শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪

বাংলার রাজনীতিতে নক্ষত্রপতন! সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে সরকার নিল এই সিদ্ধান্ত

১২:১০ পিএম, নভেম্বর ৫, ২০২১

বাংলার রাজনীতিতে নক্ষত্রপতন! সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে সরকার নিল এই সিদ্ধান্ত

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ আজই তাঁর হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার কথা ছিল। আজ হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের। ছুটি হল, কিন্তু বাড়ি না, তিনি চলে গেলেন ‘না ফেরার দেশে’।

গতকালই রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হয়েছেন। শুক্রবার রাত ৯ টা ২২ মিনিট নাগাদ কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। খবর পেয়ে, বাড়ির কালীপুজো ছেড়ে হাসপাতালে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতালে যান দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের অসংখ্য ভক্তরা। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল। একে একে শোকজ্ঞাপন করেছেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে বিরোধীরাও।

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে বঙ্গ রাজনীতিতে শোকের ছায়া। আলোর উৎসবের মঝেই নামল অন্ধকার। বাংলার রাজনীতির জগতে নক্ষত্রপতন। সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই সত্তরের দশকে ছাত্র রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। দীপাবলির দিনে সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণের খবরে শোকস্তব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এমন আলোর দিনে অন্ধকার নেমে আসবে ভাবতেও পারিনি।’ তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে আমি অনেক দুর্যোগ দেখেছি, কিন্তু সুব্রতদার মৃত্যু আমার জীবনে সবথেকে বড় দুর্যোগ। সুব্রতার মন হাসিখুশি, পার্টি অন্তপ্রাণ আর হবে কিনা সন্দেহ আছে।’ বৃহস্পতিবার রাতেই এসএসকেএম হাসাপাতালে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘সুব্রতদার মরদেহ দেখতে পারব না।’

সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো বর্ণময় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা জানাতে রাজ্য সরকার বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাজ্যের সমস্ত সরকারি কার্যালয়গুলোর জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সরকারি শোকবার্তাতেও স্মৃতিচারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি লেখেন, ‘সুব্রতদা ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থেকেছেন। ছাত্র আন্দোলনের সমত থেকেই আমি ওঁর সঙ্গে থেকেছি, তাঁর নেতৃত্বে বড় হয়েছি। সুদীর্ঘ  রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড এবং শারদীয়া দুর্গাপূজার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। সুব্রতদার সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সুসম্পর্ক ছিল। তিনি আমার অগ্রজ ও অভিভাবকতুল্য ছিলেন। তাঁর প্রয়াণ আমার কাছে এক বিরাট ক্ষতি শুধু নয়, রাজ্যের তথা দেশের  রাজনৈতিক জগতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি।’

বাংলার রাজনীতিতে বহু নেতা, মন্ত্রীই এক সময় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব তাঁদের রাজনৈতিক জীবন শুরু করেছিলেন। শুক্রবার সেই রাজনৈতিক গুরুর প্রয়াণের খবর পেয়ে, অনেকেই  তাঁরা এসএসকেএম হাসপাতালে এসে উপস্থিত হন। ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু বাড়ি ফেরার আগেই সব শেষ হয়ে গেল আচমকাই। আলোর উৎসবের মধ্যেই সবটা অন্ধকার হয়ে গেল। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি। ইন্দ্রপতন ঘটল বাংলার রাজনীতিতে।