চা বা কফির কাপে চুমুক দিয়ে বইতে চোখ রাখা! যখন ইচ্ছে র্যাক থেকে নামিয়ে পড়তে পারা যাবে পছন্দের বই৷ সঙ্গে সময়ও কাটানো যাবে ভালোমতোই। হ্যাঁ, কলকাতা শহরের বুকে এই দৃশ্য আজ অতিপরিচিত। শহর জুড়ে অলিগলিতে এখন ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র বই ক্যাফে বা বই-ঠেক। যেখানে চা-কফির কাপে চুমুক দেওয়ার পাশাপাশি চোখ বোলানো যাবে পছন্দের বইতেও।
কিন্তু আস্ত একটা ‘ওপেন লাইব্রেরি’, যেখানে রাখা থাকবে অজস্র বই! চা খেতে খেতে চোখ বোলানোর পাশাপাশি যেগুলি আপনি বাড়ি নিয়ে গিয়েও পড়তে পারবেন। এরকম লাইব্রেরির দেখা কি পেয়েছেন কখনও? তাও আবার কলকাতা থেকে বহু ক্রোশ দূরে এক জেলার বুকে? সম্প্রতি বর্ধমানের বুকে চালু হল এমনই এক মুক্ত পাঠাগার। শহরের প্রান্তে বাবুবাগ মোড়ে এক চায়ের দোকানেই পথচলা শুরু এই লাইব্রেরির। যার নেপথ্যে রয়েছে ‘বর্ধমান ফুডিস ক্লাব’।

সেই সংস্থার কর্ণধার মৈনাক মুখার্জির কথায়, “এই লাইব্রেরিতে মানুষ যখন ইচ্ছে বই পড়তে পারেন। চায়ের দোকানে আড্ডা মারতে মারতে চোখ বোলাতে পারেন পছন্দের বইতে। এমনকি বাড়িতে নিয়ে গিয়েও পড়তে পারেন বই৷ তবে সময় মতো তা ফেরত দিয়ে যেতে হবে। বই পড়ার পাশাপাশি কেউ যদি চান তাহলে নিজের বই দানও করতে পারেন এই পাঠাগারে। সকলের ভালোবাসাতেই সফল হয়ে উঠতে পারে এই লাইব্রেরি।” তিনি এও জানিয়েছেন, গল্পের বইয়ের পাশাপাশি মেডিক্যাল বা ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার বইও পাওয়া যাবে এই লাইব্রেরিতে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরও অনুরোধ করা হয়েছে পুরনো বই দান করতে।

বর্ধমানের বাবুবাগে ময়নাদার চায়ের দোকানে গড়ে উঠেছে এই লাইব্রেরি। দেখা মিলছে অজস্র বইয়ের। পাশাপাশি বই পড়ার সুবিধার জন্য রাখা হয়েছে টিউবলাইট এবং বেঞ্চের ব্যবস্থাও। বইয়ের র্যাকের ছবি এঁকেছেন প্রখ্যাত শিল্পী তৌসিফ হক। তাঁর হাতের ছোঁয়ায় আরও জীবন্ত হয়ে উঠেছে ছোট্ট লাইব্রেরিটি। বইয়ের থেকে ভালো সঙ্গী আর কেউই হয় না। তাই মানুষের নিঃসঙ্গতা কাটাতে এবং মানুষকে আরও বইমুখী করে তুলতেই নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ। এমনকি আগামীদিনে বর্ধমানের আরও বিভিন্ন এলাকায় ওপেন লাইব্রেরি গড়ে তোলার পরিকল্পনাও রয়েছে, এমনটাও জানিয়েছেন মৈনাক মুখার্জি।