শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

আরও কমল দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা, তবে, ভয় ধরাচ্ছে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা

১০:৫৯ এএম, মে ১৫, ২০২১

আরও কমল দেশে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা, তবে, ভয় ধরাচ্ছে অ্যাকটিভ করোনা রোগীর সংখ্যা

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রতিদিন অল্প হলেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে। আরও কমল দৈনিক করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৯৮ জন। এখনও পর্যন্ত দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৪৩ লক্ষ ৭২ হাজার ৯০৭। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে ৩৮৯০ জনের। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ৬৬ হাজার ২০৭ জনের।

এদিকে একদিনে করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েছেন ৩ লক্ষ ৫৩ হাজার ২৯৯ জন। এই সংখ্যা দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার থেকে বেশি। যা অবশ্যই স্বস্তির খবর। এখনও পর্যন্ত দেশে করোনাকে পরাস্ত করে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ২ কোটি ৪ লক্ষ ৩২ হাজারের বেশি। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৭৩ হাজার ৮০২ জন। এই সংখ্যাটা যথেষ্ট উদ্বেগের।

অন্যদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩১ কোটি ৩০ লক্ষ ১৭ হাজার ১৯৩টি। এখনও পর্যন্ত মোট ১৮ কোটি ৪ লক্ষ ৫৭ হাজার ৫৭৯ জনের টিকাকরণ হয়েছে দেশে। টিকার সংকট কাটাতে আগামী ১৫ দিনে প্রায় ২ কোটি ভ্যাকসিন বিভিন্ন রাজ্যে বণ্টন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র সরকার। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে ৭৫ হাজার কোভ্যাক্সিনের ডোজ পৌঁছেছে শনিবার সকালে।

https://twitter.com/ANI/status/1393416903582896129

এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা সামলে এখন তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলার প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশ। জানা গিয়েছে যে, শনিবার, অর্থাৎ আজই দেশের কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে ফের একবার ভারচুয়াল বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিভিন্ন রাজ্যের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে চান তিনি। লাগামছাড়া সংক্রমণ সামলাতে কেরল সরকার লকডাউনের মেয়াদ ফের বাড়িয়েছে। উত্তর-পূর্বের ছোট এবং তুলনায় সুরক্ষিত রাজ্য সিকিমও হাঁটতে চলেছে লকডাউনের পথে।

এদিকে, আগামী সপ্তাহেই বাজারে আসতে চলেছে DRDO-র তৈরি করোনার ওষুধ। প্রথম দফায় ওষুধের ১০ হাজার ডোজ আসতে চলেছে। শুক্রবার এমনটাই জানানো হয়েছে DRDO-র পক্ষ থেকে। করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে এই খবর অবশ্যই স্বস্তির। DRDO-র আধিকারিকরা আরও জানিয়েছেন যে, আগামী দিনে এই ওষুধের যোগান বাড়াতে তাঁদের বিশেষজ্ঞরা দিনরাত এক করে কাজ করে চলেছেন। তাঁরা এও মনে করছেন যে, করোনা বিরুদ্ধে লড়াই এই ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে।

উল্লেখ্য, দেশজুড়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের ঘাটতি আরও বড় সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই অক্সিজেনের অভাবে বহু করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় ডিআরডিও-র তৈরি ওষুধ জরুরিভিত্তিতে ব্যবহারে ছাড়পত্র দিয়েছিল ডিসিজিআই। চলতি মাসের ৮ তারিখ, শনিবার, প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তরফে ওই ঘোষণা করা হয়েছিল।

ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরি ও ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই ওষুধের নাম ‘ডি-অক্সি ডি গ্লুকোজ’ বা সংক্ষেপে ‘২ ডিজি’। ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে প্রমাণিত যে, হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীদের এই ওষুধ প্রয়োগ করা হলে, দ্রুত করোনা আক্রান্তের শ্বাসকষ্টের সমস্যার সমাধান হয় এবং সংক্রমণও সেরে ওঠে। জানা গিয়েছে, করোনা মোকাবিলায় এই গুঁড়ো ওষুধ জলের সঙ্গে গুলে পান করতে হয়। তার ফলে সারা দেহে এই ওষুধ ছড়িয়ে পরে দ্রুত। দেহের ভাইরাস সংক্রমিত কোষগুলিতে সংশ্লেষ বন্ধ করে দেয়। ফলে প্রোটিনের শক্তি উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। আর পুষ্টির অভাবেই কার্যত প্রোটিন নষ্ট হয়ে যায়।  এও জানা গিয়েছে যে, ফুসফুসে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া আটকায় এই ২ ডিজি। এর ফলে রোগীর অক্সিজেন নির্ভরতা কমতে থাকে এবং রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।

প্রস্তুতকারী উক্ত দুই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে যে, করোনা ভ্যাকসিন যেমন কোভিডকে আগেভাগেই ঠেকায়, তেমনই এই ওষুধ প্রয়োগ করোনা রোগীকে দ্রুত গতিতে সুস্থতার দিকে নিয়ে যায়। ওষুধটি সম্পর্ককে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফেও বলা হয়েছে, ‘এই ওষুধ ব্যবহারের ফলে কোভিড রোগীর হাসপাতালে থাকার সময় কমে আসবে। করোনা আক্রান্ত কোষে এর প্রভাবের ফলে বহু প্রাণের রক্ষা সম্ভব।’