শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

কোভিড যুদ্ধে ফের সামিল রিলায়েন্স! একাধিক রাজ্যে প্রতিদিন যোগান দেবে এই পরিমাণ অক্সিজেন

০১:৩৪ পিএম, এপ্রিল ২১, ২০২১

কোভিড যুদ্ধে ফের সামিল রিলায়েন্স! একাধিক রাজ্যে প্রতিদিন যোগান দেবে এই পরিমাণ অক্সিজেন

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল দেশ। দেশের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়ার মুখে। প্রতিদিন দ্রুত হারে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। চিন্তা বাড়াচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। হাসপাতালে বেডের আকাল। ঘাটতি অক্সিজেনের। চারিদিকে হাহাকার।

এই কঠিন পরিস্থিতিতে আক্রান্তদের কাছে সঠিক সময়ে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া এখন মূল লক্ষ্য এবং সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। এই সংকটজনক পরিস্থিতিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিল মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। করোনায় দেশে সবথেকে আক্রান্ত কয়েকটি রাজ্যে বিনামূল্যে মেডিকেল-গ্রেড অক্সিজেন পৌঁছে দিচ্ছে এই সংস্থা। এজন্য সংস্থার গুজরাটের জামনগর তৈল শোধনাগারে বাড়ানো হয়েছে অক্সিজেনের উৎপাদন। গুজরাটের জামনগরে রিলায়েন্সের এই শোধনাগারটি বিশ্বের সবথেকে বড় তৈল শোধনাগার। করোনা মোকবিলায় অক্সিজেনের জোগান-রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রিলায়েন্স ফাউন্ডেশনের অপর একটি উদ্যোগ। এই মুহূর্তে সেখানে প্রতিদিন ৭০০ টন মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন প্রস্তুত করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, জামনগরের এই শোধনাগারে প্রাথমিকভাবে ১০০ টন মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন উৎপাদন করা হত। এখন দেশের কোভিড পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হওয়া অক্সিজেনের ঘাটতি সামাল দিতে, তা বাড়িয়ে ৭০০ টন করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই পরিমাণ অক্সিজেন করোনায় বিপর্যস্ত গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও মধ্যপ্রদেশে পাঠানো হচ্ছে। এর জেরে ৭০ হাজারের বেশি সংকটজনক রোগীকে জরুরি অবস্থায় চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হবে বলেই জানা গিয়েছে। সূত্রের এও খবর, অক্সিজেন উৎপাদনের পরিমাণ ১ হাজার টন পর্যন্ত বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে রিলায়েন্স সামনের দিনে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জামনগরের এই শোধনাগারে আগে মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন তৈরি করা হত না। এখানে ক্রুড অয়েলকে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে ডিজেল, পেট্রল এবং জেট জ্বালানি প্রস্তুত করা হত। কিন্তু, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে জেরে তৈরি হওয়া পরিস্থিতিতে, অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকায় এই প্ল্যান্টে নতুন পরিকাঠামো তৈরি করে মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেন উৎপাদন শুরু হয়েছে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনকে মেডিকেল গ্রেড অক্সিজেনে পরিণত করা হচ্ছে। কর্পোরেট সোশাল রেসপনসিবিলিটিতে সংস্থার এই উদ্যোগ বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের খবর, বিশেষ ট্যাঙ্কারে মাইনাস ১৮৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রেখে, অক্সিজেনের পরিবহনও সম্পূর্ণ নিজেদের খরচায় করছে এই সংস্থা। এর জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে কোনও অর্থ দিতে হচ্ছে না সংস্থাকে। উল্লেখ্য, দেশের করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে মুকেশ আম্বানির এই সংস্থা। যেমন-এর আগে বৃহন্মুম্বই পৌরনিগমের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দেশের প্রথম কোভিড হাসপাতাল তৈরি করেছিল রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ১০০ শয্যার এই হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছিল। যা পরে বাড়িয়ে আড়াইশো শয্যায় পরিণত করা হয়।

আবার মুম্বইয়ের স্পন্দন হোলিস্টিক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হসপিটালের করোনা-সন্দেহে ভর্তি রোগীদের জন্য কোয়ারেন্টাইন ওয়ার্ড তৈরিতে সাহায্য করেছিল রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। দিল্লিতে সর্দার প্যাটেল কোভিড ১৯ কেয়ার সেন্টার তৈরিতেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় মুকেশ আম্বানির সংস্থা। এর পাশাপাশি দেশের স্বাস্থ্য এবং ফ্রন্টলাইনে থাকা কর্মীদের জন্য নিয়মিত ১ লাখ পিপিই ও মাস্ক তৈরি করে। টেস্টিং কিটের জোগান দিচ্ছে রিলায়েন্স লাইফ সায়েন্সেস। এছাড়া লকডাউনের সময় মিশন আন্না সেবায় ১৮টি রাজ্যের ৮০টির বেশি জেলায় ৫.৫ কোটি মিলের জোগান দিয়েছে রিলায়েন্স ফাউন্ডেশন। পিএম কেয়ার সরকারি তহবিল ছাড়াও বিভিন্ন তহবিলে মোট ৫৫৬ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছে এই সংস্থা।