মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

পর্ণশ্রী হত্যাকাণ্ডে অবশেষে রহস্যভেদ! টাকার লোভেই খুন, পুলিশের জালে নিহতের দুই মাসতুতো ভাই

০৬:৪৮ পিএম, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১

পর্ণশ্রী হত্যাকাণ্ডে অবশেষে রহস্যভেদ! টাকার লোভেই খুন, পুলিশের জালে নিহতের দুই মাসতুতো ভাই

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অবশেষে পর্ণশ্রী হত্যাকাণ্ডে রহস্যভেদ করল পুলিশ। পুলিশের জালে মৃতা সুস্মিতা মণ্ডলের দুই মাসতুতো দাদা। এদিন কলকাতা পুলিশের জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, শিনিবার সারারাত ধরে জেরার পর খুনের কথা স্বীকার করেছে এই খুনে মূল অভিযুক্ত সঞ্জয় দাস। জানা গিয়েছে আগামীকাল ধৃতদের আদালতে তোলা হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহেশতলা থানা এলাকার শ্যামপুর ঘোষ পাড়ার বাসিন্দা সঞ্জয় ও সন্দীপ দাস। সম্পর্কে এরা দুইভাই। মৃতা সুস্মিতা মণ্ডল ধৃতদের মাসতুতো বোন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই সঞ্জয়ের ভূমিকা ভাবাচ্ছিল তাঁদের। সঞ্জয়ের গায়ে, হাতে আঘাতের চিহ্ন ছিল। যা নিয়ে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। তাছাড়াও তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন যে, সঞ্জয় মণ্ডল সুস্মিতার কাছে টাকা ধার চেয়েছিলেন, যা মৃতা দেননি। এরপর শনিবার রাতে বাড়ি থেকে আটক করা হয় তাকে। লালবাজারে টানা জিজ্ঞাসাবাদ চলে। মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, রাত দুটো নাগাদ খুনের কথা স্বীকার করে নেয় সঞ্জয়। সেই সময়ই গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। ভোর ৪ টে নাগাদ গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জয়ের ভাই সন্দীপকে।

খুনের মোটিভ নিয়ে পুলিশের দাবি, ধৃত সঞ্জয় জেরায় জানিয়েছেন যে, বেশ কিছুদিন ধরেই আর্থিক সমস্যায় ভুগছিল সে। প্রচুর ধার হয়ে গিয়েছিল তার। কোনভাবেই সেই ধার মেটাতে পারছিল না সে। এদিকে মাসতুতো বোন সুস্মিতার অবস্থা অনেকটাই স্বচ্ছল। বরাবরই সোনার গয়নার প্রতি আকর্ষণ ছিল তাঁর। আবার বোনের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়েও পাননি। তাই নিজের আর্থিক সমস্যা মেটাতে এবং লোভে বোনকে খুনের ষড়যন্ত্র করে সঞ্জয়।

জানা গিয়েছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৬ সেপ্টেম্বর অর্থাৎ সোমবার দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ বোন সুস্মিতার বাড়িতে যায় সঞ্জয় ও সন্দীপ। কারণ, তারা জানত ওই সময় সুস্মিতাদেবীর স্বামী বাড়িতে থাকেন না। দাদাদের দেখে স্বাভাবিকভাবেই দরজা খুলে দেন সুস্মিতা। কোনও সন্দেহ হয়নি তাঁর। এদিকে সেই সময় পাশের ঘরে ক্লাস করছিল তাঁর ছেলে তমোজিৎ। যাতে এঘরের গল্পের কারণে ছেলের পড়াশোনার ক্ষতি না হয় সেই কারণে সুস্মিতাদেবী পাশের ঘরের দরজাও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই সময়ই বোনকে খুন করে সঞ্জয় ও সন্দীপ। তা দেখে ফেলেছিল বছর তেরোর তমোজিৎ। সেই কারণেই খুন করা হয় তাকেও।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পর্ণশ্রীর সেনপল্লি এলাকার গোপাল মিশ্র রোডের বহুতল ফ্ল্যাট থেকে গত সোমবার রাতে উদ্ধার হয় সুস্মিতা মণ্ডল ও তার ছেলে তমোজিতের দেহ। শোওয়ার ঘরে সুস্মিতাদেবীর দেহ পড়ে ছিল। তমোজিতের দেহ ছিল তার পাশের ঘরে। তার পরনে ছিল স্কুলের পোশাক।ঘটনার তদন্তে নেমেই মহিলার স্বামী-সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছিল পুলিশ। অবশেষে পুলিশের জালে আসল খুনি ধরা পড়ল।