শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

'বাংলায় নির্বাচনে পাল্লা ভারি বিজেপির': প্রশান্ত কিশোর! ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে

১২:১৭ পিএম, এপ্রিল ১০, ২০২১

'বাংলায় নির্বাচনে পাল্লা ভারি বিজেপির': প্রশান্ত কিশোর! ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফার ভোট। আজ রাজ্যের মোট ৫ টি জেলার ৪৪ টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ। যার মধ্যে রয়েছে, হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মতো দক্ষিণবঙ্গের জেলা আবার একইসঙ্গে রয়েছে উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে চতুর্থ দফার ভোটগ্রহণ।

আর রাজ্যের চতুর্থ দফার ভোটের সকালেই ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের একটি চাঞ্চল্যকর অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে আনল বিজেপি। যেখানে প্রশান্ত কিশোরকে বলতে শোনা গিয়েছে, বাংলায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতোই সমান জনপ্রিয়। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে হাওয়া বিজেপির দিকেই বলেও উল্লেখ করতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। এর পাশাপাশি ধর্মীয় মেরুকরণ, তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, মতুয়া ভোট, তফসিলি ভোট-সহ একাধিক ফ্যাক্টর কাজ করছে বিজেপির পক্ষে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি বংনিউজ২৪x7 ডিজিটাল।

ভাইরাল ওই অডিও ক্লিপে পিকে যা বলেছেন, তার মূল কথা হল যে, এবার বাংলায় বিজেপির পক্ষেই পাল্লা ভারি। যদিও পিকে তাঁর আগের বক্তব্যেই অনড় থেকেছেন। বিজেপির জন্য আগের মতোই আসন সংখ্যা ১০০ তেই বেঁধে দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অমিত মালব্যর প্রকাশ করা অডিও ক্লিপে সাংবাদিক 'বন্ধু'দের সঙ্গে 'ক্লাব হাউস রুম' আলাপচারিতায় তৃণমূলের কৌশলীকে বলতে শোনা গিয়েছে,'গত ২০ বছর ধরে চলছে সংখ্যালঘু তোষণ। এই দেখুন না বাংলাতেই। রাজনীতির একটাই অভিমুখ, মুসলিমরা যাকে ভোট দেবে সরকার তার। এটাই বাম, কংগ্রেস বা দিদির রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুসলিম ভোট পেতে সকলেই রাজনীতি করেছে। এই প্রথমবার হিন্দুদের মনে হচ্ছে, আমাদের ভোটেরও গুরুত্ব রয়েছে। সমাজব্যবস্থায় গলদ রয়েছে বলব না, তবে এটা একটা ইস্যু অবশ্যই। এটাই ব্যবহার করছে বিজেপি। সংখ্যালঘু রাজনীতির অপব্যবহার করেছে এই পার্টিগুলি। তা অস্বীকার করা যায় না।'

https://twitter.com/amitmalviya/status/1380698730278567939

প্রশান্ত কিশোরকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, 'মেরুকরণ, মোদি, হিন্দিভাষী ভোটাররা বাংলার ভোটে ফ্যাক্টর। মোদি এখানে জনপ্রিয়। মতুয়ারা বেশিরভাগ বিজেপিকে ভোট দেবেন। ৭৫ শতাংশ মতুয়া ভোট দেবে বিজেপিকে। বাকি ২৫ শতাংশ ভোট দেবে তৃণমূলকে। তফসিলি ভোটের একটা বড় অংশও পাবে গেরুয়া শিবির। এমনও নয় যে তৃণমূলস্তরে বিজেপির কর্মী নেই। বাম কর্মীরাও বিজেপির হয়ে ভোট করছেন। একটা-দুটো জেলা বাদ দিলে এমন কোনও জায়গা নেই, যেখানে বিজেপির শক্তিশালী সংগঠন নেই। বাংলায় সমীক্ষা করলে মনে হবে, বিজেপিই সরকার গড়বে। কারণ বিজেপি সমর্থকদের পাশাপাশি সিপিএমকে যে ১০-১৫ শতাংশ মানুষ ভোট দেবে, তাঁরাও মনে করছে বিজেপি সরকার গড়বে।'

এরপর সাংবাদিককে বলতে শোনা যায় যে, তাহলে বাংলায় তৃণমূলকে কারা ভোট দেবে? এই প্রশ্নের উত্তরে পিকে জানিয়েছেন যে, 'আমি বলেছি হিন্দুদের মধ্যে ৫০-৫৫ শতাংশ ভোটার বিজেপিকে ভোট দেবে…'। এখানেই বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর প্রকাশ করা অডিও ক্লিপটি শেষ হয়ে যায়। এরপর প্রশান্ত কিশোর কী বলতে চেয়েছেন বা বলেছেন তা শোনা যায়নি।

এছাড়াও বিজেপির প্রকাশ করা অডিও ক্লিপে প্রশান্ত কিশোরকে স্বীকার করতে শোনা গিয়েছে যে, 'হিন্দুরা বিজেপিকে নিজেদের দল মনে করছে।' আরও বলতে শোনা গিয়েছে যে, ‘মোদির বিরুদ্ধে বাংলায় কোনও প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা নেই। বাংলায় মোদি জনপ্রিয়। প্রতিষ্ঠান বিরোধিতা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই আছে। এটা অনেক বড় ব্যাপার। মোদি এখানে জনপ্রিয় বলেই ওঁর সভায় ভিড় হচ্ছে। এই জনপ্রিয়তার আরও একটা কারণ, বাংলা এখনও বিজেপিকে আগে দেখেনি। মানুষের মনে হচ্ছে বিজেপি এমন কিছু করবে, যা আমরা কখনও পাইনি। তাই বহু মানুষ মোদিকে সুযোগ দিতে চাইছে।'

https://twitter.com/amitmalviya/status/1380699086253404161

উল্লেখ্য, বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এই অডিও ক্লিপ প্রকাশ্যে আনার কিছু সময়ের মধ্যেই এর জবাব দিয়েছেন খোদ প্রশান্ত কিশোর। এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই অডিও ক্লিপ প্রসঙ্গে বলেন যে, 'বিজেপি যে আমার ক্লাবহাউজ চ্যাটকে তাদের নেতাদের কথার থেকেও বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে এই কারণে আমি খুশি। তবে তাদের পুরো চ্যাটটা সামনে আনা উচিত।' এর পাশাপাশি তিনি তাঁর পুরনো বক্তব্যেই অনড় থেকেছেন। বিজেপির জন্য আগের মতোই আসন সংখ্যা ১০০ তেই বেঁধে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, 'আগের মন্তব্যেই স্থির থাকছি। বিজেপি কোনও ভাবেই ১০০ পেরোবে না।'

https://twitter.com/ANI/status/1380727851461177345

প্রশান্ত কিশোরের এই অডিও ক্লিপকে ঘিরে এখন রাজনৈতিক তরজা চরমে উঠেছে। বিজেপি নেতারা নেমে পড়েছেন তাঁকে আক্রমণের পথে। বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলছেন, 'প্রশান্ত কিশোর জানেন সোনার বাংলা হবে, তবু তিনি তৃণমূলের সহযোগী।' বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবার যুক্তি, প্রশান্ত কিশোরের স্ট্র্যাটেজি এই বাংলায় খাটবে না। নরেন্দ্র মোদির স্ট্র্যাটেজিই জনতার রায় আদায় করবে।