শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

অসম-মিজোরাম সীমানা দ্বন্দ্বে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব রাহুল-অভিষেক

০৩:০০ পিএম, জুলাই ২৭, ২০২১

অসম-মিজোরাম সীমানা দ্বন্দ্বে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব রাহুল-অভিষেক

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ অসম-মিজোরামের এই সীমান্ত নিয়ে সমস্যা আজ নতুন কোনও ঘটনা নয়। এর আগেও হাতাহাতিতে জড়িয়ে সাধারণ মানুষের প্রাণ পর্যন্ত গিয়েছে। এহেন পরিস্থিতি আবারও প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

এবার সীমানাকে কেন্দ্র করে অসম এবং মিজোরামের মধ্যে সংঘাত চরমে উঠেছে। ইতিমধ্যেই এই সংঘাতের কারণে অসম পুলিশের ৬ জন পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে সরব হলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। আবার এই একই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রকে নিশানা করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

অসম-মিজোরামের সংঘর্ষে ৬ জন পুলিশ কর্মীর নিহত হওয়ার ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি টুইট করে নিহতদের প্রতি সমবেদনা জানানোর পাশাপাশি বিজেপিকেও আক্রমণ করেছেন। তিনি এই ঘটনা প্রসঙ্গে বলেছেন যে, ভারতে এই ধরনের ঘটনা একেবারেই কাম্য নয়। সোমবার রাতে এই ঘটনার পরই মঙ্গলবার সকালে টুইট করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

টুইটে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হয়ে অভিষেক লেখেন যে- ‘অসম-মিজোরাম সীমানায় সংঘর্ষের ঘটনায় সকলেই হতবাক। মৃতদের পরিবারকে আমাদের সমবেদনা। বিজেপির শাসনে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে।’

https://twitter.com/abhishekaitc/status/1419868552912273409

এই ঘটনা নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। তিনি এই ঘটনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের ভূমিকাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তিনি টুইট করে লেখেন যে, ‘মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই, আহতরা দ্রুত সেরে উঠুন, এই প্রার্থনা করি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ব্যর্থ। ঘৃণা এবং অবিশ্বাস ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভারত এখন ভয়াবহ ফল ভোগ করছে।’

https://twitter.com/RahulGandhi/status/1419851381226229766

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সীমানা নিয়ে জুন মাস থেকেই অসম-মিজোরামের মধ্যে বিবাদ চলছে। বিতর্কিত এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করেছিল দুই রাজ্যই। এহেন পরিস্থিতিতে সোমবার আবারও হিংসা ছড়ায় সীমান্তে। জানা গিয়েছে, অসমের কাছাড় জেলায় মিজোরাম সীমান্তে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। গতকাল অর্থাৎ সোমবারই তা ভয়াবহ আকার নেয়। অসম পুলিশের উপর মিজোরামের দিক থেকে গুলি চালানো হয়। এর জেরেই ৬ জন পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। এই সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কাছাড় জেলার পুলিশ সুপার নিম্বলকর বৈভব চন্দ্রকান্ত।

তবে, সোমবারের এই ঘটনা প্রসঙ্গে মিজোরামের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেন যে, তাঁদের সীমানায় অন্তত ২০০ জনের অসম পুলিশের একটি বাহিনী ঢুকে পড়ে। তারাই আগে গুলি চালায়। তখনই পালটা জবাব দেয় মিজোরামের পুলিশ।

এদিকে, গত শনিবারই শিলংয়ে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারপরেই দুই পড়শি রাজ্যের মধ্যে এই সংঘাতে আরও উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে দেশের উত্তর-পূ্র্বাঞ্চলে। অসমের বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে যে, সীমানার অপর দিক থেকে অসমে ঢুকে হামলা চালায় মিজোরামের দুষ্কৃতীরা। গ্রামের জমি দখল করে ফেলে। এরপর বাধা দিতে গেলেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এই একই অভিযোগ জানিয়েছে মিজোরামও। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন এই ঘটনায়।

অসম-মিজোরাম সংঘর্ষে আহত জওয়ানদের এদিন হাসপাতালে দেখতে যান অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সংঘাতের ভিডিয়ো টুইটারে পোস্ট করেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, ‘অমিত শাহজি, দয়া করে বিষয়টি খতিয়ে দেখুন। এটা এখনই বন্ধ হওয়া দরকার।’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকেও ওই টুইটে ট্যাগ করেন তিনি।

উল্টোদিকে, হিমন্ত টুইটারে জোরামথাঙ্গা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখেন, ‘মিজোরাম পুলিশ সুপার আমাদের পোস্ট থেকে সরে যেতে বলছেন। না সরলে, অশান্তি থামবে না বলা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে সরকার চালানো যায়!’