শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

‘দলবদলকে অনেকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন’, মুকুলকে ফের কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের

০৪:০২ পিএম, জুন ১২, ২০২১

‘দলবদলকে অনেকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন’, মুকুলকে ফের কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সদ্য পদ্মফুল ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে মুকুল রায়ের। শুক্রবার এতদিনের দলবদলের সব জল্পনা সত্যি প্রমাণিত করে তৃণমূল ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্য তৃণমূলের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন মুকুল রায় এবং শুভ্রাংশু রায়। তাঁদের দুজনকে উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

প্রায় ৪ বছর পর ঘরে ফিরলেন সপুত্র মুকুল রায়। পুরনো দলে, চেনা পরিবেশ, চেনা সঙ্গীদের সঙ্গে ফের নয়া উদ্যমে রাজনৈতিক ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার লক্ষ্যে তৃণমূলে ফিরলেন মুকুল রায়। এদিকে মুকুল রায়ের মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিকের এভাবে দলবদল নিয়ে ক্রমাগত কটাক্ষ করে চলেছেন বিজেপির নেতারা।

মুকুল রায়ের দলবদলের পর, বিজেপির নেতারা নানা কথা বলেছেন। সৌমিত্র খাঁ বলেছেন, ‘মুকুল রায় কোনও চাণক্য নন, উনি মীরজাফর। এটা আজ প্রমাণিত হয়ে গেল।’ পাশাপাশি গতকালই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন যে, ‘মুকুল রায় আসায় দলের কোনও লাভ হয়নি যে ক্ষতি হবে৷’ এদিন ফের একবার মুকুল রায়কে দলবদল নিয়ে আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

মুকুল রায়ের তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন নিয়ে এদিন তিনি সাফ জানালেন, মুকুল রায় দল ছারায় বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না। রাজ্য বিজেপির সভাপতি কটাক্ষ করে বলেন, ‘অনেকে দলবদলকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন। ধান্দাবাজি করতে এবং ক্ষমতার স্বাদ নিতে তাঁরা দলবদল করেন।’

শনিবার দিলীপ ঘোষ বিজেপির প্রাক্তন নেতা মুকুল রায়কে বিঁধে বলেন যে, ‘মুকুল রায়কে বড় নেতা মনে করে সম্মান দিয়েছিল বিজেপি। বিজেপির টিকিতেই প্রথমবার বিধায়ক হন তিনি। তবে, শুধুমাত্র ক্ষমতার অলিন্দে থাকার জন্য এবং নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্যই তিনি দলবদল করেছেন।’ এখানেই শেষ নয়, মুকুল রায়কে ‘চাণক্য’ বলাকেও কটাক্ষ করেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘যে চাণক্য তৃণমূল ছাড়ার পর তৃণমূল ২১৩ আসন পায়, আর বিজেপি ৭৭ আসন পায়, তাহলে চাণক্যর কী উপযোগিতা সেটা বোঝাই যাচ্ছে।’

এদিকে মুকুল রায়ের বিজেপি ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিজেপির অন্দরে বেসুরোদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদিন তাঁদের উদ্দেশ্যেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি বার্তা দেন। তিনি স্পষ্ট বলেন যে, ‘ঝড়ের সময় অনেকেই চলে যায়, যাবে আর যারা থাকবে, তাঁদেরকে বুকে করে রাখবো।’

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শুক্রবার বিজেপি ছাড়ার পর, মুকুল রায় জানান, ‘বিজেপি থেকে বেরিয়ে খুব ভাল লাগছে। নতুন আঙিনায় এসেছি, পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। আর এটা ভেবে ভাল লাগছে, বাংলা আবার তার নিজের জায়গায় ফিরবে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দেবেন মমতা।’

এর পাশাপাশি তাঁকে দল ছাড়ার কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে, তিনি সাংবাদিকদের তাঁর সংক্ষিপ্ত উত্তরে বলেন, ‘বিজেপি দলটা করতে পারলাম না, করব না বলেই পুরনো ঘরে ফিরে এলাম। তবে, কেন আজকে ফিরেছি, এর একটা বিস্তারিত জবাব আছে। সেটা লিখিত আকারে আপনাদের দেব।’

অন্যদিকে, মুকুলের ফেরায় দল আরও শক্তিশালী হবে কিনা, সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল সুপ্রিমো জানান যে, ‘দল ইতিমধ্যেই শক্তিশালী। ভোটে বিপুল জয় পেয়েছি। সাধারণ মানুষ সঙ্গে আছেন। মুকুল পুরনো পরিবারের ছেলে। ওকে চমকে-ধমকে এজেন্সি দেখিয়ে মুকুলের উপরে কম অত্যাচার হয়নি। মুকুল নিজেও মানসিক শান্তি পেল। শরীরটা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। মুখে বলতে পারত না। বিজেপি করা যায় না। বিজেপিতে যাঁরা আছে তাঁদের শোষণ এত বেশি। এত নির্দয়! মানুষকে মনুষ্যত্ব নিয়ে বাঁচতে দেয় না। মুকুলের চলে আসা এটাই প্রমাণ।’