শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

পিছোল নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি! পরবর্তী শুনানি কবে?

০১:০২ পিএম, জুন ১৮, ২০২১

পিছোল নন্দীগ্রাম মামলার শুনানি! পরবর্তী শুনানি কবে?

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ পিছিয়ে গেল একুশের বিধানসভা ভোটের নন্দীগ্রামের ফলাফল সংক্রান্ত মামলার শুনানি। ফের এই মামলার শুনানি রয়েছে আগামী বৃহস্পতিবার অর্থাৎ চলতি মাসের ২৪ তারিখ। এমনটাই জানা গিয়েছে।

বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামের ফলাফলে কারচুপি করে জিতেছেন শুভেন্দু অধিকারী, এমনটাই অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস, নন্দীগ্রামের ফলাফল প্রকাশের পর। এই একই অভিযোগে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উল্লেখ্য, আজই কলকাতা হাইকোর্টে কৌশিক চন্দের সিঙ্গল বেঞ্চে এই মামলা ওঠে।

তবে, বিভিন্ন পক্ষকে এই মামলায় যুক্ত করার জন্যই আজকের মতো শুনানি মুলতবি করা হয় আদালতের পক্ষ থেকে। এদিন এই মামলা সম্পর্কে বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, ‘ইলেকশন পিটিশনের শুনানির সময় থাকতে হয় মামলাকারীকে’। আর এক্ষেত্রে মামলাকারী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই শুনানি চলাকালীন তাঁকে আদালতে উপস্থিত থাকতে হত।

তবে, এদিন আদালতে মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত না থাকায়, বিচারপতি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জবাব চান। যার উত্তরে মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী গোপাল মুখোপাধ্যায় জানান যে, যা নিয়ম রয়েছে, তা পালন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবীর এই উত্তরের পরেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি আগামী শুনানিতে থাকবেন মামলাকারী খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা ভোটে হাই-ভোল্টেজ কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল থেকে প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগেও এই কেন্দ্রে ছিল উত্তেজনা আর ভোটের পরেও সরগরম ছিল ফলাফলকে কেন্দ্র করে। জল শেষ পর্যন্ত গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। নন্দীগ্রামের ফলাফল প্রকাশের পরই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, কারচুপি হয়েছে। তিনি আদালতে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। সম্প্রতি নন্দীগ্রামের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করে, হাইকোর্টে মামলা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করেছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল প্রার্থী৷

১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮০, ৮০এ, ৮১, ১০০ এবং ১২৩ ধারায় মামলা করা হয়েছে৷ আদালতের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে, শুভেন্দু অধিকারী ঘুষ দিয়েছেন। প্রভাব খাটিয়েছেন। জনগণের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়িয়েছেন। ধর্মের ভিত্তিতে ভোট চেয়েছেন। সরকারি আধিকারিকদের সাহায্য নিয়েছেন এবং বুথ দখল করেছেন।

উল্লেখ্য, রিটার্নিং অফিসারের ভূমিকা নিয়েও মামলায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ২ মে গণনার সময় একাধিক গরমিল ও কারচুপি হয়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের কর্মীরা পুনর্গণনার দাবি জানান। কিন্তু, কোনও কারণ ছাড়াই সেই আর্জি খারিজ করে দেন রিটার্নিং অফিসার। ২১ সি ফর্মে সই করে শুভেন্দু অধিকারীকে জয়ী ঘোষণা করে দেন। এছাড়াও আবেদনপত্রে অভিযোগ করা হয়েছে, কত ভোট মিলেছে এবং গণনা সংক্রান্ত যে ১৭ সি ফর্ম তাতেও বিস্তর কারচুপি ও গরমিল হয়েছে। অভিযোগ করা হয়, সংবিধান এবং আইন সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করে ভোট হয়েছে নন্দীগ্রামে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১০০ ধারা অনুযায়ী, নন্দীগ্রাম কেন্দ্রের ভোটকে বাতিল ঘোষণা করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। ভোটের ফল নিয়ে অভিযোগ থাকলে ৪৫ দিনের মধ্যে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করতে হয়৷ রাজ্যে ভোটের ফল প্রকাশ হয় ২ মে৷ সেই মতো ৪৫ দিনের মধ্যেই হাইকোর্টে ইলেকশন পিটিশন দাখিল করা হয়েছে৷

নন্দীগ্রামের ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে একাধিক অভিযোগে সরব হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের ফল প্রকাশের পরই তিনি বলেছিলেন, ‘নন্দীগ্রামে কী রকম ভোটগ্রহণ হচ্ছে দেখেছে সবাই। ফলের দিন ৪০ মিনিট লোডশেডিং করে রেখেছিল, সার্ভার ডাউন করে রেখেছিল, ইভিএম পাল্টে দিয়েছে, সবজায়গায় এক ফল, আর নন্দীগ্রামে আলাদা ফল কী করে। দে ক্যাননট স্টপ মি...। ওই ইভিএম যেন আলাদা করে রাখা হয়, বিকৃত না করা হয়, ইভিএমের ফরেনসিক টেস্ট হোক। দুই পর্যবেক্ষক নিরপেক্ষ ছিলেন না। হোয়াট ইজ দিস...!’

নন্দীগ্রামের ফল নিয়ে আদালতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরই তিনি হাইকোর্টে মামলা। এদিকে, নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী সূত্রে দাবি করা হয়েছে, এ বিষয়ে তাঁরা কিছু জানেন না৷ ইলেকশন পিটিশন সংক্রান্ত নথি তাঁদের দেওয়া হয়নি৷