শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

সাত দশক ধরে বিনামূল্যে শিক্ষাদান! পদ্মশ্রী পেয়ে রাষ্ট্রপতিকে আশীর্বাদ ১০২ বছরের নন্দ স্যারের

০৮:০১ পিএম, নভেম্বর ১০, ২০২১

সাত দশক ধরে বিনামূল্যে শিক্ষাদান! পদ্মশ্রী পেয়ে রাষ্ট্রপতিকে আশীর্বাদ ১০২ বছরের নন্দ স্যারের
[contact-form][contact-field label="Name" type="name" required="true" /][contact-field label="Email" type="email" required="true" /][contact-field label="Website" type="url" /][contact-field label="Message" type="textarea" /][/contact-form]

বয়স কবেই একশো পার! পুঁথিগত বিদ্যাও তেমন নেই। পড়াশোনা মাত্র সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত৷ তবে সেই জ্ঞানটুকুই সম্বল করেই প্রায় ৭০ বছর ধরে গ্রামের শিশুদের বিনামূল্যে শিক্ষা দান করছেন ওড়িশার 'নন্দ' স্যার। প্রকৃত নাম নন্দ কিশোর প্রুস্তি। দীর্ঘ সাত দশক ধরে একক চেষ্টায় গ্রামের তিন প্রজন্মকে শিক্ষিত করার দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি। শিক্ষার বিকাশে তাঁর এই অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ চলতি বছরে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন তিনি।

সোমবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের হাত থেকে পদ্মশ্রী পেয়েই রাষ্ট্রপতিকে হাত তুলে আশীর্বাদ জানালেন নন্দ স্যার। রাষ্ট্রপতি ভবনে ট্যুইটারে এই সম্মান নেওয়ার বিষয়টি উল্লেখও করা হয়৷ রাষ্ট্রপতিও সেই ছবি শেয়ার করেন। ওড়িশার ঐতিহ্যশালী ‘চটশালি’ বা টোল শিক্ষাদান প্রথার সম্ভবত একমাত্র জীবিত প্রতিনিধি নন্দ প্রুস্তি। আর্থিক দুরবস্তার কারণে নিজের শিক্ষাদান সম্পূর্ণ করতে পারেননি ওড়িশার যাজপুর জেলার কান্টিরা গ্রামের বাসিন্দা এই বৃদ্ধ। তবে তাতে কি! নিজের সপ্তম শ্রেণীর জ্ঞান নিয়েই গ্রামের শিশুদের লেখাপড়ার সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে উদ্যোগী হন তিনি। গত সাত দশক ধরে তা-ই করে চলেছেন শতার্ধ্ব এই বৃদ্ধ। কোনও টাকা-পয়সা ছাড়াই, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে নিজের বাড়িতেই বানিয়ে ফেলেছিলেন আস্ত একটা স্কুল। সেখানেই দুঃস্থ, সম্বলহীন শিশুদের পড়াশোনা শেখানোর দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। এভাবেই দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে দীর্ঘ সত্তরটা বছর। এখনও প্রতিদিন ভোররাত থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায় দফায় কচিকাঁচারা আসে তাঁর স্কুলে। সন্ধ্যার দিকে মাঝেমধ্যে আসেন গ্রামের বয়স্ক মানুষরা। কাজকর্মের ফাঁকে তাঁরাও খানিক জ্ঞান আরোহন করেই ফেরেন। নন্দ প্রুস্তির এই স্কুলই অবশেষে তাঁকে এনে দিয়েছে পদ্মশ্রীর সম্মান।

https://twitter.com/rashtrapatibhvn/status/1458078312815738884

যদিও শতায়ু পেরোনো এই বৃদ্ধ শিক্ষক কোনওদিন স্বপ্নেও ভাবেননি এই সম্মান তিনি পাবেন। তিনি নিজের কাজটুকুই করে যেতে আগ্রহী। শিশুদের শিক্ষাদানেই তাঁর আনন্দ। তাঁর কথায়, "যত দিন শরীর ভরসা দেবে, আমি শিশুদের পড়িয়ে যাব। আমি শুধু চাই শিশুগুলি বড় হয়ে ভালো মানুষ তৈরি হোক।" বর্তমানে কান্টিরা গ্রামের আশেপাশে বহু স্কুল ও কলেজ গড়ে উঠলেও, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ায় হাতেখড়ির দেওয়াতে এখনও গ্রামের মানুষের ভরসা নন্দ স্যারের পাঠশালা। আর বৃদ্ধ নন্দ স্যারও তাদের শিক্ষাদানে সমান আগ্রহী। বয়সের সেঞ্চুরি পার করা এই বৃদ্ধ শিক্ষক যে সারা দেশের কাছেই এক অন্যতম অনুপ্রেরণা, সে কথা বলাই বাহুল্য।