শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

প্রশ্নপত্রে ফের রাজনীতি! ‘রাজনৈতিক ক্যাডার তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে’, বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ

০৯:০৮ এএম, আগস্ট ২৪, ২০২১

প্রশ্নপত্রে ফের রাজনীতি! ‘রাজনৈতিক ক্যাডার তৈরি করার চেষ্টা হচ্ছে’, বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের প্রশ্নপত্রে ফিরে এল রাজনীতি। তাই স্বাভাবিকভাবেই ইতিমধ্যেই বিতর্কও শুরু হয়ে গেছে। এবার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার ইকোপার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে প্রশ্নপ্রত্রে রাজনীতির এসে পড়া প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘আপনারা জানেন, কীভাবে রাজনৈতিক প্রশ্ন করা হয়েছে। সেই নিয়ে সমাজে আলোচনা হচ্ছে।’

আসলে রবিবারই ছিল ডব্লুবিসিএস পরীক্ষা। সেই প্রশ্নপত্র নিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এই পরীক্ষায় প্রশ্ন ছিল ‘কোন বিপ্লবী নেতা জেল থেকে মারসি পিটিশন বা ক্ষমা প্রার্থনা করেন?’ এই প্রশ্নের চারটি বিকল্প উত্তর হিসেবে দেওয়া ছিল, ‘ভি ডি সাভারকর’, ‘বি জি তিলক’, ‘শুকদেব থাপার’ এবং ‘চন্দ্রশেখর আজাদ’–এর নাম। এই বিষয়েই সমালোচনা করতে গিয়ে, দিলীপ ঘোষ বলেন যে, ‘পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি এক সময় লাল ছিল, এখন সবুজ হয়েছে। গেরুয়াকরণের গল্প যারা বলতেন, তাঁরা আজ রাজনৈতিক ক্যাডার তৈরি করার চেষ্টা করছে। স্কুল থেকে ডব্লুবিসিএস- তাঁরা যেন লয়াল হন পার্টির প্রতি। যে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তার জন্য সেখানে পার্টির প্রশ্ন করা হচ্ছে।’

শুধু বিজেপির রাজ্য সভাপতিই নন, এর আগে এই বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্য সম্পাদক সায়ন্তন বসু। তিনি এই প্রসঙ্গে বলেন যে, ‘সাভারকর কখনও মুচলেকা দেননি।’ রাজনৈতিক উদ্দেশে এই প্রশ্ন করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। অন্যদিকে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে তাপস রায় বলেন যে, ‘যাঁরা প্রশ্ন তৈরি করেছেন ও পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন তাঁরাই জবাব দিতে পারবেন।’

আবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী টুইটে অন্য একটি প্রশ্ন নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন। সেই প্রশ্নটি ছিল, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সবুজ সাথী প্রকল্পে কোন শ্রেণিতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীদের সাইকেল বিতরণ করা হয়।’ এই প্রশ্ন নিয়েই আপত্তি তুলেছেন তিনি। পাশাপাশি তিনি বলেন যে, ‘ইউপিএসসি পরীক্ষা প্রশ্ন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। আর এখন ডব্লুবিসিএস পরীক্ষা পশ্চিমবঙ্গ সরকারি স্কিমের বিজ্ঞাপন করছে।’

শুধু প্রশ্নপত্র নিয়ে আপত্তি জানানোই নয়, বা বিতর্কিত মন্তব্য করাই নয়, স্কুল খোলার প্রসঙ্গেও দিলীপ ঘোষ রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। স্কুল খোলার প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘স্কুল অনেক জায়গায় খুলে গিয়েছে। ট্রেন চালু হয়েছে। যদি ওঁ মনে করেন যে বিপদ আছে, তাহলে ভোট চাইছেন কেন? সেই কারণেই মনে হচ্ছে কেমন যেন পরস্পরবিরোধী কথা বলছেন। এটা উচিত নয়। যথেষ্ট চিন্তাভাবনা না করে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবারই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, ‘পুজোর পরই খুলবে স্কুল। তবে কোভিড পরিস্থিতি খারাপ না হলে।’ পাশাপাশি তিনি এও জানান যে, এই মুহূর্তে বাংলায় করোনা সংক্রমণ ১ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে, আজ ঠিক থাকলেও আগামিকাল কী হবে তা নিয়ে এভাবে আগে থেকে কিছু বলা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই সব ঠিকঠাক থাকলে ভাইফোঁটার পরই রাজ্যে স্কুল খোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। কোভিড পরিস্থিতি যদি ঠিক থাকে, তবে পুজোর ছুটির পরই একদিন ছাড়া একদিন স্কুলগুলি খোলা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে।

যদিও এ বিষয়ে একটা ধোঁয়াশা থেকেই গিয়েছে। কারণ, অক্টোবরেই থার্ড ওয়েভ আসবে বলে প্রধানমন্ত্রী দফতরে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে গঠিত বিশেষজ্ঞদের একটি কমিটি রিপোর্ট জমা পড়েছে। সেই কারণেই এই বিষয়ে ধোঁয়াশা এবং বিতর্কের অবকাশ থেকেই যাচ্ছে।