শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

মালদায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো এই কালীপুজো আজ হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির পুজো!

০৩:৩৬ পিএম, নভেম্বর ৪, ২০২১

মালদায় সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো এই কালীপুজো আজ হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির পুজো!

নিজস্ব প্রতিনিধি, নদীয়াঃ আজ কালীপুজো, দীপাবলি। আজ চারিদিকে সেজে উঠবে আলোর মালায়। এই দিনে বিভিন্ন জায়গায় মা কালী পূজিতা হন মহা সাড়ম্বরে। আজও মালদায় প্রথা মেনে এখনও হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতির পুজো। সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো মালদার গোবরজোনার এই পুজো। এই পুজো শুরুতে ছিল ডাকাতদের পুজো। দিনের পরিবর্তনে তা হয়ে দাঁড়িয়েছে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের পুজো। পুরনো সেই প্রথা মেনে এবারও হতে চলেছে হিন্দু-মুসলিম সম্প্রীতি ইতিহাস বিজড়িত মালদার গোবরজোনার কালীপুজো।

কার্তিক মাসের অমাবস্যায় পুণ্যতিথিতে আজও এখানে মা পূজিতা হন। হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বহু মানুষ এই পুজোতে অংশগ্রহণ করেন। এই পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা শান্তি চৌধুরী জানান, কথিত আছে, আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে সাহিত্য সম্রাট বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের আনন্দমঠ এর চরিত্র ডাকাত সম্রাট ভবানী পাঠক কালিন্দী নদী দিয়ে পূর্ববঙ্গের ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে বর্তমানে মালদার পুখুরিয়া থানার আড়াই ডাঙ্গা এলাকার নদীর ধারে তার বজরা থামান। সেই সময় সেখানে আম বাগানের মধ্যে শিবির বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেই সময় তিনি স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নে মা কালী এসে তাঁকে এই আমবাগানে থান তৈরি করে কালী পূজা করার নির্দেশ দেন। এরপরই কালিন্দী নদীর মাটি ও গোবর দিয়ে মূর্তি তৈরি করেন এবং মায়ের পূজা শুরু করেন।

দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতরা এই পুজো করতো।। এমনকি মুসলিম ও ব্রিটিশ আমলেও একই প্রথায় পুজোর চল ছিল। পরবর্তী সময়ে এই জনপদে জনবসতি বিস্তার হয়। এরপর থেকে গ্রামবাসীরাই দীর্ঘ সময় ধরে এই পুজো করে আসছে। ভোগ হিসাবে বাতাসা অন্ন ভোগ দেওয়া হয়।

এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত আড়াই ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সোমন চৌধুরী জানিয়েছেন যে, তাঁরা নয় পুরুষ ধরে এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত। চিরাচরিত প্রথা মেনে কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই পুজো হয়ে থাকে। এছাড়াও সারা বছর ধরে মন্দিরে পুজো হয়। এখনো জেলার বহু মানুষ মায়ের কাছে মানত করে। এখানে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ মায়ের কাছে প্রার্থনা করে। এখানে মেলা বসে। তবে, এ বছর করোনা আবহে সরকারি নির্দেন মেনে পূজার্চনা করা হবে।