শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

রেজিস্টারে কারচুপি করেই হত টিকা চুরি! সোনারপুরে বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প-কাণ্ডে নয়া মোড়

০৩:০৫ পিএম, জুলাই ২৫, ২০২১

রেজিস্টারে কারচুপি করেই হত টিকা চুরি! সোনারপুরে বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প-কাণ্ডে নয়া মোড়

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ ভুয়ো আইএএস দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের রেশ কাটার আগেই এবার ভ্যাকসিন দুর্নীতির অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগণার সোনারপুরে। অভিযোগ, সরকারি ভ্যাকসিন চুরি করে তা বাইরে বিক্রি করে দেওয়া হত। এই ঘটনায় শুক্রবারই গ্রেফতার করা হয় খোদ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্টকে। এবার সোনারপুর বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প কাণ্ডে নয়া মোড়। সামনে এসেছে নতুন তথ্য। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে যে, হিসেব ঠিক রাখার জন্য রেজিস্টারে কারচুপি করে টিকা চুরি করতেন স্বাস্থ্য দফতরের ধৃত কর্মী।

বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প কাণ্ডে জেলা প্রশাসনের তদন্ত থেকে উঠে আসা তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে যে, ডায়মন্ড হারবারে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে বলে খাতায়-কলমে দেখালেও, তা দেওয়া হতো সোনারপুরে। এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে, ধৃত স্বাস্থ্যকর্মী জেরায় ভ্যাকসিন বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করলেও, তদন্তে জানা গিয়েছে যে, ৩০০-৫০০ টাকায় বিক্রি করা হতো ভ্যাকসিন। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনকে এভাবে বেআইনি পথে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে।

অন্যদিকে, কীভাবে ডায়মন্ড হারবারের স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে টিকা চুরি হল, তা জানতে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। এখানেই শেষ নয়, স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করার পাশাপাশি ডায়মন্ড হারবারে যাচ্ছে তদন্তকারীদের একটি দল।

উল্লেখ্য, সোনারপুর বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প কাণ্ডে ধৃত মিঠুন মণ্ডল ডায়মন্ড হারবারের পঞ্চগ্রাম প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট। একইসঙ্গে, তিনি মশাট প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভ্যাকসিন কোঅর্ডিনেটর হিসেবেও কাজ করতেন। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে যে, নষ্ট হওয়া বা ভায়াল ভেঙে যাওয়ার কথা মাথায় রেখে, প্রতিটি কেন্দ্রেই কিছু অতিরিক্ত ভ্যাকসিন পাঠানো হয়। অভিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী সেগুলিই চুরি করে বিক্রি করতেন। পরে, তা কোউইন অ্যাপে আপডেট করে দিতেন। খবর পাওয়ার পর, শুক্রবার সোনারপুরের রূপনগরে বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্পে হানা দেয় পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার হয় কোভিশিল্ডের দুটি ভায়াল। অভিযুক্ত নিজেই ভ্যাকসিন দিত বলে জানা গিয়েছে।

সূত্রের আরও খবর, অভিযুক্তকে জেরায় পুলিশ জানতে পেরেছে, টাকার বিনিময়ে ৩০ থেকে ৪০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। সোনারপুরের যে বাড়িতে ক্যাম্প হয়েছিল, ভ্যাকসিন নিয়েছেন সেই বাড়ির মালিকও। সোনারপুরের বেআইনি ভ্যাকসিন ক্যাম্প-কাণ্ডের প্রসঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ৪ সদস্যের একটি তদন্তকারী দল তৈরি করা হয়েছে। এর সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি ভ্যাকসিনগুলি আসল না নকল, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।