শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

সম্পূর্ণ লকডাউন নয়, পরিবর্তে এই সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!

০৪:৫৯ পিএম, মে ১০, ২০২১

সম্পূর্ণ লকডাউন নয়, পরিবর্তে এই সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যেও বাড়ছে সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকার করোনা সংক্রমণের মোকাবিলায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। রাজ্যে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে আংশিক লকডাউন। বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন। অন্যান্য পরিবহন চলছে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে। দিনে মাত্র ৫ ঘণ্টা খোলা রাখা হচ্ছে দোকান-বাজার।

বন্ধ রাখা হয়েছে রেস্তোরাঁ, শপিং মল, বিউটি পার্লার, জিম, সিনেমা হল। রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বারবার মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলা হচ্ছে। এই অবস্থায় অনেকেই মনে করছিলেন, কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হবে। তবে, আজ সেই আশঙ্কা দূর করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এবার রাজ্যে করোনা সংক্রমণ রোধে নতুন সিদ্ধান্ত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্পূর্ণ লকডাউন না করে, পরিবর্তে কড়া বিধি পালনের উপর জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, লকডাউন হলে, দিন আনা দিন খাওয়া, গরীব মানুষ সমস্যায় পড়বেন। পাশাপাশি তিনি এও বলেন যে, করোনা মোকাবিলাই তাঁর প্রথম অগ্রাধিকার।

এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আগেরবার যেমন ঝড় সামলেছি, এবারও সামলাবো। সম্পূর্ণ লকডাউন করার পক্ষপাতী নই। বহু গরিব মানুষের সমস্যা হবে। ওদের তো দিন চালাতে হবে। বরং ভালভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। মনে রাখবেন, মাস্ক পরতে হবে, ভাল করে স্যানিটাইজ করতে হবে, হাত বারবার ধোবেন। লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়ায় ঝুঁকি অনেকটা কমেছে। লকডাউনের মতো করেই চলুন সবাই।’

এদিন তিনি আরও জানিয়েছেন যে, কোভিড হাসপাতালের জন্য একটা বিল্ডিং দিচ্ছে সেন্ট জেভিয়ার্স। পাশাপাশি করোনা-যুদ্ধে সাধারণ মানুষের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, ভ্যাকসিন নিয়ে ফের একবার কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে এদিন তিনি বলে যে, ‘দেশের ৬৫ শতাংশ ভ্যাকসিন বাইরে গেলে, অন্য দেশ থেকে আনাতে হবে। কোথা থেকে ভ্যাকসিন আনানো হবে, কেন্দ্র ঠিক করুক। এর জন্য সুস্পষ্ট নীতির দরকার। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে ১ কোটি ভ্যাকসিন দেব। রাজ্যের সবাইকে নিখরচায় ভ্যাকসিন দেব।’

অন্যদিকে, প্রতিশ্রুতি মতো কাজ হচ্ছে কিনা, তা দেখার জন্য কমিটি গঠন করার কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন তিনি বলেন, বহিরাগতদের আরটিপিসিআর করাতে হবে। রিপোর্ট পজিটিভ হলে, ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। গরিব ছাড়া বাকিদের নিজেদের খরচে থাকতে হবে।

উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে স্বস্তির খবর হল, কোভ্যাকসিনের পর আজ রাজ্যে আসছে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন। জানা গিয়েছে, এর মধ্যে সাড়ে ৩ লক্ষ কোভিশিল্ড সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে সরাসরি কিনেছে রাজ্য সরকার। বাকি ৪ লক্ষ কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন কেন্দ্র পাঠাচ্ছে রাজ্যে।

আজই এয়ার এশিয়ার বিমানে করে কলকাতায় আসবে এই ভ্যাকসিন। এদিকে, গতকালই এসেছে রাজ্যের কেনা ১ লক্ষ কোভ্যাকসিন। কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পর এই ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়া হয় বাগবাজারের সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার ৩ লক্ষ ৬৬ হাজার কোভ্যাকসিন এবং ১৪ লক্ষের বেশি কোভিশিল্ডের বরাত দেয়।

এর আগে, ৫ মে রাজ্যে কোভ্যাকসিন, কোভিশিল্ড মিলিয়ে ৫ লক্ষ করোনা ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। এর মধ্যে ছিল ১ লক্ষ কোভ্যাকসিন ও ৪ লক্ষ কোভিশিল্ড রয়েছে। আবার গত মাসেই রাজ্যে আসে ৪ লক্ষ কোভিশিল্ডের ডোজ।

ভ্যাকসিন এলেও রাজ্যে ভ্যকাসিন সঙ্কট এখনও কাটেনি। কলকাতা থেকে শুরু করে প্রতিটি জেলায় ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে মানুষকে চূড়ান্ত হয়রান হতে হচ্ছে। এদিকে, এদিনও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কেন্দ্রের কাছে যত ভ্যাকসিন চাওয়া হয়েছে, সেই তুলনায় এসেছে অনেক কম।