বৃহস্পতিবার, ০৯ মে, ২০২৪

কাবুলে অপহৃত ইউক্রেনের বিমান! বিমানটিকে ইরানে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

০৩:৩০ পিএম, আগস্ট ২৪, ২০২১

কাবুলে অপহৃত ইউক্রেনের বিমান! বিমানটিকে ইরানে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি। তালিবানি দখলে যাওয়ার পর থেকেই অশান্ত কাবুল। অনেক আগেই দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রাক্তন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। যত সময় এগোচ্ছে, ততই ক্রমশ খারাপ হচ্ছে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি। নিজের দেশকে আর সুরক্ষিত মনে করছেন না আফগানরা। তালিবানি শাসন থেকে মুক্তি পেতে দেশত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে সে দেশের নাগরিকদের মধ্যে। তাছাড়া বিভিন্ন দেশ আফগানিস্তানে থাকা তাদের নাগরিকদেরও সেখান থেকে উদ্ধারের কাজ করে চলেছে। এরই মধ্যে কাবুল থেকে অপহৃত হল ইউক্রেনের একটি বিমান। জানা গিয়েছে, সেই বিমানটিকে অপহরণকারীরা ইরানে নিয়ে গেছে। মঙ্গলবার এই অপহরণের খবর নিশ্চিত করে বিবৃতি দিয়েছেন ইউক্রেনের উপ বিদেশমন্ত্রী ইয়েভজেনি ইয়েনিন।

তবে, এই অপহরণের ঘটনার পিছনে কে বা কারা রয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। জানা গিয়েছে, ওই বিমানটিতে ৮৩ জন যাত্রী ছিলেন। মঙ্গলবার এই অপহরণের খবর নিশ্চিত করে বিবৃতিতে ইউক্রেনের উপ বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, “গত রবিবার আমাদের বিমানটিকে অপহরণ করে কয়েকজন। আর আজ বিমানটি আমাদের থেকে সম্পূর্ণভাবে ছিনতাই করে ইরানের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। কাবুল থেকে যাদের ফেরানো হচ্ছিল, তাদের কয়েকজন ছিলেন বিমানে। এই বিমান অপহরণের জন্য আমাদের উদ্ধারকাজের পরবর্তী পদক্ষেপও ব্যাহত হচ্ছে।” যদিও ইরানের পক্ষ থেকে এই বিমান অপহরণের করে সেদেশে আনার খবর সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করা হয়েছে। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ইউক্রেনের একটি বিমান জ্বালানি ভরতে ইরানে অবতরণ করেছিল। জ্বালানি ভরার কাজ শেষ হলে, তা চলে যায়। আবার তালিবানের তরফেও এই অপহরণের কথা স্বীকার করা হয়নি।

ইউক্রেনের বিদেশ উপমন্ত্রী তাঁর বিবৃতিতে আরও জানিয়েছেন যে, অপহরণকারীরা সকলেই সশস্ত্র ছিল। অপহরণের পর ঠিক কী ঘটেছে, সে সম্পর্কে কোনও কিছুই স্পষ্ট হচ্ছে না। তবে, অনুমান করা হচ্ছে যে, যাত্রী সেজে বিমানে উঠেই তা ছিনতাই করা হয়। রাডারের শেষ রিডিং অনুযায়ী, সেটিকে ইরানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেভা নিজে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে জানিয়েছেন ইয়েনিন। আন্তর্জাতিক নীতি মেনে, সর্বস্তরে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যে কোনওভাবেই হোক, বিমানটিকে ফিরিয়ে আনার মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছে ইউক্রেন।

https://twitter.com/ANI/status/1430079171955331082

এদিকে, ইরানের দাবি অনুযায়ী, বিমানটি সেখানে জ্বলানি ভরার জন্য নামলেও, পরে তা ফিরে যায়। এই পরিস্থিতি প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে কারা ওই বিমানটিকে ছিনতাই করল। পাশাপাশি এও প্রশ্ন উঠছে যে, রবিবার থেকে বিমানটির কোনও খোঁজ নেই। তাহলে মঙ্গলবার কেন ইউক্রেন এই অপহরণের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনল? এই অপহরণের বিষয়ে ইতিমধ্যেই একাধিক জল্পনা শুরু হয়েছে। আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই অপহরণের পিছনে তালিবানদের আহত রয়েছে বলে মনে করা হলেও, ইউক্রেনের চেচেনপন্থি জঙ্গি কিংবা ইরানের বিচ্ছিন্নতাবাদীরাও এই অপহরণের পিছনে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, মোট তিন দফায় আফগানিস্তান থেকে ইউক্রেনের নাগরিকদের দেশে ফেরানোর কথা। তার মধ্যে একটি বিমান ইউক্রেনে ফিরেছে। এটি ছিল দ্বিতীয় বিমান। খবর আসছে, যাদের ওই বিমানে ওঠার কথা ছিল তাদের বিমানে তোলা হয়নি। এখনও কাবুলে আটকে রয়েছে বহু ইউক্রেনবাসী। কাবুল নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ন্যাটো বাহিনী। তারাও এখনও পর্যন্ত কোনও বিমান অপহরণের কথা জানায়নি। ফলে অপহরণ নিয়ে একটা ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। পাশাপাশি কাবুলে বিদেশি নাগরিকদের ঘরে ফেরা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে এই ঘটনার পর।