শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

'পরিযায়ী শ্রমিকরা কেউ শহর ছাড়বেন না, সবাই মিলে করোনাকে পরাস্ত করতেই হবে', বললেন নরেন্দ্র মোদী

১০:২৪ পিএম, এপ্রিল ২০, ২০২১

'পরিযায়ী শ্রমিকরা কেউ শহর ছাড়বেন না, সবাই মিলে করোনাকে পরাস্ত করতেই হবে', বললেন নরেন্দ্র মোদী

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশজুড়ে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, মহারাষ্ট্রে হাসপাতালে বেডের আকাল দেখা দিয়েছে, অস্কিজেনের জন্য হাহাকার চারিদিকে। মহারাষ্ট্র ক্রমশ লকডাউনের পথে। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রের পথ অনুসরণ করছে গুজরাত, বিহার ঝাড়খণ্ডও।

সময় যতো এগোচ্ছে, ততোই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে দেশে করোনা পরিস্থিতি। এই অবস্থায় ফের পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে ঘরে ফেরার জন্য ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। স্টেশনে ও বাস টার্মিনাসে লক্ষ করা যাচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড়। এর জেরে ফের বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা, বাড়ছে উদ্বেগ। এই আবহে, আবারও একবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে নাজেহাল সমগ্র দেশ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন, গড়ে ১০ হাজার মানুষ। আর মৃত্যু হচ্ছে অন্তত ৬০ জনের। দৈনিক সংক্রমণ ছাড়িয়েছে আড়াই লক্ষেরও বেশি।

এদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, 'তুফানের মতো করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। আপনারা পীড়া সহ্য করছেন, তা আমি জানি। যাঁরা আপনজনদের হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। এই চ্যালেঞ্জ খুব বড়। কিন্তু আমাদের সবাইকে মিলে এই বিপদের মোকাবিলা করতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে লড়ছে গোটা দেশ। এ লড়াই লম্বা। কিন্তু আমাদের পার করতে হবেই। আমি দেশের সব ডাক্তার, মেডিক্যাল ও প্যরা মেডিক্যাল স্টাফ, অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশকর্মী, সফাইকর্মী, সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনারা নিজের পরিবার ও সুখের চিন্তা ছেড়ে, অন্যদের জীবন বাঁচাতে দিনরাত কষ্ট করেছেন।'

https://www.youtube.com/watch?v=EUXBQqeIuAg

বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অক্সিজেনের হাহাকার প্রসঙ্গে এদিন দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘এবার করোনার সংক্রমণে দেশের অনেক জায়গায় অক্সিজেনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অক্সিজেনের সঙ্কট মেটাতে সংবেদনশীলতার সঙ্গে কাজ চলছে। কেন্দ্র, রাজ্য, বেসরকারি সংস্থা-সবাই একসঙ্গে কাজ করছে। রাজ্যে নতুন অক্সিজেন প্ল্যান্ট, ১ লক্ষ সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে। জানুয়ারির তুলনায় দেশে ওষুধের উৎপাদন বাড়ানোর কাজও চলছে।'

অন্যদিকে, করোনা টিকা প্রসঙ্গে এদিন মোদী তাঁর ভাষণে বলেন যে, 'বিশ্বের সবচেয়ে সস্তা ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে ভারত। আমাদের কাছে টিকা রয়েছে। এই চেষ্টায় বেসরকারি সংস্থাগুলির যথেষ্ট অবদান রয়েছে। ওষুধ সংস্থাগুলি খুব ভাল কাজ করছে। প্রবীণরা ভ্যাকসিন পাচ্ছেন, এটা লড়াইয়ে বড় শক্তি। ১ মে থেকে ১৮ বছরের উপরে বয়স হলেই করোনা টিকা মিলবে। আগের মতোই সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে টিকা পাওয়া যাবে। দু’টি মেড ইন ইন্ডিয়া ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকাদান অভিযান শুরু করেছে ভারত।' এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন যে, 'হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে, কেন্দ্র-রাজ্যের উদ্যোগে শ্রমিকরাও ভ্যাকসিন পাবেন।'

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ভাষণে ফের একবার করোনা আতঙ্কে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরমুখো হওয়া প্রসঙ্গে বলেন যে, 'এই বিষয়ে রাজ্যগুলির উচিত এই পরিযায়ী শ্রমিকদের আশ্বস্ত করা যে, তাঁরা যেখানে আছেন, সেখানেই যেন আপাতত থাকেন। রাজ্য সরকারকেও পরিযায়ী শ্রমিকদের পাশে থাকতে বলব। পরিযায়ী শ্রমিকরা কেউ শহর ছাড়বেন না। সবাই মিলে করোনাকে পরাস্ত করতেই হবে।'

তিন বলেন, 'আমি দেশের মানুষের কাছে অনুরোধ করছি যে, তাঁরা যেন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। এই মুহূর্তে লকডাউন বলবৎ করার কোনও প্রশ্ন নেই। এই মুহূর্তে দেশকে লকডাউনের থেকে বাঁচাতে হবে। লকডাউন ঠেকাতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। করোনা মোকাবিলায় লকডাউন সর্বশেষ অস্ত্র। ছোট বন্ধুদের কাছে আমার আবেদন, তাঁরা যেন এমন পরিস্থিতি বাড়িতে তৈরি করেন, যাতে অপ্রয়োজনে বাড়ির বড়রাও বাইরে বেরোতে না পারেন।'

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। অতিমারী মোকাবিলায় স্থানীয় প্রশাসনকে মদত দিতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।