শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

ত্রিপুরায় শহিদ দিবস পালনে বাধা, আটক শতাধিক কর্মী! নিন্দায় সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

০৫:৪৫ পিএম, জুলাই ২১, ২০২১

ত্রিপুরায় শহিদ দিবস পালনে বাধা, আটক শতাধিক কর্মী! নিন্দায় সরব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

বংনিউজ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলায় বিপুল ভোটে জয় হাসিল করে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস। মোদী-অমিত শাহ জুটি বাংলার ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন দেখলেও, তা ধুলোয় মিশে গেছে। শেষ হাসি হেসেছে তৃণমূল কংগ্রেসই। এবারের ২১ জুলাই শহিদ দিবসের তাই আলাদা গুরুত্ব ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে। সেই জন্যই এবারে ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস পালিত হয় বাংলার গণ্ডি ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যেও।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে, কেন্দ্রে বিজেপি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অ-বিজেপি শক্তিগুলিকে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল ভোটে ক্ষমতায় ফেরার পর এমনিতেই অবিজেপি নেতৃত্বের কাছে নেত্রীর গুরুত্ব অনেক বেড়ে গেছে। দেশব্যাপী বিজেপির বিরুদ্ধে অন্যতম মুখ হয়ে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর সেই লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে এবার শুধু বাংলাই নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল নেত্রীর ২১ জুলাইয়ের ভাষণ পৌঁছে গেছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২১ জুলাইয়ের বার্তা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন রাজ্যেই উদ্যোগ নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। সেই অনুযায়ী, বিজেপিশাসিত রাজ্য ত্রিপুরাতেও জায়ান্ট স্ক্রিন লাগানো হয়েছিল। তৃণমূল কংগ্রেস যে ধীরে ধীরে প্রভাব বিস্তার করছে ভিন রাজ্যেও, একথা আঁচ করতে পেরেই, ২১ জুলাইয়ের আগেই ত্রিপুরাতে বিভিন্ন জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করে ত্রিপুরা সরকার। এরপর আজ শহিদ দিবস পালন করতে গিয়ে, ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় শতাধিক তৃণমূলকর্মীকে। এখানেই শেষ নয়, এমনকী, তৃণমূল কর্মীদের উপর হামলা চালায় বিজেপি, এমনই অভিযোগ উঠেছে।

এদিন পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী, সকালে কৈলাস নগরে জমায়েত করেছিলেন তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা আশিসলাল সিনহা-সহ অন্যান্য নেতারা। সেই সময়ই বিজেপি কর্মীরা তাঁদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। শুধু তাই নয়, ত্রিপুরা পুলিশ কমপক্ষে ১০০ জন কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করে বলে অভিযোগ। এদিনের এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

এদিন শহিদ দিবসের ভাষণের শুরুতেই ত্রিপুরা সরকারের সমালোচনা করেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে অন্য কাউকে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেওয়া হয় না। এটাই কি গণতন্ত্র? প্রত্যেক বিজেপিশাসিত রাজ্যে এটাই হচ্ছে।’

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি এদিন ত্রিপুরায় শহিদ দিবস পালনে বাধাদান প্রসঙ্গে নিন্দায় সরব হওয়ার পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক টুইট করে লেখেন যে, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যে তৃণমূল কর্মীদের উপরে হামলার তীব্র নিন্দা করি। কিন্তু এভাবে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না। শহিদ দিবসে তৃণমূলের তরফে আমি জানাতে চাই, শাসকের নিপীড়নের মুখে লড়াইয়ের জমি এক ইঞ্চিও ছাড়ব না। যা হওয়ার হয়ে যাক।’ ত্রিপুরার এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তৃণমূলে মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন যে, ‘এভাবে তৃণমূলের মনোবল ভেঙে দেওয়া যাবে না।’

https://twitter.com/abhishekaitc/status/1417755151356502016

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় আগেই এই অনুষ্ঠান পালনের অনুমতি দেয়নি জেলা প্রশাসন। সেই কারণেই পরিকল্পনা থাকলেও, একুশে জুলাই পালন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ে তৃণমূল৷ পরিকল্পনা ছিল, আগরতলা-সহ বিভিন্ন জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিন বসিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনানো হবে৷ কিন্তু জেলাশাসকের অনুমতি না মেলায়, জায়ান্ট স্ক্রিন বসানোও সম্ভব হয়নি। তাছাড়া এবার ২১ জুলাই পালনে ত্রিপুরাকে আলাদা গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূল। আর সেটা বুঝেই বিজেপি চাপ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

অন্যদিকে, ত্রিপুরার পর একুশের ‘শহিদ দিবস’ পালন করতে গিয়ে ধাক্কা খেতে হল গুজরাটের তৃণমূল কর্মীদেরও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির গড়ে সরিয়ে দেওয়া হল দিদির নামে লেখা বড়সড় ব্যানার। প্রত্যাশিতভাবেই এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলছে তৃণমূল। জানা গিয়েছে, আহমেদাবাদে একুশের ভার্চুয়াল সমাবেশের প্রচারের উদ্দেশে একটি বড়সড় ব্যানার লাগিয়েছিলেন তৃণমূল কর্মীরা। যেখানে গুজরাটি ভাষায় শহিদ সমাবেশ সম্পর্কে লেখা ছিল। সঙ্গে ব্যানারটিতে ছিল তৃণমূল নেত্রীর ছবিও। মমতার ভাষণ শুরুর আগেই, সেই ব্যানারটি কেউ সরিয়ে দেয়। সেটিকে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, ওই ব্যানার সরিয়েছে বিজেপিই।

https://twitter.com/ANI/status/1417762850991267841