শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

কেন বিজেপি ছাড়লেন বাবুল সুপ্রিয়? নিজেই প্রকাশ্যে আনলেন কারণ

০৫:১৩ পিএম, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২১

কেন বিজেপি ছাড়লেন বাবুল সুপ্রিয়? নিজেই প্রকাশ্যে আনলেন কারণ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সদ্য নতুন ইনিংস শুরু করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। গতকালই তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। আর তৃণমূলে যোগ দিয়ে প্রথমবার এদিন তিনি তৃণমূলের হয়ে মাইক নিজের হাতে তুলে নিলেন। জানালেন, সাত বছর বিজেপিতে থাকার পর, তাঁর বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার কারণ।

রবিবারের ছুটির বিকেলে তিনি সর্বসমক্ষে প্রকাশ করলেন বিজেপি ছাড়ার পিছনে যাবতীয় কারণ। সেই সঙ্গে জানালেন পরের পদক্ষেপ কী হবে তাঁর। এদিন তিনি জানিয়েছেন, জীবন তাঁকে নতুন একটা সুযোগ দিয়েছে। তিনি সেটা কাজে লাগাতে চান। অনেক বড় সুযোগ এসেছে। খুশি মনে তিনি তা গ্রহণ করেছেন। কিন্তু কীসের সুযোগ? সে বিষয়ে বাবুল ধোঁয়াশা জিইয়েই রাখলেন। রাজ্যসভার সাংসদ পদ! নাকি রাজ্যের মন্ত্রিত্ব? সেই বিষয়টি সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেন।

কিন্তু কেন তৃণমূলে? এর উত্তরে বাবুল জানিয়েছেন, প্রথম একাদশে থাকতে চান তিনি। তবে, এই ‘প্রথম একাদশ’ বলতে তিনি ঠিক কী বলতে চাইলেন, তা স্পষ্ট করেননি। তবে, সেই সিদ্ধান্তভার তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরই ন্যস্ত করেছেন তিনি। এদিন শহরের একটি হোটেল সাংবাদিক বৈঠক করে স্পষ্ট ভাষায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বলেন, ‘আমি প্রথম একাদশে থেকে খেলতে চাই। রিজার্ভ বেঞ্চে বসতে চাই না। যদি মোহনবাগানের প্রথম একাদশে সুযোগ না পাই, তাহলে মোহনবাগান বি-টিমের হয়ে খেলব না। দরকারে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলব।’

[caption id="attachment_32396" align="alignnone" width="1421"] সাংবাদিক বৈঠকে বাবুল সুপ্রিয়[/caption]

তাঁর বক্তব্য খুব স্পষ্ট, ‘কারোর কাছে নিজেকে আমায় প্রমাণ করার দরকার নেই। কিন্তু আমি সুযোগকে কাজে লাগাতে চাই। মমতাদি এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝেছেন যে আমার মধ্যে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। সেই জন্য আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাতে চাই।’

গতকালই রাজ্য এবং জাতীয় রাজনীতিতে বড় ধাক্কা দিয়ে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে শামিল হন দু’বারের বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এরপর এদিন তিনি সাংবাদিক বৈঠকে বলেন যে, ‘আমাদের জীবনে বহু ঘটনাই ঘটে। তা থেকে মনে যা হয় সেভাবেই আমরা প্রতিক্রিয়া দিই। আমি হয়তো গায়ক বলে কিছুটা আবেগপ্রবণ কিন্ত রাজনীতি ছাড়ার সিদ্ধান্তটা ঝোঁকের মাথায় ছিল না।’

এদিন নতুন শুরুর কথা বললেও, পুরাতনকে অস্বীকার করেননি বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর কথায়, ‘যখন যেটা করি মন দিয়ে করি। কোনও পোস্ট ডিলিট করব না।’ এদিন উঠে আসে ঝালমুড়ি প্রসঙ্গও। তিনি বলেন, ‘অনুপম হাজরার প্রশ্নের জবাব দেব কেন? দিদি আমাকে ঝালমুড়ির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। নজরুল মঞ্চে স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচি ছিল। সেখানেই দাঁড়িয়েছিলাম। তখন মমতাদিদি আমায় বলেছিলেন, তুমি তো রাজভবনেই যাচ্ছ আমার গাড়িতে চলো। আমার মনে হয়েছিল আসানসোল, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো নিয়ে কথা বলব। আমার চারটে ইস্যু ছিল। ভিক্টোরিয়ার সামনে ঝালমুড়ি অফার করেছেন উনি। সাংবিধানিক প্রধান আমায় অফার করছেন কেন না বলব?’

https://www.facebook.com/AITCofficial/videos/999026247326235

অন্যদিকে, তাঁর দলছাড়া নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির মন্তব্যেরও জবাব দিয়েছেন তিনি। বাবুল বলেন, ‘দিলীপদাকে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় দেব। যাতে বাংলা ভাষাতেই কথা বলেন।’ এছাড়াও ভবানীপুরের উপনির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে বলেন, ‘প্রিয়াঙ্কার পরিবারকে চিনি। আমার আইনি মামলাও-ই দেখাশোনা করত। লড়াকু মেয়ে। আমার সমস্ত মামলা লড়েছিল। দিদির আমার প্রচারের দরকার নেই। দলকে অনুরোধ করব, আমায় বিড়ম্বনায় না ফেলতে।’

কিন্তু তৃণমূলের যোগ দেওয়ার পরিস্থিতি কীভাবে তৈরি হল? এই প্রশ্নের উত্তরে বাবুল জানিয়েছেন যে, ‘মাত্র চারদিন আগে ডেরেক ওব্রায়েন সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। পুরো বিষয়টাই তার কাছে খুব অনুপ্রেরণার ছিল সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেন।’ আবার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন যে, বুধবারই স্পিকারের সঙ্গে দেখা করে পদত্যাগ করতে চান তিনি। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী এও জানিয়েছে, ‘আমি একটি সুযোগে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছি। এই সুযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করে দিয়েছেন।’ বাবুলের কথায়, তৃণমূলের থেকে তিনি প্রাণভরা ভালবাসা পাচ্ছেন।

এদিন সাংবাদিক বৈঠক শেষে আগে বাবুল জানিয়েছেন, ‘কাল দিদির সঙ্গে দু'বার কথা হয়েছে। আমায় বলেছেন মন দিয়ে কাজ করো। আর মন দিয়ে গান গাও।’ পাশাপাশি ২০২৪ এ প্রধানমন্ত্রী কাকে দেখতে চান সেই প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালে সবচেয়ে জনপ্রিয় মানুষকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। তার মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যতম। ২০১৪ সালে মোদিজী হোপ ছিলেন। ২০২৪ সালে আমি যে দলে আছি তিনি হোপফুল লিস্টে শীর্ষে থাকবেন এটা বোঝার মধ্যে কোনও ব্যাকরণ লাগে না।’