শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

কোভিশিল্ড-কোভ্যাক্সিনের মিশ্রণের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সবুজ সংকেত কেন্দ্রের!

১০:৫১ এএম, আগস্ট ১১, ২০২১

কোভিশিল্ড-কোভ্যাক্সিনের মিশ্রণের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সবুজ সংকেত কেন্দ্রের!

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ করোনা মোকাবিলায় এবার কেন্দ্রের নয়া উদ্যোগ। করোনা ঠেকাতে এবার মিশ্র টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখতে সবুজ সংকেত দিল কেন্দ্র।

দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে, টিকাকরণে ব্যবহৃত কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিনের ককটেল পরীক্ষায় সায় দিয়েছে সংস্থা ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া বা ডিসিজিআই। জানা গিয়েছে, ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজে স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে এই ককটেল পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করা হবে। দেখা হবে যে, এই মিশ্র টিকার প্রয়োগ আদৌ করোনাকে ঠেকাতে সক্ষম কিনা।

উল্লেখ্য, সম্প্রতিই আইসিএমআর ও পুণের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজির তরফে একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, এককভাবে ভ্যাকসিনের দুটি ডোজের থেকে কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিনের মিশ্রণই অধিক কার্যকরী। এবার সেই গবেষণায় সবুজ সংকেত দিল ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া। এদিকে, ডিসিজিআইয়ের অনুমোদন পাওয়ায়, বিস্তারিত গবেষণা এবং ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হবে ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজে। তবে, এক্ষেত্রে আইসিএমআরের গবেষণার তুলনায় একটু ভিন্নভাবে এই গবেষণা করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনার মোকাবিলায় টিকাকরণের শুরুতেই কেন্দ্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, করোনা টিকার প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজ যেন একই সংস্থার হয়। অর্থাৎ প্রথম ডোজ কোভিশিল্ড-এর হলে, দ্বিতীয় ডোজ কোভ্যাক্সিন দেওয়া যাবে না। আবার কোভ্যাক্সিন প্রথম ডোজে দেওয়া হলে, দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রেও কোভ্যাক্সিনই দিতে হবে। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে স্বাস্থ্য কর্মীদের ভুলে বহু গ্রামবাসীদের টিকাকরণের ক্ষেত্রে ভুল হয়। তাঁদের মিশ্র টিকা দেওয়া হয়। যদিও এক্ষেত্রে কারও কোনও ক্ষতি হয়নি।

এই ঘটনার পরই কেন্দ্রের তরফে দুটি টিকার মিশ্রণের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মোট ১৮ জন স্বেচ্ছাসেবকের উপর এই গবেষণা করে আইসিএমআর। পরে অবশ্য দুই অংশগ্রহণকারী এই গবেষণার অংশ হতে অস্বীকার করেন। তাঁরা পরবর্তীতে সরে দাঁড়ান। জানা গিয়েছে, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও ৭ জন মহিলা ছিলেন। গবেষণায় দেখা যায়, অ্যাডিনোভাইরাসের উপর ভিত্তি করে তৈরি দুই ভ্যাকসিনের মিশ্রণ সুরক্ষিত এবং অধিক কার্যকর। কোভিশিল্ড বা কোভ্যাক্সিনের মতোই এই ভ্যাকসিন মিশ্রণেও সামান্য কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

এই গবেষণা প্রসঙ্গে গবেষক ডঃ পণ্ডা জানান, দুটি ভ্যাকসিনের মিশ্রণ সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। যদি কেউ প্রথম ডোজ কোভিশিল্ডের নেন এবং দ্বিতীয় ডোজ কোভ্যাক্সিনের, তবে অধিক সুরক্ষা ও কার্যকারিতা মিলবে করোনা মোকাবিলায়। তবে মাত্র ১৮ জনের উপর এই গবেষণা করায় এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন বলে জানান গবেষকরা। এ বার সেই গবেষণাই শুরু হবে কেন্দ্রের অনুমোদন মেলায়।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, করোনার ডেল্টা রূপের প্রকোপে বাইরের দেশগুলিতে ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। ভারতেও বহু বেশ কয়েক জনের শরীরে ডেল্টার নমুনা পাওয়া গিয়েছে। তাতে করোনার তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সেই পরিস্থিতিতে গত ২৯ জুলাই মানবদেহে পরীক্ষামূলকভাবে কোভিশিল্ড এবং কোভিশিল্ড ককটেল প্রয়োগে সায় দেয় ডিজিসিআই।