মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৪

পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে নিজেই ই-স্কুটি চালিয়ে নবান্ন থেকে বেরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

০৫:৫৯ পিএম, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১

পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে নিজেই ই-স্কুটি চালিয়ে নবান্ন থেকে বেরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বংনিউজ২৪x৭ডিজিটাল ডেস্কঃ এক কথায় অভিনব প্রতিবাদ। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ফের এবার পথে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই। পেট্রল, ডিজেল এবং রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে জেরবার দেশের আমজনতা। ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানির দাম। এর জেরে দেশের শাসকদলের প্রতি ক্ষোভে ফুঁসছে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে ভোটের মুখে কেন্দ্র সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে এবং পেট্রল, ডিজেল এবং রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ প্রদর্শনে অভিনব পথ গ্রহণ করল রাজ্যের শাসকদল। যার নেতৃত্ব দিলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার হাজরা থেকে ইলেকট্রিক স্কুটিতে চেপে রাজ্যের সচিবালয় নবান্নে যান তিনি। দলনেত্রীকে পিছনের আসনে বসিয়ে ই-স্কুটি চালান ফিরহাদ হাকিম। অন্যদিকে বাড়ি ফেরার পথে ফিরহাদ হাকিমের পরিবর্তে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই চালকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। মুখ্যমন্ত্রীর নিজের কথায় চ্যারিটি বিগান অ্যাট হোম। প্রতিবাদের শুরুটা নিজের ঘর থেকেই হল। নিজেই আজ তিনি পথে নেমেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। তাঁর কথায় দেশটাকে বেঁচে দিচ্ছে কেন্দ্রের সরকার। তিনি এও জানিয়েছেন যে, গতকাল থেকে আরও বড় আন্দোলনে নামবে তৃণমূল। সকাল ১১ টা নাগাদ হাজরা থেকে ইলেকট্রিক স্কুটারে নবান্নের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয় মুখ্যমন্ত্রীর। চালকের দায়িত্বে ছিলেন প্রথমে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। আর ফেরার সময় মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। চালকের ভূমিকায় খুব দক্ষ না হলেও, হাল ছাড়ার পাত্রী নন তিনি। তাঁর এই ভাবমূর্তিই তাঁর দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে বরাবর। এবারও তার অন্যথা হয়নি। পেট্রল এবং ডিজেলের ক্রমাগত দাম বাড়ার কারণেই এই প্রতিবাদ। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিও। অবশ্য এটাই প্রথমবার নয়। এর আগে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময়ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এভাবে দু’চাকার যানে সফর করতে দেখা গেছে। এদিকে আজই রাজ্যে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা, আজ তাঁর একাধিক কর্মসূচি ছিল। সেই পরিস্থিতিতে ভোটের আবহে মমতার এই কর্মসূচি প্রচারের আলো অনেকটাই তাঁর দিকে ঘুরিয়ে দেবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজনীতির লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে টেক্কা দেওয়া মোটেও সহজ কাজ নয়। একেবারে রাজপথ থেকে গলি, জনতার কণ্ঠস্বরকে দেশের শাসকের কান পর্যন্ত তুলে দিতে তাঁর ক্ষমতা অপরিসীম। কাজেই ভোটের আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যদি এই জ্বালানি এবং রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিকে হাতিয়ার করে, প্রতিবাদে পথে নামেন, তাহলে কেন্দ্রের মোদী সরকারের উপর যে চাপ বাড়বে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। অন্যদিকে বিরোধীরা একযোগে বলেছেন যে, সবই প্রচারের আলোয় আসার একটা প্রয়াস মাত্র। সবই নাটক। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর এই ই-স্কুটি চালিয়ে বাড়ি ফেরার ঘটনায় রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এর জেরে প্রায় মিনিট কুড়ি অফিস যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। যদিও পরে ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।