শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪

‘অবশেষে মমতার কাজকে স্বীকৃতি দিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার’, উত্তরপ্রদেশের বিজ্ঞাপন বিতর্কে কটাক্ষ ডেরেকের

০৮:৩৩ পিএম, সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১

‘অবশেষে মমতার কাজকে স্বীকৃতি দিল যোগী আদিত্যনাথের সরকার’, উত্তরপ্রদেশের বিজ্ঞাপন বিতর্কে কটাক্ষ ডেরেকের

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ সামনেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে সেজে উঠবে দেওয়াল, পাতা জোড়া বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হবে, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু সেই বিজ্ঞাপনে কলকাতার ছবি! আজ এই বিজ্ঞাপনকে কেন্দ্র করেই সারাদিন ধরে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। এবার এনিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে কটাক্ষ করলেন ডেরেক ও’ ব্রায়েন।

যোগী আদিত্যনাথের কর্মযজ্ঞের বিজ্ঞাপনে এদিন উঠে এসেছে এক খণ্ড কলকাতা। বিজ্ঞাপনে যোগী আদিত্যনাথের পায়ের কাছে ফুটে উঠেছে কলকাতার মা উড়ালপুলের ছবি। সঙ্গে বড় বড় করে লেখা ‘ট্রান্সফরমিং উত্তরপ্রদেশ’। জাতীয়স্তরের এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়া এই বিজ্ঞাপন ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই এই ইস্যুতে বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল কংগ্রেস। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই ওই বিজ্ঞাপন বিতর্কে ভুল স্বীকার করছে উক্ত সংবাদপত্র। তবে, এই বিতর্কে ইতিমধ্যেই বিজেপিকে টুইটে খোঁচা দিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল নেতৃত্ব। আবার তৃণমূলকে পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বও।

এই বিজ্ঞাপন নিয়ে টুইটারে সরব হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, ‘ইউপির পরিবর্তন মানে বাংলার পরিকাঠামোর ছবি চুরি করে নিজের নামে চালানো। যে পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও লিখেছেন যে, ‘দেখে মনে হচ্ছে ডবল ইঞ্জিন মডেলের ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির সবথেকে শক্তিশালী রাজ্যেই। এবং এখন এটাই সবার সামনে চলে এলো।’

এদিন অভিষেকের পর ডেরেক ও’ ব্রায়েন সাংবাদিক বৈঠক করে বললেন, ‘অবশেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকে স্বীকৃতি দিয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। ওরা বুঝতে পেরেছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কতটা উন্নয়নের কাজ করেছে। ধন্যবাদ, অভিনন্দন।’

https://www.facebook.com/AITCofficial/videos/1203408956831004/

এদিন বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলনে বসে ডেরেক এই বিজ্ঞাপন প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভোটের আগে উনি রাজ্যে এসে বারবার সরকারের বিরুদ্ধে নানা কথা বলেছিলেন। বলছিলেন, এখানে কোনও কাজ হয়নি। কিন্তু এবার নিজের রাজ্যের বিজ্ঞাপনের জন্য এখানকারই ছবি ব্যবহার করতে হল। তাতেই বোঝা গেল, অবশেষে তিনি স্বীকার করে নিলেন যে উন্নয়নে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্য অনেক এগিয়ে। এর জন্য তাঁকে ধন্যবাদ।’

এখানেই শেষ নয়, এরপরও বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে তিনি বলেন, ‘চাইলে উনি আমাদের রাজ্যের উন্নয়ন নিয়ে আরও চারটি বিজ্ঞাপন বানাতে পারেন। আমরা তাঁকে পরামর্শ দিলাম।’ অবশ্য, এই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই ভুলের দায় চাপানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট সংবাদপত্রের উপর। ওই সংবাদ সংস্থাও নিজেদের ভুল স্বীকার করে ক্ষমাও চেয়েছে। এ বিষয়ে, তৃণমূলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওই সংবাদপত্রকে বাধ্য করা হয়েছে, এর দায় নিতে। তবে, প্রশ্ন ওঠে, সরকারি বিজ্ঞাপন কীভাবে সরকারের অনুমতি ছাড়া ছাপা সম্ভব? যোগীরাজ্যের উন্নয়নের বিজ্ঞাপনে বাংলার ছবি ব্যবহার বিতর্ক এত সহজে শেষ হবে না বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বছর পার করলেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে উত্তরপ্রদেশের এই নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিজেপির জন্য। যদিও নানাবিধ কারণে এই মুহূর্তে বেশ খানিকটা চাপে রয়েছে যোগী আদিত্যনাথের সরকার। তাই এই পরিস্থিতিতে সরকারের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সেই রাজ্যের উন্নয়নে কী কী কাজ হয়েছে, তার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে বিজেপি সরকার।

রবিবার ইংরেজি ভাষার এক জাতীয়স্তরের সংবাদপত্রে ‘ট্রান্সফরমিং উত্তরপ্রদেশ’ শীর্ষক একটি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। সেই বিজ্ঞাপন থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। কারণ, বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছে, যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কলকাতার ‘মা’ উড়ালপুলের ছবি। এর পাশাপাশি রয়েছে কলকাতার একাধিক অভিজাত আবাসনের ছবি। সেই উড়ালপুলে কলকাতার ‘ট্রেডমার্ক’ হলুদ ট্যাক্সি চলতেও দেখা গিয়েছে। বিজ্ঞাপনের উপরে লেখা ‘ট্রান্সফরমিং উত্তরপ্রদেশ’। বিজ্ঞাপনটি চোখে পড়তেই, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারের বিরুদ্ধে একযোগে প্রতিবাদে সরব হয় তৃণমূল কংগ্রেস। সেই বিজ্ঞাপন বিতর্কেই সাংবাদিক সম্মেলন করে বিজেপিকে নিশানা করলেন ডেরেক।