শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

মাধ্যমিকে তৃতীয়, সাংবাদিকতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা! জানুন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ণময় কর্মজীবনের কাহিনী

০৩:৩৪ পিএম, জুন ২, ২০২১

মাধ্যমিকে তৃতীয়, সাংবাদিকতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা! জানুন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ণময় কর্মজীবনের কাহিনী

বর্তমানে রাজ্যে চর্চার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন একজনই। তিনি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে যিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা পদে নিযুক্ত। তবে সম্প্রতি মুখ্যসচিব পদে থাকাকালীন তাঁর বদলি নিয়ে রাজ্য-কেন্দ্রের মধ্যে জোর টানাপোড়েন বাঁধে। যা এখনও সম্পূর্ণ থিতু হয়নি। তবে নিজের প্রাক্তন পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন আলাপনবাবু। এরপর তাঁকে নিজের মুখ্য উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ইতিমধ্যেই তিনি এখন চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে। আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবন নিয়েও জনগণের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। একজন আইএএস আধিকারিককে নিয়ে এত চর্চা যখন তাঁর জীবনের খুঁটিনাটি বিষয় জানতে উৎসাহ জাগাটাই তো স্বাভাবিক। এ কথা জানেন কি, আলাপনবাবুর কর্মজীবনের সূত্রপাত সাংবাদিকতার হাত ধরে? সেখান থেকে বহু বাধাবিপত্তি পেরিয়েই আজ তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা! আসুন আজ তবে জেনে নেওয়া যাক আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ণময় কর্মজীবনের জানা-অজানা কিছু কাহিনী!

ছেলেবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন আলাপন। যার প্রতিফলন ঘটেছিল পরীক্ষার ফলাফলেও৷ ১৯৭৬ সালে নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেন তিনি। সেই পরীক্ষায় রাজ্যে তৃতীয় স্থানও অধিকার করেন। এরপর ১৯৭৮ সালে রামকৃষ্ণ মিশন থেকেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ফার্স্ট ক্লাসে উত্তীর্ণ হন তিনি। জাতীয় অন্বেষণ বৃত্তিও লাভ করেন।

[caption id="attachment_16762" align="alignnone" width="1280"]মাধ্যমিকে তৃতীয়, সাংবাদিকতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা! জানুন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ণময় কর্মজীবনের কাহিনী মাধ্যমিকে তৃতীয়, সাংবাদিকতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা! জানুন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ণময় কর্মজীবনের কাহিনী[/caption]

১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে স্নাতক স্তর উত্তীর্ণ হন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরের বছরই সাংবাদিক হিসেবে হাতেখড়ি হয় তাঁর। তবে পেশা বেছে নিলেও পড়াশোনার হাত ছাড়েননি তিনি। সাংবাদিকতার পাশাপাশি চলতে থাকে পড়াশোনাও। স্নাতকের বছর দুয়েক পর ১৯৮৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তরও উত্তীর্ণ হন তিনি৷ এরপরই সিভিল সার্ভিসে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়।

বছর চারেকের কঠিন অধ্যবসায় ও একনিষ্ঠতার জেরে ১৯৮৭ সালে ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের কঠিন বাধা পেরিয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন আলাপনবাবু। তারপরই একজন আইএএস আধিকারিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার অভিযান শুরু। কর্মজীবনের শুরুতে হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পদে নিযুক্ত হন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। একসময় কলকাতা পুরসভার কমিশনারের দায়িত্বও সামলাতে হয়েছে। শোনা যায়, বাম আমলে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যেরও অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন তিনি। পরে ২০১৫ সালে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ দেন।

রাজ্যের পরিবহণ, ক্ষুদ্র, কুটির এবং মাঝারি শিল্প, তথ্য ও সংস্কৃতি, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব রূপেও দেখা গিয়েছিল আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০১৭ সালে রাজ্যের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব পদে নিযুক্ত হন তিনি। বছর দুয়েক পর পদোন্নতির জেরে ২০১৯ সালে স্বরাষ্ট্র সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন। তারপরই সরাসরি মুখ্যসচিব পদে বসেন আলাপনবাবু।

[caption id="attachment_16763" align="alignnone" width="1280"]মাধ্যমিকে তৃতীয়, সাংবাদিকতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা! জানুন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ণময় কর্মজীবনের কাহিনী মাধ্যমিকে তৃতীয়, সাংবাদিকতা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা! জানুন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বর্ণময় কর্মজীবনের কাহিনী[/caption]

২০২১ সালের ৩১ মে সেই পদ থেকে অবসর নেওয়ার কথা ছিল তাঁর। তবে আলাপনবাবু কর্মজীবনের আরও ৩ মাস বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্র সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়। তবে পরে ফের আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে তলব করা হয়। বদলির নির্দেশও দেওয়া হয়। এরপরই শুরু হয় রাজ্য-কেন্দ্রের টানাপোড়েন। এসবের মধ্যেই কেন্দ্রের বদলির নির্দেশ না মেনে ৩১ মের দিনই নিজের কর্মজীবন থেকে ইস্তফা দেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই ১ জুন নিজের মুখ্য উপদেষ্টা পদে তাঁকে নিয়োগ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।