শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

করোনার তৃতীয় ডোজেরও পরিকল্পনায় সেরাম ইন্সটিটিউট! এই প্রসঙ্গে কী বলছেন সংস্থার চেয়ারম্যান?

১০:০২ এএম, আগস্ট ১৪, ২০২১

করোনার তৃতীয় ডোজেরও পরিকল্পনায় সেরাম ইন্সটিটিউট! এই প্রসঙ্গে কী বলছেন সংস্থার চেয়ারম্যান?

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এখন অনেকটাই স্তিমিত, তবু করোনা গ্রাফে ওঠানামা অব্যাহত। এরই মধ্যে আবার করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে দেশে জোরকদমে চলছে গণটিকাকরণের কাজ। এদিকে আমারিকাতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বুস্টার ভ্যাকসিনের। ব্রিটেনেও চলছে এর জোরকদমে প্রস্তুতি। করোনার একাধিক নতুন ভ্যারিয়েন্টের মোকাবিলায় এবং তা রুখতে, পাশাপাশি কম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাযুক্ত ব্যক্তিদের অতিরিক্ত সুরক্ষা দিতেই, একাধিক দেশে বুস্টার ভ্যাকসিনের প্রয়োগ শুরু হয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে যে, তাহলে ভারতীয়দেরও কি এই ভ্যাকসিনের প্রয়োজন? এই প্রশ্নেরই উত্তর দিলেন সেরাম ইন্সটিটিউট অব ইন্ডিয়া-র চেয়ারম্যান সাইরাস পুনাওয়ালা।

শুক্রবারই তিনি লোকমান্য তিলক পুরস্কার পান। এরপরই তিনি সাংবাদিক বৈঠকে জানান যে, কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের মধ্যে দুই মাসের ব্যবধান রাখা উচিত। যদি তৃতীয় ডোজ নিতে হয়, তবে তা দ্বিতীয় ডোজের ছয় মাসের পড়ে নেওয়া উচিত। সম্প্রতি ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল যে, কোভিশিল্ড নেওয়ার পরে দেহে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়, তা কয়েক মাস পর থেকে কমতে থাকে। এই প্রসঙ্গে সাইরাস পুনাওয়ালাকে জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি বলেন যে, ‘এটা সত্যি যে, অ্যান্টিবডি কমে যায়, তবে দেহে মেমরি সেল থেকেই যায়।’

বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বোঝাতে গিয়ে তিনি বলেন যে, ‘ছয় মাস পর থেকে ধীরে ধীরে অ্যান্টিবডি কমতে থাকে, সেই কারণেই আমি ছয় মাস বাদে তৃতীয় ডোজ় নিয়েছি। সেরাম ইন্সটিটিউটের প্রায় সাত থেকে আট হাজার কর্মচারীকেও তৃতীয় ডোজ় দেওয়া হয়েছে। যাদের দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে, তাঁদের কাছে আমার অনুরোধ ছয় মাস বাদে আপনারাও তৃতীয় ডোজ নিন।’

অন্যদিকে, ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ়ের মধ্যে কতদিনের ব্যবধান রাখা উচিত, এই প্রশ্নের উত্তরে সাইরাস বলেন যে, ‘দুটি ডোজ়ের মধ্যে আদর্শ ব্যবধান হল দুই মাস। যেহেতু টিকার জোগানে ঘাটতি রয়েছে, তাই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দুটি ডোজ়ের মধ্যে তিন মাসের ব্যবধান রাথা হয়েছে। তবে দুই মাসের ব্যবধানই আদর্শ সময়।’

লকডাউন প্রসঙ্গেও তিনি ভিন্ন মত পোষণ করেছেন। লকডাউন প্রসঙ্গে তাঁর মত, করোনা মোকাবিলায় সঠিক ও কার্যকর পদ্ধতি ছিল না লকডাউন। তিনি বলেন, ‘যদি লকডাউন না হত, তবে প্রথম থেকেই সকলে এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসত এবং ধীরে ধীরে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়ে যেত। হার্ড ইমিউনিটির সপক্ষে বলছি কারণ, করোনা সংক্রমণের কারণে মৃত্যু হার যথেষ্ট কম। যদি মৃত্যুহার বেশি হয়, সেক্ষেত্রে তখন লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা থাকে।’

দেশের কোটি কোটি মানুষের করোনা সংক্রামিত হওয়া এবং লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসাবে মানুষের অসচেতনতা ও অবহেলাকেই দায়ী করেছেন সাইরাস পুনাওয়ালা। তিনি জানান, দেশে করোনায় অধিকাংশ মৃত্যুই হয়েছে সংক্রমণকে অবহেলা করা, এই রোগকে হালকাভাবে নেওয়া এবং চিকিৎসকের কাছে দেরীতে যাওয়ার কারণে। যদি সংক্রমণের শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা শুরু করা হয়, তবে মৃত্যু এড়ানো সম্ভব।