বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

দোরগোড়ায় সরস্বতী পুজো! দেবীর জন্ম কীভাবে হয়েছিল সে গল্প কি জানেন?

০৩:৫৯ পিএম, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১

দোরগোড়ায় সরস্বতী পুজো! দেবীর জন্ম কীভাবে হয়েছিল সে গল্প কি জানেন?
সরস্বতী পুজো দোরগোড়ায়। আর মাত্র দু'দিন পরই দেবী বন্দনায় মেতে উঠবেন আপামর বাঙালি। এমনকি দেশের অন্যত্রও নানা ভাবে পালিত হতে থাকে বসন্ত পঞ্চমীর তিথি। পৌরাণিক মতে, দেবী সরস্বতীর পুজো করার জন্য এই দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। তিনি বিদ্যা এবং জ্ঞানের দেবী। তাই প্রত্যেকটি মানুষই জ্ঞানের লাভের উদ্দেশ্যে দেবী বন্দনায় মেতে ওঠেন সেইদিন। তবে কীভাবে জন্ম হয়েছিল দেবী সরস্বতীর? সে কথা কি আদৌ জানা রয়েছে? প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী, দেবী সরস্বতী হলেন শিব এবং পার্বতীর কন্যা। লক্ষ্মী-গনেশ-কার্তিকের সহোদরা। কিন্তু পুরাণ অনুযায়ী, এ সবই নাকি মনগড়া কাহিনী। যার কোনও ভিত্তিই নেই। তবে আদতে কীভাবে জন্ম নিয়েছিলেন দেবী সরস্বতী? আসুন জেনে নিই সেই কাহিনী... পুরাণ মতে, ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর- এই তিন ঈশ্বর হলেন ত্রিমূর্তি। হিন্দু ধর্মের সর্বোচ্চ আসনে থাকেন এই তিন দেবতা। এঁদের মধ্যে ব্রহ্মা হলেন স্বয়ম্ভু। অর্থাৎ তাঁর জন্মের জন্য তিনি নিজেই দায়ী। তাঁর কোনও পিতা ও মাতা নেই। জন্মের পর ধ্যানে বসে তাঁর সকল ভালো গুণকে একত্রিত করতে থাকেন ব্রহ্মা। সেইসব গুণ একত্র হয়ে ধীরে ধীরে এক নারীর আকার ধারণ করে। তারপরই ব্রহ্মার মুখ গহ্বর থেকে সৃষ্টি হয় সেই দেবীর। যাঁর নাম হয় সরস্বতী। বসন্ত পঞ্চমীতের দিনটিতেই দেবী সরস্বতীর জন্ম হয়। কথিত রয়েছে, পূর্বে ব্রহ্মার মাত্র একটিই মুখ থাকলেও, অপরূপা সরস্বতীকে দর্শন করার জন্য আরও চারটি মুখের সৃষ্টি হয়। সরস্বতীকে মানা হয় 'সকল বেদের মা'। শব্দ ও ভাষার উৎপত্তিও ঘটে তাঁর থেকে। তাই ব্রহ্মা সরস্বতীর নাম দিয়েছিলেন বাগদেবী। পুরাণ মতে, স্বয়ম্ভু ব্রহ্মা এই ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি করার পর নিজের সৃষ্টি নিয়ে তুষ্ট ছিলেন না। সরস্বতী তাঁকে পরামর্শ দিলেন কীভাবে আরও সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ করে তোলা যায় বিশ্বকে। তাঁর মত নিয়েই এই বিশ্বকে আরও সুন্দর ভাবে সাজাতে লাগলেন ব্রহ্মা। পৌরাণিক মতে কোথাও আবার ব্রহ্মাকে সরস্বতীর স্বামীও মানা হয়৷ সেই নিয়ে প্রচলিত রয়েছে একটি কাহিনীও। একবার এক অনুষ্ঠানে সঠিক সময়ে এসে পৌঁছতে পারেননি সরস্বতী। সেই কারণে গায়ত্রী নামে নিজের আরও এক স্ত্রীর সৃষ্টি করেছিলেন ব্রহ্মা। তা জানতে পেরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিলেন সরস্বতী। ব্রহ্মাকে তিনি অভিশাপও দিয়েছিলেন যে, মর্ত্যলোকে কোনও দিন পূজিত হবেন না ব্রহ্মা। তাই, বিশ্বে শিব ও বিষ্ণুর মন্দির দেখা গেলেও ব্রহ্মার মন্দির খুব একটা লক্ষ্য করা যায় না।