বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেড় বছরের বেশি সময় কেটে গেলেও, দেশ এখনও করোনার কবল থেকে মুক্ত হতে পারেনি। তার মধ্যেই স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে দেশ। আর সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য জোর দেওয়া হচ্ছে টিকাকরণের উপর। সম্প্রতি করোনার টিকার প্রক্রিয়াকে আরও সুগম এবং ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে ‘হর ঘর দস্তক’ প্রকল্পের সূচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রকল্প অনুসারে এবার মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার ভ্যাকসিন দিয়ে আসবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। এদিকে, দেশের করোনা গ্রাফে ওঠানামা অব্যাহত রয়েছে। তবে, ধীরে ধীরে সুস্থতার পথে ফিরছে দেশ। স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে দেশ। সপ্তাহের প্রথমদিন অনেকটাই কমেছিল দেশের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা। ১০ হাজারের নীচে নেমেছিল সংক্রমণ। এরপর গত ২৪ ঘণ্টায় স্বস্তি দিয়ে আবারও অনেকটাই কমল দেশে করোনার দৈনিক সংক্রমণ।
মঙ্গলবার সকালে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ হাজার ৫৭৯ জন। এই সংখ্যাটা আগের দিনের থেকে অনেকটা কম। গতকাল দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮ হাজার ৪৮৮ জন। দূষণ নিয়ে চিন্তিত রাজধানী দিল্লিতেও আপাতত অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে সংক্রমণ। তবে, এখনও চিন্তায় রাখছে কেরলের কোভিড গ্রাফ। তবে কেরলের সংক্রমণ নিয়ে এখনও জারি রয়েছে উদ্বেগ। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট করোনা আক্রান্ত ৭ হাজার ৫৭৯ জনের মধ্য়ে ৩ হাজার ৬৯৮ জনই কেরলের। এই রাজ্যে একদিনে করোনার বলি ৭৫ জন। দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া ৩ কোটি ৪৫ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৮০ জন।
https://twitter.com/ANI/status/1462989100365926403অন্যদিকে, কমেছে মৃতের সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৩৬ জন। গতকালের থেকে কিছুটা হলেও কম। গতকাল দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা ছিল ২৪৯ জন। আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা কমায় স্বাভাবিকভাবেই স্বস্তি মিলেছে।
সংক্রমণ কমার পাশাপাশি প্রতিদিনই একটু একটু করে কমছে অ্যাকটিভ কেস। সক্রিয় রোগীর নিম্নমুখী গ্রাফই আশার আলো দেখাচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মুহূর্তে দেশের অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৫৮৪ জন। কমছে অ্যাকটিভ কেসও। মোট আক্রান্তের মাত্র ০.৩৩ শতাংশ রোগী অ্যাকটিভ, যা গত ৫৩৬ দিনের মধ্য়ে সবচেয়ে কম। সোমবারের পরিসংখ্যানের তুলনায় অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আশার আলো দেখাচ্ছেন করোনাজয়ীরাই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনামুক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ২০২ জন। আক্রান্তের থেকে সুস্থতার হার অনেক বেশি।
https://twitter.com/ANI/status/1462989100365926403করোনা মোকাবিলায় প্রধান অস্ত্র টিকাকরণ। উৎসবের মরশুমে গতি হারিয়েছিল টিকাকরণ। যা ফের স্বাভাবিক হচ্ছে। জোরকদমে চলছে টিকাকরণের কাজ। ডিসেম্বরের মধ্যে যাতে দেশের সমস্ত মানুষ অন্তত প্রথম ডোজ পান, সেই লক্ষ্যে এগোচ্ছে কেন্দ্র। রাজ্যগুলিকেও সেই মর্মে টিকা সরবরাহ করা হয়েছে বলে দাবি। এখনও পর্যন্ত দেশে ইতিমধ্যেই করোনা ভ্যাকসিন ডোজের সংখ্যা ১১৫ কোটি পার করে গিয়েছে। কোভ্যাক্সিন, কোভিশিল্ড এবং রাশিয়ার স্পুটনিক ভি দিয়ে চলছে টিকাকরণের কাজ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিভিন্ন রাজ্যে খুলছে স্কুল-কলেজ। তবে, সংক্রমণের আশঙ্কায় জমায়েতে এখনও জারি নিষেধাজ্ঞা। এছাড়াও টিকাকরণের পাশাপাশি আগের মতোই চলছে টেস্টিংও। এদিকে সম্প্রতি আইসিএমআর (ICMR) জানিয়ে দিয়েছে, নাগরিকদের বুস্টার ডোজ দেওয়া নিয়ে প্রয়োজনীয় কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি এখনও পাওয়া যায়নি। আইসিএমআরের মতে, জোড়া ডোজ হলেই তা করোনা প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট। সমস্ত নাগরিক যাতে দ্রুত ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজও পান, তা দ্রুততার সঙ্গে করার জন্য কেন্দ্রকে জানানো হয়েছে।