শুক্রবার, ০৩ মে, ২০২৪

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উত্তরপ্রদেশে নয়া বিল! ২ সন্তান নীতি মানলে মিলবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা

০৫:১১ পিএম, জুলাই ১০, ২০২১

জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে উত্তরপ্রদেশে নয়া বিল! ২ সন্তান নীতি মানলে মিলবে সরকারি সুযোগ-সুবিধা

বংনিউজ ২৪x৭ ডিজিটাল ডেস্কঃ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এবার অসমের রাস্তাই অনুসরণ করতে চলেছে উত্তরপ্রদেশ। শুক্রবারই এ সংক্রান্ত খসড়া বিল প্রকাশ করা হয়েছে। ১১ জুলাই বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস। ওই দিনই রাজ্যের জন্য নয়া জনসংখ্যা নীতি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার।

এই খসড়া বিলের অন্যতম দুটি বিষয় হল, যারা দুই সন্তান নীতি অনুসরণ করে চলবেন, তাঁদের সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে। পাশাপাশি যাঁদের দুইয়ের অধিক সন্তান হবে, তাঁরা সরকারের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, আগামীকাল অর্থাৎ ১১ জুলাই রবিবার কার্যকর করা হবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ নীতি। যার মেয়াদ হবে ২০৩০ সাল পর্যন্ত। এরই মধ্যে আনা হবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের নতুন আইনও। এ বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের রাজ্য আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এএন মিত্তল জানিয়েছেন, রাজ্যের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এই নতুন বিলে একাধিক নিয়ম আনা হয়েছে। একদিকে যেমন, দুইয়ের অধিক সন্তান থাকলে, স্থানীয় নির্বাচনে লড়ার অধিকার দেওয়া হবে না, ঠিক তার পাশাপাশি দুইয়ের বেশি সন্তান থাকলে, সরকারি চাকরির জন্যও আবেদন করা যাবে না। এছাড়াও নতুন বিলে এক পরিবারে সর্বোচ্চ রেশন কার্ডের সংখ্যাও চারে বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, সরকারি চাকরি করছেন এবং দুই সন্তান নীতি অনুসরণ করবেন যারা, তাঁদের চাকরির মেয়াদকালে দুইবার অতিরিক্ত বেতন বৃদ্ধির সুবিধা দেওয়া হবে। জমি বা বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সাহায্য, বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় পরিষেবায় ছাড় ও জাতীয় পেনশন স্কিমের অধীনে ইপিএফে অতিরিক্ত তিন শতাংশ অর্থ মিলবে। আবার যাঁদের একটি সন্তান রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা ও সন্তানের ২০ বছর অবধি পড়াশোনার খরচ বহন করবে সরকার।

আবার সরকারি চাকরি করেন না, অথচ যারা এই দুই সন্তান নীতি অনুসরণ করবেন, তাঁদের জল, বিদ্যুতের বিল, বাড়ির কর, গৃহ ঋণের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি মহিলা ও পুরুষদের বন্ধাত্যকরণের জন্যও বিশেষ নিয়ম চালু করা হবে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ আইন কমিশনের ওয়েবসাইটে এই খসড়া বিলটি আপলোড করা হয়েছে এবং রাজ্যবাসীর কাছ থেকে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।

এই নয়া জনসংখ্যা নীতি প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘দারিদ্র এবং অশিক্ষাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম মূল কারণ। বিশেষত কিছু কিছু সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই সম্প্রদায়-ভিত্তিক সচেতনতা গড়ে তোলার দিকেই বিশেষ নজর দেওয়ার প্রয়োজন।’ এছাড়াও সদ্যোজাত, কিশোর-কিশোরী এবং প্রবীণেরা কতটা পরিষেবা পাচ্ছেন, সেদিকে নজর রাখতে, ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্র্যাকিংয়ের ব্যবস্থা করার নির্দেশও দিয়েছেন যোগী আদিত্যনাথ। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি এবং বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে জনসংখ্যার ভারসাম্য বজায় রাখার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়াই, এই নয়া জনসংখ্যা নীতির মূল লক্ষ্য বলেই উল্লেখ করেছেন তিনি।

এদিকে, রাজ্যে যেখানে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন আসতে এক বছরও সময় হাতে নেই, সেই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে, আগামী প্রায় ন’বছরের জন্য যোগী আদিত্যনাথের এই নয়া জনসংখ্যা নীতির ঘোষণাকে ঘিরে তীব্র বিরোধিতা করেছেন বিরোধীরা।