শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

লাইভ BJP ব্রিগেড: এবার বাংলায় হবে আসল পরিবর্তন, বললেন মোদী

০৪:০৪ পিএম, মার্চ ৭, ২০২১

লাইভ BJP ব্রিগেড: এবার বাংলায় হবে আসল পরিবর্তন, বললেন মোদী

বংনিউজ২৪x৭ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজনীতির হাইভোল্টেজ সানডে! নির্বাচনের মুখে রাজনীতির ময়দানে আজকের রবিবারের নিঃসন্দেহে আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। আজ রাজ্যের এক শহরে ব্রিগেডে মোদীর মেগাসভা। অন্যদিকে আজই রাজ্যের আর এক প্রান্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মিছিল এবং সভা হচ্ছে। দুপক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে আক্রমণ করছে।

২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে, রবিবার অর্থাৎ আজ কলকাতা শহরে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সবথেকে বড় জনসভা। এই জনসভায় উপস্থিত থাকতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষের এসেছেন। গতকাল থেকেই মানুষের আসা শুরু হয়ে গেছে। ২১-এর নির্বাচনের মুখে এই ব্রিগেডের জনসভাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার পারদ ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী বাংলার পদ্ম শিবিরে।

এই সভা থেকেই শুরু হয়ে হল বাংলা দখলের আসল লড়াই। আর বাংলায় আসল পরিবর্তনের ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজকের ব্রিগেডে মূলমঞ্চে মোদির সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, দিলীপ ঘোষ, মুকুল রায়, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাহুল সিনহা, রুপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট-সহ আরও অনেকেই। প্রমুখ বিজেপি নেতৃত্বরা। এছাড়াও ছিলেন বিজেপির অসংখ্য কর্মী এবং সমর্থক।

দুপুর আড়াইটে নাগাদ ব্রিগেডে সভামঞ্চে এসে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রিগেড মঞ্চে নরেন্দ্র মোদিকে উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন মিঠুন চক্রবর্তী। মঞ্চে তাঁকে স্বাগত জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এরপরই শুরু হয় ব্রিগেডের আজকের জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বহু প্রতীক্ষিত ভাষণ। প্রথমেই, তিনি বাংলার মানুষের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলা তথা কলকাতার ভাই-বোনদের প্রণাম। রাজনৈতিক জীবনে কয়েকশো  সভা করতে হয়েছে। কিন্তু এত বড় জনসমাবেশ দেখার সৌভাগ্য এর আগে কখনও হয়নি’। তিনি বলেছেন, ‘বাংলার মাটি আমাদের সংস্কার তুলে ধরেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার মাটি অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। বাংলার মনীষীরা এক ভারত, শক্তিশালী ভারত গড়তে সাহায্য করেছেন।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন যে, আজ আমাদের মধ্যে বাংলার ছেলে মিঠুনদা রয়েছেন। তাঁর লড়াই সবার কাছে দৃষ্টান্ত। অনেকের মতে আজই ২ মে চলে এসেছে। সোনার বাংলার সংকল্প নিশ্চয় পূরণ হবে। আসল পরিবর্তনের জন্য মানুষ আজ ব্রিগেডে এসেছেন। তিনি ব্রিগেডে উপস্থিত অসংখ্য মানুষের উদ্দেশে বলেন যে, ‘এই ব্রিগেড থেকে আমি আসল পরিবর্তনে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। বাংলার পুনর্নির্মাণ, সংস্কৃতির রক্ষা, শিল্প তৈরির প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। বাংলার মানুষের উন্নতির জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করব। প্রতি মুহূর্তে আপনাদের জন্য বাঁচব, আপনাদের সেবা করব। প্রতি মুহূর্তে কাজের মধ্যে দিয়ে আপনাদের মন জয় করব।’

তিনি সভামঞ্চ থেকে অনুপ্রবেশকারীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন যে, এখানে অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশ রুখে দেওয়া হবে। স্বাধীনতার পর থেকে এই ৭৫ বছরে বাংলার মাটি থেকে যা যা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, তা সকলেই ভালোভাবে জানেন। তাই যা কেড়ে নেওয়া হয়েছে তা সব কিছু ফিরিয়ে দিতে হবে। বিজেপি যে সরকার গড়বে সেখানে বাংলার মানুষের উন্নয়নই শেষ কথা হবে। বিজেপি সরকারের প্রেরণা হবে আসল পরিবর্তনের মন্ত্র। তিনি আসল পরিবর্তনের ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, আসল পরিবর্তন মানে যেখানে , বাংলা থেকে মানুষকে চলে যেতে না নয়, যেখানে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটে। আসল পরিবর্তন মানে এমন বাংলা, যেখানে গরীবেরও সমান অধিকার রক্ষা হয়। আসল পরিবর্তন মানে যুবকদের কর্মসংস্থান। আসল পরিবর্তন মানে একবিংশ শতকে আধুনিক পরিকাঠামো। আসল পরিবর্তন মানে সব ক্ষেত্রের মানুষের সমান যোগদান। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ বা জঙ্গলমহল সবপক্ষের উপরই সমান নজর থাকবে।

তিনি বলেন যে, বাংলার মানুষের ইচ্ছাশক্তি অটুট। তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে আক্রমণ করে বলেন যে, বাংলার মা-বোনেদের উপর অত্যাচার চলছে। কিন্তু বাংলার মানুষের ইচ্ছাশক্তি ভাঙতে পারেনি কেউ। আজকের এই বৃহৎ সমাবেশ তারই প্রমাণ। আজ বাংলা চায় উন্নতি, শান্তি, প্রগতিশীল বাংলা তথা সোনার বাংলা। তিনি বলেন যে, এবারের ভোটে একদিকে রয়েছে তৃণমূল, বাম-কংগ্রস ও তাদের ক্রমাগত বাংলা বিরোধী কাজ। আর অন্যদিকে বাংলার মানুষ এইসবের বিরুদ্ধে কোমর বেধে তৈরি হয়েছেন। তিনি বলেন যে, সব ক্ষেত্রের মানুষ আজ বিজেপিকে আশীর্বাদ করছেন। সবার একটাই ইচ্ছা এবং লক্ষ্য বাংলাকে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে দেওয়া।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে আক্রমণ করে তিনি বলেন যে, মানুষের বিশ্বাস ভেঙেছেন মমতা। তিনি বলেন যে, ‘আমার সৌভাগ্য যে, এই ঐতিহাসিক ব্রিগেড ময়দানে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ পেয়েছি। বাংলা আজ গোটা ভারতের প্রেরণাভূমি। গত দশকে ব্রিগেডে বহুবার স্লোগান উঠেছে ব্রিগেড চলো। কিন্তু এই ব্রিগেড উন্নয়নে বাধা দেওয়ারও সাক্ষী। ধর্মঘটের নীতি নির্ধারণের সাক্ষীও এই ব্রিগেড। কিন্তু বাংলার মানুষ পরিবর্তনের আশা ছাড়েনি। সেই আশায় মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা করেছিলেন। কিন্তু মানুষের সেই ভরসা এবং বিশ্বাস ভেঙেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’

তিনি বাংলার মানুষকে আশ্বান দেন যে, বিজেপি যে সরকার গড়বে, সেখানে বাংলার মানুষের উন্নয়নই শেষ কথা হবে। বিজেপি সরকারের প্রেরণা হবে আসল পরিবর্তনের মন্ত্র। বক্তৃতার শেষে তিনি সকলের উদ্দেশে একসঙ্গে স্লোগান দিতে বলেন। যে স্লোগানের মূল কথা ছিল যে, আসল পরিবর্তন হবে এবার, এবার সোনার বাংলা তৈরি হবে।

উল্লেখ্য, আজকে ব্রিগেডের অন্যতম আকর্ষণ ছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। আজ এই সভাতেই তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে, বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন। তাঁকে উত্তরীয় পরান কৈলাস-দিলীপরা। আজকের ব্রিগেডের সভামঞ্চ থেকে তিনি বলেন যে, ‘আজকের দিনটা স্বপ্নের মতো। কানাগলিতে জন্মে মোদির সঙ্গে এক মঞ্চে। এটা স্বপ্ন ছাড়া আর কি?’ তিনি আরও বলেন যে, ‘আমি গর্বিত, আমি বাঙালি। ভুলবেন না বিদ্যাসাগর, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনকে।’ সঙ্গে  মানুষের উদ্দেশে দেন বিখ্যাত ডায়লগ- ‘আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়াও নই। আমি জাত গোখরো, এক ছোবলে ছবি। আমি যা করি, আমি তাই বলি’।