শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে খুলছে স্কুল, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের অবশ্যই মানতে হবে এই সব সরকারি বিধি, রইল বিস্তারিত

০৯:১৮ এএম, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২১

১২ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে খুলছে স্কুল, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদের অবশ্যই মানতে হবে এই সব সরকারি বিধি, রইল বিস্তারিত
বংনিউজ২৪x৭ ডেস্কঃ দীর্ঘ ১০ মাস ধরে রাজ্যের সমস্ত স্কুল করোনা সংক্রমণের জেরে বন্ধ থাকার পর, অবশেষে খুলতে চলেছে। চলতি মাসের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে রাজ্যজুড়ে চালু হবে সব স্কুল। তবে সব শ্রেণীর জন্য নয়। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলের ক্লাস হবে। এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত ২৮ পাতার গাইডলাইন জারি করেছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। এই গাইডলাইনে স্কুলগুলিকে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, শিক্ষকদের কী দায়িত্ব থাকবে, প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্বই বা কী হবে, জেলা স্কুল বিদ্যালয় পরিদর্শকদের কী দায়িত্ব থাকবে, প্রশাসনের ভূমিকা কী হবে ইত্যাদি বিষয়ে বিশদে বলা হয়েছে। তাছাড়া করোনা সংক্রমণ এড়াতে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবক সকলের জন্যই রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু সরকারি বিধি। যে বিধিগুলি আবিশ্যকভাবে মানতে হবে, সেগুলি হল, গাইডলাইনে বলা হয়েছে যে, স্কুলের নোটিশ বোর্ডে উল্লেখ করতে হবে যে, ছাত্র-শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী সকলের জন্যই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের জানাতে হবে, ছাত্র বা ছাত্রীদের জ্বর এবং অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা যদি থাকে, তাহলে কমপক্ষে ৭ দিন তাদের বাড়িতে বিশ্রামে থাকতে হবে। গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রত্যেকটি স্কুলে একটি নির্দিষ্ট আইসোলেশন রুমের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রত্যেকদিন স্যানিটাইজেশন করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব যাতে বজায় থাকে, তা বিশেষভাবে দেখতে হবে। কোনও ভিজিটর, অভিভাবককে স্কুলের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। স্কুলে ঢোকার সময় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে হাত পরিষ্কার করতে হবে। একসঙ্গে জড়ো হয়ে প্রার্থনা করা যাবে না। তবে, ক্লাসরুমে প্রার্থনা করা যেতে পারে। অন্য কোনও ছাত্র বা ছাত্রীর ব্যবহার করা বই, ব্যাগ, টিফিন যাতে অন্য কোনও ছাত্র বা ছাত্রী ব্যবহার না করে, সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। স্কুলে কোনও রকম খাবার, জল দেওয়া-নেওয়া একেবারেই নিষিদ্ধ বলা হয়েছে এই সরকারি নির্দেশিকায়। স্কুলের শৌচাগার থেকে শুরু করে সব জায়গাগুলিকে স্যানিটাইজ করতে হবে। স্কুলে যখন ছাত্রছাত্রীরা ঢুকবে তখন তাপমাত্রা পরীক্ষা করা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি শিক্ষকদের স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝাতে হবে যে, সামাজিক দূরত্ববিধি এবং হাত পরিষ্কার রাখা অতি গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে স্কুলে কোনও খেলাধুলা বা কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান করা যাবে না। সরকারি গাইডলাইনে বলা হয়েছে যে, প্রত্যেক স্কুল কর্তৃপক্ষকে ছাত্র-ছাত্রীদের তাপমাত্রার রেকর্ড রাখতে হবে। এও বলা হয়েছে যে, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক স্কুলগুলি এই সরকারি গাইডলাইন মানছেন কিনা, সে দিকে নজর রাখবেন। কোনও সমস্যা মনে করলেই, সঙ্গে সঙ্গে তা জেলাশাসককে জানাতে হবে। অন্যদিকে প্রধান শিক্ষকদের দায়িত্ব প্রসঙ্গে কিছু অবশ্য পালনীয় দায়িত্বের কথাও বলা হয়েছে এই সরকারি নির্দেশিকায়। বলা হয়েছে প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকার নির্দিষ্ট দায়িত্ব থাকবে। প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকা ব্যক্তিগতভাবে সব ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন, যেদিন প্রথম স্কুল খুলবে এবং তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে কথা বলবেন। যাতে তাদের মধ্যে থেকে মারণ করোনাভাইরাস সংক্রান্ত যাবতীয় ভয় দূর হয়। স্কুল শিক্ষা দপ্তরের গাইডলাইনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কী দায়িত্ব থাকবে, সেই বিষয়েও নির্দিষ্ট করে বলা হয়েছে। ক্লাস চলাকালীন ক্যাম্পাস থেকে যাতে না বেরিয়ে যায় ছাত্র-ছাত্রীরা, তার দিকে নজর রাখতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীরা অনলাইনে ক্লাস করতে না পারেনি, তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ যত্ন নিতে হবে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত ক্লাস নিতে হবে সেইসব ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। গাইডলাইনে বলা হয়েছে যে, প্রয়োজন ছাড়া শিক্ষকরা যেন ছুটি না নেন। তার অন্যতম কারণ হল, এতদিন বাদে স্কুল খোলা হচ্ছে, তাই এই মুহূর্তে ছুটি না নেওয়াই শ্রেয়, খুব প্রয়োজন ছাড়া। তাই এই বিষয়টি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিবেচনার মধ্যে রাখতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি গাইডলাইনে অভিভাবকদের কী ভূমিকা থাকবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের কী ভূমিকা থাকবে সেই বিষয়েও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। স্কুল খোলার আগে কী কী ব্যবস্থা নিতে হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে প্রধান শিক্ষক এবং জেলা স্কুল বিদ্যালয় পরিদর্শকদের জন্য। এর পাশাপাশি একইভাবে সেই অবশ্য পালনীয় কাজের তালিকা দেওয়া হয়েছে শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও। প্রত্যেকদিন তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে সকলকে তেমনটা বলা হয়েছে স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে জারি করা অবশ্য পালনীয় বিধিতে।