কেন্দ্রের নির্দেশ মতো দিল্লির নর্থ সোমবার উপস্থিত ছিলেন না রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্য সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বদলে তাকে দেখা গিয়েছিল নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর পাশের চেয়ারে। এর ঠিক পরেই আগামীকাল তাকে দিল্লি তে যোগদান করার জন্য ফের একবার করা চিঠি দিয়েছে কেন্দ্র। কিন্তু সেই দেশকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মুখ্য সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর এই ঘটনার ঠিক পরেই সূত্রের খবর মুখ্যমন্ত্রীর নবনিযুক্ত মুখ্য পরামর্শদাতা আলাপনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এমনকি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে চার্জশিটও ধরাতে পারে কেন্দ্র, সূত্রের খবর এমনটাই।
ফের চরমে উঠল রাজ্য কেন্দ্র সংঘাত। কেন্দ্রের তরফে চিঠি দিয়ে সোমবার দিল্লির নর্থ ব্লকে সকাল দশটা নাগাদ যোগদান দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কিন্তু এদিন সকালে দিল্লি না গিয়ে দুপুরে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের উপস্থিত ছিলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই বিকেলেই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফের চিঠি দেয় কেন্দ্র।
এই দ্বিতীয় চিঠিতে জানানো হয়েছিল আগামী কাল অবিলম্বে তাকে যোগ দিতে হবে দিল্লিতে। কিন্তু এখানেই মাস্টার স্ট্রোক দিয়ে আজ নিজের কর্ম জীবনের ইতি টানলেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত আজ তার কর্ম জীবনের শেষ দিন ছিল। কিন্তু রাজ্যের ইয়াস এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কেন্দ্রের অনুমোদনে তার মুখ্য সচিব পদের মেয়াদ তিন মাস বৃদ্ধি করা হয়েছিল। তবে রাজ্য কেন্দ্রের এই টানাপোড়েনে মেয়াদ বৃদ্ধির সুবিধা না নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি ছাড়লেন আলাপন।
এরপরে সূত্র মারফত খবর, কেন্দ্রের কর্মী বর্গ এবং প্রশিক্ষণ বিভাগের রিপোর্ট কেন্দ্রকে সময়মতো জমা না দেওয়ায় আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কে শোকজ নোটিশ ধরাতে পারে কেন্দ্র। এমনকি তাকে চার্জশিটও ধরানো পারে হতে পারে বলেই খবর। অর্থাৎ বলা যায় কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পরেও উচ্চপদস্থ হামলার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের পথে হাঁটার ভাবনা চিন্তা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
তবে এক্ষেত্রে কেন্দ্র কোনরকম আইনি পদক্ষেপ নিতে পারেনা বলেই জানিয়েছেন আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। তার কথায়, "আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় যেহেতু মুখ্য সচিবের মেয়াদ বৃদ্ধির সুবিধা নেননি তাই এক্ষেত্রে কেন্দ্রের কিছু করার নেই। নির্দেশ কেবলমাত্র কাগজেই পরিণত হবে।" তিনি আরো জানান, "প্রথাগতভাবে অবসর নিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আলাপনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার নেই কেন্দ্রের। সংবিধানের পরীদের রাজ্য সরকারের স্বাধীন ক্ষমতা রয়েছে তাকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করার"।