শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

দেশব্যাপী ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে একটি ‘জাতীয় পরিকল্পনা’ নেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

০৪:০৬ পিএম, এপ্রিল ২২, ২০২১

দেশব্যাপী ভয়ঙ্কর করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে একটি ‘জাতীয় পরিকল্পনা’ নেওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ দেশজুড়ে আছড়ে পড়েছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। আর সেই ঢেউয়ে সব কিছু ওলটপালট হওয়ার জোগাড়। মানুষ অসহায়, চারিদিকে শুধুই হাহাকার। ক্রমশ ভেঙে পড়ছে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। দেশব্যাপী দেখা দিয়েছে অক্সিজেনের আকাল। অক্সিজেনের অভাবে রোগী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটতে দেখা যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে যে, গত বছর করোনার বাড়বাড়ন্তের সময় দীর্ঘ সময় ধরে লকডাউন করা হলেও, তারপর থেকে পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন আগাম প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি? কেনই বা দেশব্যাপী এমন বেড, ওষুধ এবং অক্সিজেনের আকাল দেখা দিয়েছে? আর তাই এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রকে অক্সিজেন সরবরাহ ও ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য একটি 'জাতীয় পরিকল্পনা' নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শুধু তাই নয়, এদিন দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিকে 'জাতীয় জরুরি অবস্থা' বলেও মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে।

উল্লেখ্য, দেশের বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় প্রধান বিচারপতি কেন্দ্রের উদ্দেশে নোটিশ জারি করে বলেন, 'দেশের এখনকার অবস্থা জাতীয় জরুরি অবস্থার সমান। এমন এক সময়ে আমরা গোটা বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনতে একটি জাতীয় পরিকল্পনা দেখতে চাই। দেশে সবপ্রান্তে অক্সিজেন সরবরাহ, অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের সরবরাহ, দেশজুড়ে টিকাকরণের পদ্ধতি ও পরিকল্পনা-মূলত এই চারটি বিষয় নিয়ে জাতীয় পরিকল্পনা আমরা জানতে চাই। রাজ্যের সমস্যা নিয়ে পর্যালোচনার ক্ষেত্রেও নিজেদের হাতে ক্ষমতা রাখতে চাইছি আমরা।'

দিল্লি হাইকোর্ট আগেই করোনা সংক্রান্ত উপরিউক্ত সমস্যাগুলি নিয়ে কার্যত তুলোধনা করেছে কেন্দ্রের। রাজধানীতে লাগাতার বাড়তে থাকা অক্সিজেন সঙ্কট নিয়ে একাধিক গুরুতর প্রশ্ন তুলে, মোদী সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। “অক্সিজেনের অভাবে জনগণের হাহাকার দেখতে পেয়েও সরকার কেন বাস্তব পরিস্থিতি স্বীকার করতে চাইছে না?” এই প্রশ্ন তুলেও কেন্দ্রের সমালোচনা করেছিলেন বিচারপতি।

এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এও বলেন যে, 'দিল্লি, বম্বে, সিকিম, মধ্যপ্রদেশ, কলকাতা ও ইলাহাবাদ হাইকোর্টে এই বিষয়ে মামলা চলছে। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। তাই সুপ্রিম কোর্টও দেশের এই বিপর্যয়ের সময় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।'

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রতিদিনই দেশে করোনার সংক্রমণ দ্রুত গতিতে বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ছে ভারত। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। অধিকাংশ রাজ্যের অবস্থা বেশ খারাপ। সবথেকে খারাপ পরিস্থিতি মহারাষ্ট্রের।

ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে বিশ্ব-তালিকার দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে ভারত। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ১৫ হাজারের বেশি। আমেরিকার পর ভারত এখন দ্বিতীয় দেশ যেখানে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লক্ষ পেরিয়েছে। বর্তমানে আমেরিকার থেকে ভারতে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে করোনা ভাইরাস৷ যতো দিন যাচ্ছে, পরিস্থিতি ক্রমশই ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে৷