শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

মৃদু উপসর্গ ও বাড়িতে কোয়ারান্টিন? হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের জন্য নয়া নির্দেশকা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের!

০৯:১১ পিএম, মে ৬, ২০২১

মৃদু উপসর্গ ও বাড়িতে কোয়ারান্টিন? হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের জন্য নয়া নির্দেশকা স্বাস্থ্য মন্ত্রকের!

সামান্য জ্বর বা মাথা ভার! মাঝেমধ্যে গলা খুশখুশ! এড়িয়ে যাবেন না। করোনার প্রাথমিক উপসর্গ কিন্তু এগুলোই। কখনও কখনও কোনও উপসর্গই হয়তো নেই। কিন্তু পরীক্ষা করালেই রিপোর্ট আসছে পজিটিভ। এই অবস্থায় এখন যথারীতি আতঙ্কের মধ্যেই দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কেউ কেউ ঘরবন্দী অবস্থায় আইসোলেটেড রয়েছেন। এবার হোম আইসোলেশনে থাকা সেই সব রোগীদের জন্যই নয়া নির্দেশিকা জারি করল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

মৃদু উপসর্গ বিশিষ্ট বা উপসর্গহীন কেসের ক্ষেত্রে ল্যাব কনফার্মড কেসকেই উপসর্গহীন ধরা হবে। অর্থাৎ যাদের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ অথচ তেমন কোনও উপসর্গ নেই, তাঁরাই এই মাইল্ড কেসের মধ্যে পড়বেন। তবে এই রোগীদের অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪ শতাংশের বেশি থাকতে হবে। এছাড়াও যেসব রোগীদের জ্বর বা শ্বাসকষ্ট নেই এবং ঘরের তাপমাত্রায় অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল ৯৪ শতাংশের বেশি, তাদেরও মৃদু উপসর্গ বা উপসর্গহীন রোগীর আওতায় ধরা হবে। এসব ক্ষেত্রে তাঁদের হোম আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসা হবে। তবে তাঁদের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের নয়া নির্দেশিকা অবশ্যই মেনে চলতে হবে।

কী কী নতুন নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের? জেনে নেওয়া যাক...

১. রোগীকে পরিবারের অন্য সদস্যদের থেকে সরিয়ে রাখতে হবে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিক ও কোমর্বিডিটি রয়েছে এরকম সদস্যদের থেকে দূরে থাকতে হবে তাঁকে। নির্দিষ্ট একটি ঘরের মধ্যেই তিনি থাকবেন। কারও কার্ডিওভাস্কুলার ডিজিজ, হাইপারটেনশন ছাড়াও রেনাল ডিজিজ থাকলে তাঁদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

২. হোম আইসোলেশনের সময় অবশ্যই আলো-বাতাস যুক্ত ঘরে থাকতে হবে রোগীকে। ওই নির্দিষ্ট ঘরে আলো বাতাস ঢোকার জন্য সব সময় জানালা খোলা রাখতে হবে।

৩. হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন অবস্থাতেও রোগীকে সর্বদা ত্রিস্তরীয় মেডিক্যাল মাস্ক পরে থাকতে হবে। প্রতি ৮ ঘণ্টা অন্তর এই মাস্ক বদলে ফেলতে হবে রোগীকে। ভিজে গেলে তৎক্ষনাৎ মাস্ক বদলাতে হবে। যিনি রোগীর দেখাশোনার ভার নিয়েছেন তিনি রোগীর ঘরে প্রবেশের আগে দুজনকেই এন৯৫ মাস্ক পরতে হবে।

৪. মাস্ক বাতিল করার সময় অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। রোগীর পরা মাস্ক ফেলে দেওয়ার আগে ১ শতাংশ সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দিয়ে তাকে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।

৫. নিয়ম করে দিনে ২ বার গরম জলে গার্গল ও উষ্ণ গরম জলে ভাপ নেওয়া বাধ্যতামূলক।

৬. কোনও ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হলেই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিৎ।

৭. কোনও ধরনের উপসর্গ যেমন জ্বর, সর্দি, কাশি দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে।

৮. দিনে চারবার ৬৫০এমজি প্যারাসিটামল খেয়েও জ্বর না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক। এক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনাকে স্টেরয়েডহীন ওষুধ দেবেন।

৯. করোনা হওয়ার আগে কোনও রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শে সেই ওষুধগুলো চালিয়ে যেতে হবে।

১০. ৫ দিন পরও রোগীর জ্বর-কাশি না কমলে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। সেক্ষেত্রে ইনহেলারের মাধ্যমে ইনহ্যালেশনাল বুডেসনাইড ৮০০এমসিজি দিনে দুবার করে ৫-৭ দিন নিতে হবে। তবে তা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শে।

১১. ৩-৫ দিন খালি পেটে ইভারমেকটিন ২০০এমসিজি নিতে হবে রোগীকে।

১২. মাইল্ড কোভিডের ক্ষেত্রে একদমই স্টেরয়েড নেওয়া উচিত নয়। তবে জ্বর বা কাশি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে বা ৭ দিনেও না কমলে কম মাত্রার ওরাল স্টেরয়েড নেওয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ আবশ্যক।

১৩. কোনও কারণে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে গেলে রোগীকে তৎক্ষনাৎ হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। শ্বাসকষ্টের ক্ষেত্রেও একদমই ঝুঁকি নেওয়া ঠিক নয়। যে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রোগী রয়েছেন, তাঁর পরামর্শেই এই কাজ করতে হবে।

১৪. সর্বোপরি, হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন কোনওভাবেই রেমডেসিভির নেওয়া যাবে না। এই ওষুধ নেওয়ার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শে অবশ্যই কোনও হাসপাতালে নিতে হবে।