শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

কলকাতা হাইকোর্টমুখী বাংলা! সুব্রত, ফিরহাদ, মদন, শোভনের জামিনের শুনানি আজ

০৯:৩১ এএম, মে ১৯, ২০২১

কলকাতা হাইকোর্টমুখী বাংলা! সুব্রত, ফিরহাদ, মদন, শোভনের জামিনের শুনানি আজ

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজ কলকাতা হাইকোর্টে সুব্রত, ফিরহাদ, মদন, শোভন- বাংলার এই চার প্রভাবশালী নেতার জামিনের শুনানি। স্বভাবতই সেদিকেই তাকিয়ে বাংলার মানুষ। নারদাকাণ্ডে রাজ্যের দুই প্রাক্তন মন্ত্রী, বিধায়ক এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়রকে গ্রেফতার করা হয়েছে সোমবারই। আর তাঁরা হলেন, হিফহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়।

আজ এই চার প্রভাবশালীর কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আর্জির পুনর্বিবেচনার শুনানি রয়েছে। উল্লেখ্য, সোমবার নিম্ন আদালতে এঁদের প্রত্যেকের জামিন মঞ্জুর হলেও, সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্ট পরে এঁদের জামিনে স্থগিতাদেশ দেয় এবং বুধবার পর্যন্ত তাঁদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর রাতেই তাঁদের প্রেসিডেন্সি জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়ের শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে, তাঁদের এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। এদিকে ফিরহাদ এবং সুব্রত মুখোপাধ্যায়ও বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

মঙ্গলবার সকাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই চার নেতাকে জেল থেকে বের করে আনার তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। এই চার নেতার জামিনের পুনর্বিবেচনার আর্জি নিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ হয়েছিলেন দুই আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি এবং সিদ্ধার্থ লুথরা। কিন্তু তাতেও আখেরে কোনও লাভই হয়নি।

মঙ্গলবার এই চার নেতার জামিনের পুনর্বিবেচনার আর্জি গ্রহণ করা হলেও, সেই আবেদনের শুনানি হল না। এর পরিবর্তে কলকাতা হাইকোর্টের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে, বুধবার সিবিআই-এর আবেদনের সঙ্গে এই আবেদনেরও শুনানি হবে। আজ সেই আবেদনেরই শুনানি রয়েছে। আজই স্থির হবে, এই চার নেতা জামিন পাচ্ছেন না কি পাচ্ছেন না। এই চার নেতার জামিনের পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিন আইনজীবী। প্রথমে মৌখিক আবেদন জানান আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই আবেদন গৃহীত হয়। তবে, এর সঙ্গে লিখিত আকারে আর্জি জানাতে বলে আদালত। সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেও, জানানো হয় যে, শুনানি মঙ্গলবার হচ্ছে না।

মঙ্গলবার অভিযুক্তদের তরফের আইনজীবীর দাবি ছিল, সোমবার সন্ধেয় হাইকোর্টের শুনানিতে তাঁদের কোনও প্রতিনিধি হাজির ছিলেন না। ফলে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাননি তাঁরা। তাই অভিযুক্তদের মন্তব্য শুনে, রায় পুনর্বিবেচনা করুক আদালত। বুধবার, অর্থাৎ আজ সেই আবেদনের শুনানি হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার এই চার নেতার গ্রেফতারি ঘিরে দিনভর নাটক চলে। সোমবার সকাল সকাল এই চার নেতাকে তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে আনা হয় নিজাম প্যালেসে। প্রথমে তাঁদের গ্রেফতারির কথা সিবিআই-এর তরফে স্বীকার করা না হলেও, পরে নিজাম প্যালেসে এনে, সেখানেই অ্যারেস্ট মেমোতে এই চারজনকে সই করানো হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারি প্রসঙ্গে ফিরহাদ বলেন, 'আদালতে বিচার পাব'। শোভনের দাবি, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। মদন মিত্র কটাক্ষ করেন, 'আমরা খারাপ, মুকুল-শুভেন্দু ভাল'।

এদিকে, ফিরহাদ, সুব্রত, মদন সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলা। তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকরা এলাকায় এলাকায় বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ ওঠে, কখনও কখনও সেই বিক্ষোভ হিংস্র আকার নিয়েছে। সোমবার কলকাতায় সিবিআইয়ের অফিস বাইরে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। সেখানে ইঁটপাটকেল ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ছোঁড়া হয়েছে জলের বোতলও। এই ঘটনা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কলকাতার পাশাপাশি জেলায় জেলায় বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মীরা। রাজভবনের সামনেও তৃণমূল কর্মীরা বিক্ষোভ দেখান।

এর প্রতিবাদে সরাসরি নিজাম প্যালেসে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে গ্রেফতারির চ্যালেঞ্জ জানান। প্রায় ৬ কয়েক ঘণ্টা পর তিনি নিজাম প্যালেস ছাড়েন। এরপর সন্ধের সময় সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে এই চারজনের জামিন মঞ্জুর হয়। যাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় সিবিআই। পরে নিম্ন আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।