শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত! এই দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত মাত্র ১, শক্ত হাতে সংক্রমণের বিরুদ্ধে জারি লড়াই

০৮:২২ পিএম, মে ১০, ২০২১

অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত! এই দেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত মাত্র ১, শক্ত হাতে সংক্রমণের বিরুদ্ধে জারি লড়াই

গতবছর থেকেই করোনার দাপটে সারা বিশ্বের নাজেহাল দশা। প্রথম ঢেউয়ের পর চলতি বছরেই এসেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। যা আরও ভয়ানক! দ্রুত ছড়াচ্ছে সসংক্রমন। আক্রান্ত হচ্ছেন একের পর এক মানুষ। মারাও যাচ্ছে বহুজন। তবে এসবের মাঝেই করোনাকে টেক্কা দিয়েছে ছোট্ট এক দেশ। তা হল ভুটান। এখনও পর্যন্ত সে দেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা মাত্র ১!

উল্লেখ্য, বর্তমানে করোনায় বিপর্যস্ত ভারত। প্রতিবেশী দেশগুলিরও প্রায় একই হাল। তবে এই দেশগুলি থেকে যেন বহু ক্রোশ এগিয়ে রয়েছে করোনা-দস্যুর প্রতি ভুটানের লড়াই! বর্তমানে ভারতে যখন প্রতিনিয়ত আক্রান্তের সংখ্যা পেরিয়ে যাচ্ছে লক্ষের গণ্ডী, সেখানে ভুটানের দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ১১! হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। একের পিঠে এক, এগারো! ভুটানের দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছেন ওই সংখ্যক মানুষই।

আরও বেশি উল্লেখযোগ্য, মহামারীর সূচনার দিন থেকে এই প্রতিবেদন লেখা অবধি ভুটানে করোনার কবলে মারা গিয়েছেন মাত্র ১ জন। গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে মারা যান বছর চৌত্রিশের ওই যুবক। জানা গিয়েছে, গত জানুয়ারির ৭ তারিখে লিভার ও কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে থিম্ফুর এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। তবে করোনার গ্রাসে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুই হয় তাঁর৷ ব্যাস! ওই একজনই! এখনও পর্যন্ত ভুটানে করোনা আক্রান্ত হয়ে আর একটিও মৃত্যুসংবাদ শোনা যায়নি।

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে কী ভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলল ভুটানের মতো ছোট্ট একটি দেশ? যে দেশের পুরো অর্থনীতিই প্রায় পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল! সে দেশ কী ভাবে রুখে দাঁড়াল বিশ্বপ্লাবী করোনা শত্রুর বিরুদ্ধে? উত্তর একটাই, জনস্বাস্থ্যের ওপর কড়া নজর এবং জোর দেওয়া। ভুটানে চিকিৎসকদের মোট সংখ্যা ৩৩৭ জন। পাশাপাশি রয়েছেন ৩ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী। কিন্তু এই পরিমাণ লোকবল নিয়েই করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়েছে ছোট্ট দেশটি। সফল যে হয়েছে তার প্রমাণ তো আজ হাতে নাতে!

করোনার বিরুদ্ধে ভুটানের এই লড়াই শুরু গত বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি। সেই সময় থেকেই বিদেশ ফেরত প্লেনের যাত্রীদের কড়া নজরে রেখে পরীক্ষা করা শুরু হয়ে গিয়েছিল। একটু গড়বড় দেখলেই সোজা চিকিৎসা শুরু। এছাড়াও চালু হয় ১৪-২১ দিনের কোয়রান্টিনের নিয়ম। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা মানুষজনকেও চিহ্নিত করে পরীক্ষা শুরু হয়। তাঁদেরও পাঠানা হয় নিভৃতবাসেও। এর ফলে সংক্রমণের হার কমে আসে অনেকটাই। সেই সঙ্গে করোনা দমনের পরিকল্পনা নেওয়ার পাশাপাশিই শুরু হয়েছিল বিপুল হারে গণপরীক্ষা। কড়া হাতেই সামলানো হয়েছিল পরিস্থিতি।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন তাণ্ডব চালাচ্ছে দেশ জুড়ে, সেই এখনও তার মোকাবিলায় সদাপ্রস্তুত রয়েছে ভুটান। সে দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থাও কড়া নজরে রাখছে দেশের পরিস্থিতি। যার ফলাফলই আজ চোখের সামনে।