বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪

দু’বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চেয়েছিলেন, অবশেষে চাকরি পেলেন বাংলাদেশের সেই যুবক

মৌসুমী মোদক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২, ০৯:০৪ পিএম | আপডেট: ফেব্রুয়ারি ৩, ২০২২, ০৯:৩৪ পিএম

দু’বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চেয়েছিলেন, অবশেষে চাকরি পেলেন বাংলাদেশের সেই যুবক
দু’বেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চেয়েছিলেন, অবশেষে চাকরি পেলেন বাংলাদেশের সেই যুবক

‍‍`শুধুমাত্র দুবেলা ভাতের বিনিময়ে পড়াতে চাই‍‍`- সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের এক যুবকের দেওয়া এই বিজ্ঞাপন। বিজ্ঞাপনে নিজেকে ‍‍`বেকার‍‍` বলেই পরিচয় দিয়েছিলেন ওই যুবক। আর জানিয়েছিলেন, প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের অঙ্ক ছাড়া আর সমস্ত বিষয় পড়ানোর কথা। বিনিময়ে চেয়েছিলেন দু‍‍`বেলা দুমুঠো ভাত। এই আবেদন ভাইরাল হতেই যুবকটি জানিয়েছিলেন অর্থ এবং খাবারের অভাবেই তাঁর এই বিজ্ঞাপন। অবশেষে সেই বিজ্ঞাপন নজর কাড়ল ওপার বাংলার পুলিশের। আর তাঁর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই চাকরি পেলেন ওই যুবক।

 

জানা গিয়েছিল, ওপার বাংলার জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার শরাইল গ্রামে বাসিন্দা মহম্মদ আলমগীর কবির নামে ওই যুবক রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও রয়েছে। পড়াশোনা শেষ করে ২০১৮ সালে চাকরির খোঁজে তিনি এসেছিলেন ঢাকার সাভার এলাকাতে। সেখানে তাঁর এক বন্ধুর সঙ্গে একটি মেসে থাকাকালীনই সকালের খাবারের বিনিময়ে রাস্তার পাশে একটি ফুচকার দোকানে কাজ শুরু করেন আলমগীর। তবে সেই কাজের সঙ্গে নিজেকে মানাতে না পেরে ফিরে যান বগুড়াতে। সেখানে গিয়ে শুরু করেন টিউশন পড়ানো। পাশাপাশি চাকরির প্রস্তুতিও চালিয়ে যাচ্ছিলেন পুরোদমে।

 

তবে করোনা অতিমারীর প্রভাবে একে একে সব টিউশনি চলে যেতে থাকে তাঁর। বর্তমানে একটি টিউশন পড়িয়ে মাসে হাজার দেড়েক টাকা পেলেও তাতে একবেলা খাবারের ব্যবস্থা ছাড়া আর কিছুই হয় না। টিউশনির ওই সামান্য টাকাতে হাত খরচ, চাকরির পরীক্ষা দেওয়ার খরচ, দুবেলা দুমুঠো খাওয়া কিছুই জোটানো তাঁর পক্ষে সম্ভব ছিল না। তাই আরও টিউশন পড়াতে চেয়ে বিজ্ঞাপন দেন আলমগীর। বিনিময়ে জানিয়েছিলেন তাঁকে বেতন না দিলেও চলবে, তাঁর চাই দু‍‍`মুঠো ভাত। দু‍‍`বেলা খেতে পেলেই পড়াবেন তিনি। 

 

আলমগীরের ওই আবেদন এরপর ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসা মাত্রই তাঁর খোঁজ শুরু করে বগুড়ার পুলিশ। বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তীর তরফে জানানো হয়, আলমগীরকে চাকরি দেওয়ার জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। অবশেষে এসিআই লজিস্টিক লিমিটেডে চাকরি পেয়েছেন তিনি। বেতন ১৮ হাজার (বাংলাদেশি মুদ্রায়)। ইতিমধ্যেই সংস্থার তরফে আলমগীরের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, দু‍‍`বেলা খাবারের বিনিময়ে টিউশন পড়াতে চাওয়া ওই যুবকের ‍‍`বেকারত্ব‍‍` ঘুচতেই খুশি হাওয়া নেটদুনিয়ায়।