবের সাঙ্গরুর জেলার সিকন্দর সিং নামে ওই ব্যক্তির আবেদনকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেছেন বিচারক। একইসঙ্গে আদালতে ওই ব্যক্তির আবেদন খারিজ করার পাশাপাশি তাকে ৫০০০০ টাকা জরিমানা করেছেন।
এই বিষয়ে বিচারপতি জসগুরপ্রীত সিংহ পুরি নিজের বিচারে বলেছেন, পারিবারিক আদালতের বিচারক বেশ কম টাকাই ধার্য করেছিলেন। এই টাকাও উনি দিচ্ছেন না। এই ঘটনা আদালতকে নাড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনা কী? ১৯৯৩ সালে ৫০ বিঘা জমির মালিক ভাগ সিং মারা যান। তাঁর পরিবারে ছিলেন তার স্ত্রী সুরজিৎ কউর, দুই পুত্র সিকন্দর ও সুরিন্দর। পিতার মৃত্যুর পর সম্পত্তি ভাগাভাগি হয় দুই পুত্রের মধ্যে।
সুরিন্দর মারা যাওয়ার পর তাঁর স্ত্রী অমরজিৎ কউর পান জমির মালিকানা। কিন্তু শাশুড়িকে দেখতে অসম্মত হন তিনি। এমনকি অন্য পুত্র সিকান্দরও হাত গুটিয়ে নিয়েছেন। ভাগ সিংহের বিধবা পত্নী সুরজিতের অভিযোগ, স্বামীর মৃত্যুর পর তাকে তার কন্যার বাড়িতে থাকতে হচ্ছে। সে কারণে ৭৭ বছরের বৃদ্ধা পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণের দাবি তুলে মামলা দায়ের করেন। এরপর পারিবারিক আদালত সিকন্দর ও অমরজিৎকে প্রত্যেক মাসে পাঁচ হাজার টাকা ভরণপোষণের খরচ দিতে নির্দেশ দেয়।
কিন্তু তাতেও অসম্মত সিকন্দর রায়ে একটি রিভিশন পিটিশন দাখিল করেন। সেখানে সিকন্দর দাবি করে, বাবার মৃত্যুর পর একটি চুক্তি করা হয়েছিল এবং সেই অনুযায়ী মাকে ১ লক্ষ টাকা ভরণপোষণ দেওয়া হয়েছিল। এই টাকা পাওয়ার পর তিনি তাঁর মেয়ের কাছে থাকতে শুরু করেছিলেন। আর এবার সেই আবেদনেরই রায় দিল আদালত।