বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখনও পর্যন্ত শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খুবই কম। দু-একটা উদাহরণ প্রকাশ্যে আসছে। তবে, সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল এক সদ্যোজাত।
তবে, মারণ করোনাকে সে মাত্র ১০ দিনের লড়াইয়ে পরাস্ত করেছে। জন্মের মাত্র ১৫ দিনের মাথায় ওই শিশুর শরীরে থাবা বসিয়েছিল মারণ করোনা। এরপর তাকে ভর্তি করা হয়েছিল ওড়িশার জগন্নাথ হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিল ওই শিশু। তখন থেকে চিকিৎসকদের নিরলস প্রচেষ্টায় মাত্র ১০ দিনেই সে করোনাকে হারিয়ে যুদ্ধজয় করল।
প্রীতি আগরওয়াল ও অঙ্কিত আগরওয়ালের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়েছিল ছত্তিশগড়ের রায়পুরে। জন্মের কিছুদিন যেতে না যেতেই, জ্বরে আক্রান্ত হয় প্রীতি এবং অঙ্কিতের একরত্তি কন্যাসন্তান। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় জগন্নাথ হাসপাতালে। সেখানকার শিশুরোগ চিকিৎসক অরিজিৎ মহাপাত্র ওই সদ্যোজাতের চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন। তিনি জানিয়েছেন যে, যখন শিশুটিকে তাঁর কাছে নিয়ে আসা হয়, তখন তার শরীর পুড়ে যাচ্ছে জ্বরে। কিচ্ছু খাওয়ানো যাচ্ছে না। শরীরে রীতিমতো খিঁচুনি হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রবল শ্বাসকষ্টও ছিল। প্রাথমিক কিছু চিকিৎসার পর, তাকে চিকিৎসকরা ভেন্টিলেটরে রাখতে বাধ্য হন।
এরপর ওই শিশুর চিকিৎসায় করোনার চিকিৎসায় ব্যবহৃত রেমডেসিভির ও অন্যান্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে, তার আগে শিশুটির বাবা-মায়ের অনুমতি নেওয়া হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, যেহেতু এখনও পর্যন্ত অত ছোট শিশুর চিকিৎসায় সেগুলির ব্যবহারের কোনও গবেষণাভিত্তিক প্রমাণ ছিল না, তাই কিছুটা সংশয় ছিলই। চিকিৎসক অরিজিৎ মহাপাত্র জানিয়েছেন যে, ‘বিষয়টা ছিল সদ্যোজাত ওই শিশুর জীবন-মরণের। কিন্তু ওষুধ প্রয়োগের পর থেকেই সে দারুণ সাড়া দিয়েছে। এই কেস আমার জীবনের এক বিশেষ অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে।’
স্বস্তির এবং আনন্দের হাসি ফুটেছে শিশুকন্যার অভিভাবকদের মুখেও। জন্মের পরেই ওইটুকু মেয়ের করোনা পজিটিভ হওয়ার খবরে, সাংঘাতিক আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু এবার স্বস্তি, দুশ্চিন্তার অবসান। তাঁদের মেয়ে যে অল্পদিনের লড়াইয়ে প্রবল শক্তিধর মারণ করোনাকে হারিয়ে দিয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনা দ্বিতীয় ঢেউয়ে শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের কেস তেমন না থাকলেও, করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদেরও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা প্রবল। এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন।