শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

চিরাচরিত প্রথা ভেঙে ঋতুমতী অবস্থায় সরস্বতী পুজো করলেন রায়গঞ্জের ঊষশী! প্রশংসার ঝড় নেটদুনিয়ায়

০২:৩২ পিএম, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২১

চিরাচরিত প্রথা ভেঙে ঋতুমতী অবস্থায় সরস্বতী পুজো করলেন রায়গঞ্জের ঊষশী! প্রশংসার ঝড় নেটদুনিয়ায়
শ্রাস্ত্রে নাকি লেখা রয়েছে মহিলা হলে পুরোহিত্য করা যায় না! শ্রাস্ত্রে নাকি এও লেখা, ঋতুমতী হলে কোনও মহিলা পুজোই করতে পারবেন না৷ কারণ? দেবতার পায়ে অর্পণ করতে হয় শুদ্ধ মন এবং বসনে। ঋতুচক্র চলাকালীন নারী দেহ থাকে অশুচি। তাই পুজোতে নিষেধ! যুগের পর যুগ ধরে এই চিরাচরিত প্রথাই চলে আসছে এতদিন। এবার পিতৃতান্ত্রিকতার মুখে থাপ্পড় মেরে এই চিরাচরিত প্রথাই ভেঙেছেন রায়গঞ্জের ঊষশী চক্রবর্তী। সম্প্রতি তাঁর ফেসবুকের একটি পোস্ট নেটদুনিয়ায় আলোড়ন ফেলে দেয়। গত মঙ্গলবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজোর দিন পোস্টটি করেন ঊষশী। সেখানে তিনি জানান, ওই দিন ঋতুচক্র চলাকালীনই নিজের হাতে সরস্বতী পুজো করেছেন তিনি। শুধু তাই নয় বেদের মন্ত্র সঠিক ভাবে উচ্চারণ করেই সমগ্র পুজোটি সম্পন্ন করেন। ছোটবেলা থেকে বাবার কাছেই পুজোপাঠ শিখে আসছেন ঊষশী। তাই মাসিকের দ্বিতীয় দিন হওয়া সত্ত্বেও দেবীর আরাধনা থেকে বিরত থাকেননি তিনি। বরং নিষ্ঠা ভরে তাঁর পুজো করেন। তা লোকসমাজে গর্ব করেই বলেন তিনি। ঊষশীর এই পোস্ট প্রকাশ্যে আসা মাত্রই বির্তকের ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। তাঁকে কটাক্ষ করতেও পিছপা হননি কতিপয় নেটজনতা। নানা কুরুচিরকর বক্তব্যে তাঁরা ভরিয়ে তোলেন সোশ্যাল মিডিয়া। এমনকি প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঘটলে তার কারণ হিসাবে দায়ও ঊষশীকেই নিতে হবে, এমন মন্তব্যও করেছেন তাঁরা। তবে এর মধ্যেই আশার আলোর মতো ঊষশীর প্রশংসাতে মেতে ওঠেন নেটিজেনের একাংশ। তাঁর এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য কুর্নিশও জানিয়েছেন বহু মানুষ। সমাজের বস্তা পচা কিছু 'ট্যাবু' ভাঙার লড়াইয়ে ঊষশীর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। জানিয়েছেন সমর্থন। আর ঊষশী নিজে কি বলছেন? তিনি জানিয়েছেন, সামাজিক কুসংস্কারের বিরুদ্ধে গেলেই ধেয়ে আসবে সমালোচনা। বিপক্ষেই থাকবেন হাজারও মানুষ। তবু এর মাঝেই তিনি আশাবাদী। এই সমাজ একদিন ঠিক কুসংস্কারমুক্ত হয়ে উঠবে। প্রকৃত শিক্ষায় 'শিক্ষিত' হয়ে উঠবেন সমাজের মানুষ। আর কথাকথিত কিছু নিয়ম তো ভাঙার জন্যই গড়ে ওঠে! সেসব ভাঙার লড়াইয়ে এগিয়ে তো আসতেই হয়। তবেই তো এক নতুন সমাজ গড়ে উঠতে পারে। যে সমাজ মুক্তমনা। সভ্যতার উন্নতি যে তবেই সম্ভব।