শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

তাঁর হাতে গ্রেপ্তার ৬৪ জঙ্গি, খতম ১৬! অপরাধীদের ত্রাস 'লৌহকন্যা' এই আইপিএস অফিসার

০৪:০০ পিএম, আগস্ট ৬, ২০২১

তাঁর হাতে গ্রেপ্তার ৬৪ জঙ্গি, খতম ১৬! অপরাধীদের ত্রাস 'লৌহকন্যা' এই আইপিএস অফিসার

মাস তিনেক আগে দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে লিঙ্গবৈষম্যের অভিযোগ এনেছিলেন এক মহিলা আইপিএস অফিসার। সাদা পোশাকে চাকরি সূত্রে পাওয়া সরকারি গাড়ি নিজেই চালাচ্ছিলেন তিনি। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জেরা করেছিল দিল্লি পুলিশ। পরিচয় দেওয়ার পরও তিনি একজন যে আইপিএস তা বিশ্বাস করেনি পুলিশ। এরপরই দিল্লি পুলিশের এই আচরণের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন তিনি। সেসময় সারা দেশ জেনেছিল তাঁর পরিচয়। তিনি সংযুক্তা পরাশর। আসামের এই কন্যা দেশের অন্যতম এক আইপিএস কর্ত্রী। যার ভয়ে কাঁপে দাগী অপরাধীরাও।

ছেলেবেলা থেকেই পড়াশোনাতেও মেধাবী। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার পর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়েন সংযুক্তা। পরে এমফিল এবং আমেরিকার বিদেশ নীতি নিয়ে ডক্টরেটও করেন। ইউপিএসসিতে দেশে ৮৫তম স্থান অধিকার করেছিলেন তিনি। এরপরই আইপিএসে যোগ সেন আসামের এই কন্যা। ২০০৮ সালে সংযুক্তার প্রথম পোস্টিং মাকুমে। অ্যাসিস্ট্যান্ট কম্যান্ডান্ট পদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে।

আইপিএস কর্তা হিসেবে প্রথমেই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েন সংযুক্তা। বোড়ো জঙ্গিদের সঙ্গে যখন বাংলাদেশের শরণার্থীদের সংঘর্ষ চলছে, সে সময় তা সামলাতে তাঁকে পাঠানো হয় উদলগিরিতে। প্রতিদিন একে ৪৭ হাতে সিআরপিএফ জওয়ানদের দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসামের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেন তিনি। দেড় বছরে ৬৪ জন জঙ্গি গ্রেপ্তারও হয় তাঁর হাতে। খতম হয় ১৬ জন। আসামে সেনা কনভয়ের উপর হামলাকারী জঙ্গিরাও গ্রেপ্তার হয় তাঁর-ই নেতৃত্বে। সংযুক্তার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

তিন বছর অসমের জোরহাটের পুলিশ সুপার পদে ছিলেন সংযুক্তা। পরে সোনিপতেও একই দায়িত্ব সামলেছেন। বর্তমানে দিল্লিতে কর্মরত তিনি। ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য কমাতেও উঠে আসে তাঁর নাম। হাতে নাতে ধরেছেন বহুজনকেই। তিনি যেন অপরাধীদের ত্রাস। সেই কারণে আসামবাসী তাঁর নাম দিয়েছে 'লৌহকন্যা'।

৪১ বছরের সংযুক্তা বিয়ে করেছেন সন্দীপ কক্কর নামে আসামেরই আর এক আইপিএস অফিসারকে। তাঁদের নয় বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। অবসর সময় তাঁর সঙ্গেই কাটান সংযুক্তা। এছাড়াও সুযোগ পেলেই তাঁর শখ দৌঁড়ানো আর সাঁতার কাটা। পিঙ্ক ম্যারাথনেও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। একাধারে এই আইপিএস অফিসার যেন 'দশভূজা'! দশ হাত না থাকলেও মা দুর্গার মতোই অন্যায়ের প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন তিনি। আবার অবসরে সামলান মায়ের দায়িত্বও৷ তাঁর জন্য গর্বিত আজ আসাম সহ গোটা দেশ।