শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

প্রশংসনীয়! করোনা সঙ্কটে হাজার হাজার অসহায়দের মুখে বিনামূল্যে খাবার তুলে দিচ্ছেন এই মা-ছেলের জুটি

০৮:২৯ পিএম, মে ৮, ২০২১

প্রশংসনীয়! করোনা সঙ্কটে হাজার হাজার অসহায়দের মুখে বিনামূল্যে খাবার তুলে দিচ্ছেন এই মা-ছেলের জুটি

দেশে দিনের দিন বাড়ছে করোনার দাপট। চড়ছে সংক্রমণের গ্রাফ! পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশ জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় জারি রয়েছে আংশিক বা সম্পূর্ণ লকডাউন। আর তার ফলে সমস্যায় পড়ছেন খেটে খাওয়া দরিদ্র মানুষগুলি। করোনা সঙ্কটের মধ্যে এহেন পরিস্থিতিতে মুখে দু-মুঠো ভাত জোগানোই যেন দায় হয়ে উঠেছে তাদের। এই অবস্থায় দেশের দরিদ্র, অসহায় মানুষগুলির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন দেশের বেশ কিছু নিঃস্বার্থ মানুষ। বিনামূল্যে অভাবী মানুষগুলির সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করেছেন।

ঠিক সেরকমই এক মা-ছেলের জুটি হর্ষ মান্দাভিয়া এবং তাঁর মা হিনা মান্দাভিয়া। করোনা কালীন সঙ্কটে যারা অসহায় মানুষগুলির মুখে বিনামূল্যে তুলে দিচ্ছেন খাবার। এখন অবধি মোট ২২ হাজার খাবারের থালিও বিতরণ করে ফেলেছেন এই জুটি। তবু থেমে থাকেননি। অভাবী মানুষগুলির পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্যে সদা প্রস্তুত হর্ষ এবং তাঁর মা হেনা।

সম্প্রতি 'হিউম্যানস অফ বম্বে' নামক একটি পেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে মা-ছেলের জুটির এই কাহিনী। সেখান থেকেই জানা গিয়েছে, মুম্বইয়ের 'হর্ষ থালি অ্যান্ড পারাঠা' দোকানে মালিক এই জুটি। খুব অল্প বয়সেই বাবাকে হারান হর্ষ। নানা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও তাঁর মা তাঁকে সেরা শিক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সেই কারণে বাড়িতেই একটি টিফিন পরিষেবা শুরু করেন মা হেনা। সেসময় মা রান্না করতেন আর সেগুলি সরবরাহ করতেন হর্ষ। এভাবেই শুরু হয়েছিল তাঁদের ব্যবসা।

এরপর ২০০৩ সালে এক গ্রাহকের সহায়তায় দোকান ভাড়া নিয়ে রান্নার ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকেন মা-ছেলের জুটি। তা থেকেই ধীরে ধীরে আজকের 'হর্ষ থালি অ্যান্ড পারাঠা' গড়ে উঠেছে। স্নাতকের পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর হর্ষ অনলাইনের মাধ্যমেও ব্যবসার প্রসার ঘটাতে শুরু করেন। বাড়তে থাকে লাভের পরিমাণও।

[embed]https://www.facebook.com/humansofbombay/posts/1682941705248133[/embed]

গত বছরের শুরুতেই লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পর দোকানে এক গ্রাহকের পরামর্শে ১০০ জন অভাবী মানুষকে বিনামূল্যে খাবার খাওয়ানোর ভার নিয়েছিলেন হর্ষ এবং তাঁর মা। তারপর থেকেই প্রায় প্রতিদিন অসহায় গরীব মানুষদের মুখে বিনামূল্যে খাবার তুলে আসছেন তাঁরা। রোজ প্রায় ১০০/১৫০ মানুষকে খাওয়ানোর দায়িত্ব থাকে তাঁদের কাঁধে। বিনামূল্যেই সেই কাজ করে যান তাঁরা।

এই কাজে তাঁরা পাশে পেয়েছেন স্থানীয় মানুষদেরও। তাঁদের অনুদানেই এখনও পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষের মুখে খাবার জোগান দিতে পেরেছেন হর্ষ ও তাঁর মা। নিজেদের স্বার্থ বা লাভের কথা না ভেবেই অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন মা-ছেলে। বর্তমানের করোনাকালীন মুহূর্তে তো বটেই! ভবিষ্যতেও এভাবেই মানুষের মুখে দু-মুঠো খাবার তুলে দিতে সদাপ্রস্তুত তাঁরা। এই কঠিন সময়ে দাঁড়িয়ে মা-ছেলের এই জুটি যেন মানবিকতার এক প্রকৃত উদাহরণ! তাঁরা ফের মনে করাচ্ছেন মানবিকতাই আসল ধর্ম!